ওসির সামনে ধর্ষণ মামলার সাক্ষীকে মারধর : গ্রেপ্তার ২
পাবনায় ওসির সামনে ধর্ষণ মামলার এক সাক্ষীকে মারধরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীমা আক্তার মিলিকে প্রধান করে তিন সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাতে ধর্ষণ মামলার সাক্ষী আলিমকে মারধরের ঘটনায় মিরাজুল এবং ধর্ষণ মামলায় ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে এই ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার হলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর রাতে পাবনা সদর উপজেলার ফিরোজ প্রামাণিক ও তাঁর সহযোগীরা ওই এলাকার একটি বাড়িতে জোর করে প্রবেশ করে এক তরুণীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠে। এ সময় তরুণীটির চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে ফিরোজকে আটক করে। তবে অন্যরা পালিয়ে যায়।
এদিকে ফিরোজকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলে ছেড়ে দেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ।
ভিকটিম তরুণী পরের দিন রাত সাড়ে ৭টায় নিজে ফিরোজের বাড়িতে গেলে তাঁকে মারপিট করে ফের গণধর্ষণ করা হয়। পরে মৃত ভেবে ওই তরুণীর বাড়ির কাছে ফেলে রেখে চলে যায়। স্থানীয়রা তাঁকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফসহ আটজনের নাম উল্ল্যেখসহ আরো অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন। পুলিশ ওই মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
সূত্র জানায়, এ ঘটনায় করা মামলা তদন্তের জন্য কথা বলতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় যুবক আলিমকে মুঠোফোনে ডেকে আনেন সদর থানার ওসি তদন্ত খাইরুল ইসলাম। এ সময় চেয়ারম্যান শরীফের ভাই আরিফের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী সাক্ষীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠে।
আহত আব্দুল আলীম বলেন, ‘ওসির সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার পরই চেয়ারম্যান শরিফের ছোট ভাই আরিফুলের লোকজন আমার ওপর হামলা চালায়। পুলিশের সামনেই তারা রড-হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে চলে যান।’
এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) খাইরুল ইসলাম নীল রঙের ব্লেজার পরা অবস্থায় ঘটনাস্থলে রয়েছেন। মারপিটের সময় তাঁকে ও তাঁর এক কনস্টেবলকে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে চলে যেতে দেখা যায়।
আহত আব্দুল আলীমের মা আলেয়া খাতুন বলেন, ‘পুলিশ আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে মারপিটের জন্য তুলে দেয়। আমার ছেলেকে তাঁরা পিটিয়ে জখম করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি।’