উচ্চ আদালতের আদেশে দায়িত্ব ফিরে পেলেন ইউপি চেয়ারম্যান
কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার সিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল হকের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে এই আদেশ কেন বাতিল হবে না জানতে চেয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
চেয়ারম্যানের পক্ষে রিট পরিচালনাকারী হাইকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এনায়েতুর রহিম ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
লিগ্যাল প্রতিষ্ঠান ফজলুর রহমান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের প্যাডে স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা বলেন, ‘এর ফলে মো. আনোয়ারুল হকের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা রইল না। এ ছাড়া একই আদেশে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
এর আগে গত ২ জুন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ-১ অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত পৃথক দুইটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বাজিতপুর উপজেলার হালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি মো. কাজল ভূঁইয়া এবং নিকলী উপজেলার সিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল হককে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি করেন। প্রজ্ঞাপনে দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময় এলাকায় অবস্থান করে ত্রাণ বিতরণসহ সার্বিক কাজে সহায়তা না করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ আনা হয়।
গতকাল সোমবার হাইকোর্টের একই বেঞ্চ বাজিতপুর উপজেলার হালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি মো. কাজল ভূঁইয়ার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে উক্ত আদেশ কেন বাতিল হবে না জানতে চেয়েছেন। আজ দায়িত্ব ফিরে পেলেন আনোয়ারুল হক।
আনীত অভিযোগকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক দাবি করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল হক জানান, ‘সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করার পর থেকেই আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এর ফলে সাংসদের প্রভাবে মিথ্যা মামলা করে জেল খাটাসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, বিভিন্ন ভাতা ও ত্রাণ বিতরণসহ সব কর্মকাণ্ড আমি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে সবার আগে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছি। এমনকি করোনার কারণে জনগণকে অফিসে না এনে গ্রামে গ্রামে গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি। একটি লোকও আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে না। আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান, বর্তমানে জেলা কৃষক লীগের কার্যকরী সদস্য, উত্তরা শাখা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হওয়ার পরও শুধুমাত্র সংসদ সদস্যের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক না থাকা ও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয়লাভের কারণেই আমাকে হয়রানি করার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’