ঈদে বিএনপি নেতারা কে কোথায় আছেন
ঈদ বা যেকোনো উৎসব এলেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও এর ছোঁয়া লাগে। দেখা যায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা। এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে দেশবাসীর মধ্যে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। রাজনৈতিক পাড়ায়ও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে না খুব একটা। তবে বিএনপির জন্য এবারের ঈদের বাড়তি একটা তাৎপর্য আছে। আর সেটা হচ্ছে দুই বছর পর কারাগারের বাইরে ঈদ করবেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তবে করোনা সংক্রমণের কালে ঈদের দিন দলের শীর্ষ নেতারা প্রিয় নেত্রীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারবেন না। শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন খালেদা জিয়ার গণমাধ্যম শাখার সদস্য শায়রুল কবির খান।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সরকারের আদেশে গত ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে মুক্তি পান। ওই দিনই বিএসএমএমইউ থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ওঠেন তিনি।
বাসায় ফিরেই করোনাভাইরাসের কারণে ফিরোজার দোতলায় চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে তিনি ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। ওই ১৪ দিন শেষ হওয়ার পর এখনও তিনি কোয়ারেন্টিনেই আছেন। এর মধ্যেই আজ সোমবার মুসলিম জাহানের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন হবে।
তবে প্রতি বছরের ন্যায় এবার বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিশিষ্ট নাগরিক ও সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন না তিনি।
কারাবন্দি অবস্থায় কারাগারে গত চারটি ঈদ উদযাপন করতে হয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসনকে। ২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হয়ে নাজিম উদ্দিন রোড়ের পরিত্যক্ত পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে দুটি ঈদ এবং হাসপাতালে দুটি ঈদ পার করেন খালেদা জিয়া। এর আগে ১/১১ সরকারের সময় সংসদ ভবন এলাকায় সাব জেলে বন্দি থাকাকালে খালেদা জিয়া দুটি ঈদ কাটিয়েছেন।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে বিএনপি যেমন নিজেদের সব কর্মসূচিই করোনাভাইরাস কেন্দ্রিক করেছে তেমনি দলটির নেতারাও এবার ঈদ উদযাপনের কোনো প্রস্তুতি নেননি। নেতারা প্রতিবারের মতো এবারও যেমন ঢাকায় ঈদ করছেন তেমনি ঢাকার বাইরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে নিজ গ্রামেও ঈদ উদযাপন করছেন অনেকে।
জানা গেছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ইসলাম আলমগীরসহ দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এবার ঈদে ঢাকাতেই আছেন। এর মধ্যে শুধু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এবার ঢাকাতেই ঈদ করছেন। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে ঈদ উদযাপন করছেন।
ঈদের দিন সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর কথা রয়েছে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, ঈদের দিন বেলা ১১টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন বিএনপি মহাসচিব।
ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে আব্দুল্লাহ্-আল-নোমান ঢাকায়, বরকত উল্লাহ বুলু নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম ঢাকায় ঈদ করছেন বলে জানা গেছে। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীও ঢাকায় ঈদ করছেন।
এ ছাড়া চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক ঢাকায় ঈদ করছেন। হাবিবুর রহমান হাবিব নির্বাচনী এলাকা পাবনায় ঈদ করছেন। যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেলও ঈদে ঢাকায় আছেন। এছাড়া টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও কেন্দ্রীয় কৃষক দল নেতা মাইনুল ইসলাম এ বছর টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে নিজ এলাকার সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করছেন বলে জানা গেছে।