আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে জনস্বার্থ বিবেচনা করে সরকার লকডাউনের পর গণপরিবহণ চালুর ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করছে।’

ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার নিজের সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। তিনি আন্দোলন-বিক্ষোভে না গিয়ে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের ধৈর্য ধরারও আহ্বান জানান।

সরকার ঈদ ও রমজানের কথা বিবেচনা করে এবং শ্রমজীবী মানুষ যাঁরা দোকানপাট-শপিংমলে কাজ করেন, তাঁদের কথা চিন্তা করে এরই মধ্যে লকডাউন শিথিল করেছে বলেও জানান সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী।

আজ ১ মে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বা মে দিবস। এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শ্রমিকদের লড়াই, সংহতি, দৃঢ়তা ও রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনা অর্জিত বিজয় দিবসই মে দিবস।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, একই দিনে বাংলাদেশ আইএলও’র ২৯টি কনভেনশন অনুসমর্থন করে, যা ছিল একটি বিরল ঘটনা।

শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু সরকার প্রথম শ্রমনীতি ঘোষণা করেন। যেখানে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়ন, শিল্পের শান্তি এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ সুরক্ষা ও কল্যাণের প্রতি জোর দেওয়া হয় বলে জানান সেতুমন্ত্রী।

জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত ও মেহনতি মানুষের অধিকার রক্ষায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা সরকার শ্রমিকবান্ধব সরকার, শেখ হাসিনা সরকারের চেষ্টায় শিশুশ্রম নিষিদ্ধ ও শ্রম আইন বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে পোশাক শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি এবং কৃষি-শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করার ব্যবস্থা করেছে সরকার।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঈদের আগেই বিভিন্ন কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করেন।

বিএনপি করোনা নিয়ে যতই অপপ্রচার করুক তাতে জনগণ বিশ্বাস করে না এবং সাড়া দেয় না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার মানবিক নেতৃত্বের প্রতি জনগণের আস্থা অবিচল আর জনগণের প্রতি সুদৃঢ় কমিটমেন্ট থেকেই সরকার সংক্রমণ রোধ ও চিকিৎসায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

করোনাকে পুঁজি করে যারা অপপ্রচারের বাণিজ্য করছে তারাই প্রকারান্তরে নানা অনিয়মের প্রশ্রয়দাতা বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি একদিকে অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলে, অপরদিকে অনিয়ম ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিলে বলে বিরোধীদলকে দমন করছে।

আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বকে পবিত্র সেবা হিসেবে নিয়েছে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

সংকট ও দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের সহজাত ঐতিহ্য উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর ভয়াল ঘুর্ণিঝড়ে জীবন ও সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় যখন, তখন বঙ্গবন্ধু নির্বাচন কর্মকাণ্ড স্থগিত করে বলেছিলেন নির্বাচন বড় কথা নয়, দুর্যোগকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই এখন রাজনীতি। তাই তিনি ছুটে গিয়েছিলেন দুর্গত মানুষের মধ্যে।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার নামে ২০১টি ভুয়া আইডি দেখা যাচ্ছে। এসব ভুয়া আইডি থেকে কে বা কারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভিন্ন বক্তব্য ও ছবি আপলোড করছে, যা আইনবিরুদ্ধ।’

‘প্রকৃতপক্ষে আমি যে আইডি ব্যবহার করছি, সেটা ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি’, যোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি তাঁর ভেরিফায়েড আইডি ছাড়া অন্য সব ভুয়া আইডি থেকে প্রচারিত বক্তব্য বা ছবি অথবা অন্য কোনো কমেন্ট থেকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান।