করোনাভাইরাস গোটা মানবজাতির সমস্যা
করোনাভাইরাস শুধু বাংলাদেশের সমস্যা বা ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সমস্যা নয়, এটি একটি বৈশ্বিক মহামারি। এটি গোটা মানবজাতির সমস্যা। সবাইকে একসঙ্গে এ মহামারি মোকাবিলা করতে হবে। এটি এমন একটি সমস্যা যার জন্য কেউ তৈরি ছিল না। আমরা আশা করি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এ থেকে বের হয়ে আসব।
সিবিআইআরের পরিচালক ও ইন্ডিয়া টুডের সাংবাদিক শহিদুল হাসান খোকনের সঞ্চালনায় গতকাল বুধবার রাতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কেন্দ্রের আয়োজনে ‘করোনাকালে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
শহিদুল হাসান খোকনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অংশ নেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, ভারত অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো জয়িতা ভট্টাচার্য, বিজেপির যুব মোর্চার ন্যাশনাল সেক্রেটারি সৌরভ শিকদার, সিবিআইআরের জাতীয় সমন্বয়ক (বাংলাদেশ পার্ট) অ্যাডভোকেট শুভাশীষ সমদ্দার।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ১৬ কোটি জনগণের ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। তার ওপরে তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল একটা দেশ, তার মাঝে এত ঘনবসতিপূর্ণ একটা দেশে আমাদের যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কাঠামো সে ব্যবস্থায় আমি বলব বাংলাদেশ মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সামর্থ্য হয়েছে। মোট কথা আমি বলব, বর্তমান সরকার এই সংকটকালীন সময়টাকে খুব ভালোভাবে মোকাবিলা করতে সামর্থ্য হয়েছে। আর উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের সংক্রমণের হার অনেক কম। আর মৃত্যুর হার সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক কম।
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে অনেক কিছু নেতিবাচক সংবাদগুলো আসতেছে, বিভিন্ন ধরনের। তা আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও পারিপার্শ্বিক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাব্যবস্থা অবস্থা তার বাইরের কিছু না। সব কিছু মিলে আমি বলব, বর্তমান সরকার এ সংকটের সময়ে দেশকে এগিয়ে নিতে ভালোভাবে মোকাবিলা করছে।
করোনাকালে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক এমন একটি ইমোশন যা কোনোভাবে আলাদা করা যাবে না। আর বর্তমান করোনাকালে যে সহযোগিতাপূর্ণ তা ঐতিহাসিক। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁকে নিন্দুকেরাও সমর্থন জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে ভারতের জয়িতা ভট্টাচার্য বলেন, করোনা এমন একটা সমস্যা, আর হুট করে এমন সময় এসেছে যার জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। কেউ বুঝতেই পারেনি যে এ অসুখটি এমনভাবে দেখা দেবে, এভাবে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। ভারতেও এটা এখন শুধু শহরগুলোতে নয় সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে আর্থ-সামাজিক অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তারপরও সরকার এটা মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। আমাদেরও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, কারণ ভারতও একটি উন্নয়নশীল দেশ।
আওয়ামী লীগের সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, বর্তমান করোনার সময়েও সেটি ঐতিহাসিক পর্যায়ে রয়েছে৷ কিন্তু ঈদের সময় চোরাইপথে গরু বাংলাদেশে নিয়ে আসাসহ বিভিন্ন সময় সীমান্তে হত্যা হচ্ছে। আমি মনে করি, বন্ধুত্বপূর্ণ দুই প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা দরকার। এটা কমেও এসেছিল। কিন্তু গত ছয় মাসে আবার বেড়েছে। তাই এটা জোরেতে আসা উচিত বলে আমি মনে করি।’
ভারতীয় জনতা পার্টির যুব মোর্চার সেক্রেটারি সৌরভ শিকদার বলেন, ‘বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার এবং ভারতে মোদি সরকার আসার পর থেকে দুদেশের বন্ধুত্ব আরো অনেক বেশি শক্ত ও সুদৃঢ় হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে যে মহামারি এটাকে ভারত-বাংলাদেশ তাদের অতীতের মতো একসঙ্গে মোকাবিলা করছে। ভারত সরকার সব সময় মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে ভারতের সবচেয়ে কাছের এবং পরীক্ষিত বন্ধু বাংলাদেশ।’
তিস্তা নদীর পানি চুক্তির বিষয়ে বিজেপির যুব মোর্চার এই শীর্ষ নেতা বলেন, তিস্তার পানির চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশ ও বর্তমান ভারত সরকার খুবই আন্তরিক। কিন্তু ভারতের শাসন ব্যবস্থা আমেরিকার মতো। যার ফলে রাজ্যের অনেক সিদ্ধান্তের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। আমি মনে করি ২০২১ সালের পর তিস্তার পানি চুক্তি সময়ের ব্যাপার মাত্র।’