কপিরাইট আইনের চার ধারা নিয়ে নায়ক মান্নার স্ত্রীর রিট
কপিরাইট আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৫) এর ২৪, ২৫, ২৬ ও ২৭ ধারা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রয়াত নায়ক মান্নার (এস এম আসলাম তালুকদার) স্ত্রী শেলী কাদেরের দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আইন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ও ব্যারিস্টার নাজিরুল আলম। গত ৭ জুন শেলী কাদেরের পক্ষে ব্যারিস্টার নাজিরুল আলম এ রিট দায়ের করেন।
আইনজীবীরা জানান, কপিরাইট আইনের ওই চারটি ধারা অনুসারে কোনো প্রডিউসারকে কপিরাইটের লাইসেন্স দেওয়া হলে তা অনেকেই পূর্ণ মেয়াদের জন্য নিয়ে থাকেন। পূর্ণ মেয়াদের সীমা ৬০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। অথচ একই আইনে অন্যরকম বিধান রেখে বলা হয়েছে, যার দ্বারা প্রডিউসার ও ক্রিয়েটরদের মধ্য এমন কোনো চুক্তি হবে না যা কারো জন্য কঠিন হয়ে যায়। তাই আইনের বিপরীতধর্মী ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
একইসঙ্গে এসব কাজের কপিরাইট অধিকার যেন উত্তরাধিকারদের সূত্রে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তরিত হয়, রিটে সে বিষয়েও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এমনকি ভারতেও এ ধরনের আইন করা হয়েছে।
কপিরাইট আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৫) এর ১৪ পৃষ্টায় রয়েছে অধ্যায়-৫। অধ্যায়টির নাম ‘কপিরাইটের মেয়াদ’। সেখানে বলা হয়েছে-
২৪। প্রকাশিত সাহিত্য, নাট্য, সঙ্গীত ও শিল্পকর্মে কপিরাইটের মেয়াদ।- অতঃপর ভিন্নরূপ বিধান করা না হইলে, প্রণেতার জীনকালে প্রকাশিত কোন সাহিত্য, নাট্য, সঙ্গীত বা শিল্পকর্মের (ফটোগ্রাফ ব্যতীত) কপিরাইট তাহার মৃত্যুর পরবর্তী পঞ্জিকা-বৎসর হইতে গণনা করিয়া ষাট বৎসর পর্যন্ত বিদ্যমান থাকিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় যৌথভাবে প্রণীত কর্মের ক্ষেত্রে, “প্রণেতা” অর্থে যে প্রণেতার মৃত্যু শেষে হইয়াছে তাহাকে বুঝিতে হইবে।
২৫। মরণোত্তর কর্মে কপিরাইটের মেয়াদ।- (১) প্রণেতার মৃত্যুর তারিখে কপিরাইট বিদ্যমান থাকে এমন সাহিত্য, নাট্য বা সঙ্গীত কর্ম বা খোদাই-কর্ম, বা অনুরূপ কর্মের যৌথ প্রণেতার ক্ষেত্রে, যিনি শেষে মৃত্যুবরণ করেন তাহার মৃত্যুর তারিখে বা উক্ত তারিখের পূর্বে কিন্তু যাহা বা যাহার অভিযোজন উক্ত তারিখের পূর্বে হয় নাই, তদ্রুপ ক্ষেত্রে, কর্মটির প্রথম প্রকাশের পরবর্তী পঞ্জিকা-বর্ষের শুরু হইতে বা কর্মটির কোন অভিযোজন পূর্ববর্তী কোন বৎসরে প্রকাশিত হইয়া থাকিলে সেই বৎসরের পরবর্তী পঞ্জিকা-বর্ষের শুরু হইতে ষাট বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
(২) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সাহিত্য, নাট্য বা সঙ্গীত কর্ম বা উক্ত কর্মের অভিযোজন প্রকাশিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে যদি ঐ কর্মের বিষয়ে তৈরী কোন রেকর্ড জনসাধারণের নিকট বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করা হইয়া থাকে।
২৬। চলচ্চিত্র ফিল্মের কপিরাইটের মেয়াদ।- কোন চলচ্চিত্র ফিল্মের ক্ষেত্রে, যে বৎসর কর্মটি প্রকাশিত হইয়াছে উহার পরবর্তী পঞ্জিকা-বর্ষের শুরু হইতে ষাট বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
২৭। শব্দ রেকর্ডিংয়ের কপিরাইটের মেয়াদ।- কোন শব্দ রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে, যে বৎসর রেকর্ডিং প্রকাশিত হইয়াছে উহার পরবর্তী পঞ্জিকা-বর্ষের শুরু হইতে ষাট বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।