নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, আল্লাহ এবং আল্লাহর রসুলকে (স.) পেতে হলে কিছু সোর্স লাগে। সব বান্দা যদি সমান হতো তাহলে তো দুনিয়া বেহেশত হয়ে যেত, কিন্তু সব বান্দা তো সমান নয়। কিছু পরশ পাথর লাগে। যে পাথরের ঘষায় আমরা নিজেদের পবিত্র করতে পারি। ইসলামকে জঙ্গিবাদ বানিয়ে দেওয়া হয়, ইসলামে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। এমনকি কোনো ধর্মেই নেই।

আজ শনিবার দুপুরে শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জাকের পার্টির বিশ্ব ফাতেহা দিবস-২০২২ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের কেন্দ্রীয় মিশন সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন শামীম ওসমান।

শামীম ওসমান বলেন, ‘কোনো ধর্মই খারাপ কিছু সমর্থন করে না। ইসলাম হল শান্তির ধর্ম। আর শান্তির বিধান হল কোরআন। আমি  রোজ দুবেলা কোরআন পড়ি।’

শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘বেশি কিছু লাগে না, আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) এর বিদায় হজের ভাষণটিই যথেষ্ট। অল্প সময়ের সেই ভাষণে সারা পৃথিবীর সমস্ত সমস্যার সমাধান তিনি দিয়ে দিয়েছেন। সাদা আর কালোর (বর্ণবাদ) মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, কেউ কারও ওপর প্রভুত্ব করতে পারবে না, নারী ও পুরুষে কোনো পার্থক্য নেই।’

শামীম বলেন, ‘নারীর পুরুষের ওপর যেমন অধিকার আছে, তেমনি পুরুষের ওপর নারীর অধিকার আছে।’ এসময় শ্রমিকের মাথার ঘাম পায়ে পড়ার আগেই তার মূল্য পরিশোধ করো, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে শেষ হয়ে যাবে—এ রকম বেশ কিছু কথা তুলে ধরেন।

উপস্থিত সকলের কাছে দোয়া চেয়ে শামীম ওসমান বলেন, ‘পৃথিবীতে একটা সত্য সকলের সঙ্গেই ঘটবে, সেটা হল মৃত্যু। আপনাকে আমাকে একদিন মরতে হবে ভাই, মরতে হবেই হবে। ওই কবর খোঁড়া হবে, মাটি চাপা দেওয়া হবে। সবাই বলবে দ্রুত মাটি চাপা দেন এবং খুব দ্রুত মাটি চাপা দেওয়া হবে। জবাব কী দেব? আপনি যদি আপনার জবাব নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেন তো বেশ। আমি আমার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি প্রতি রাতে তাহাজ্জুদের সালাতের পর দুই রাকাত শুকরান সালাত আদায় করি। কারণ, আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। জেনে, না জেনে করা পাপের জন্য তওবা করি। কেন? কারণ, সকাল বেলায় ঘুম থেকে আমি নাও উঠতে পারি।’

শামীম আরও বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম শক্তির ধর্ম না, শান্তির ধর্ম। আমার আচার-আচরণ ও চাল-চলনে সন্তুষ্ট হয়ে মানুষ ইসলাম গ্রহণ করবে, গায়ের জোরে না। কিন্তু, আমরা কেন যেন ধর্মকে নষ্ট করে ফেলছি।’

এ সময় সকলের কাছে জোড় হাতে ক্ষমা চান শামীম ওসমান। তিনি বলেন, ‘আমার কারণে যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন, তবে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। আজকে আছি, কাল নাও বেঁচে থাকতে পারি। আমি কাল মারা গেলে হয়তো আমার ছেলে বা ভাই আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইবে। তার চেয়ে নিজের মাপ নিজে চাওয়া ভালো। আমি মানুষ, তাই আমার ভুল হতেই পারে। তাই আপনাদের সকলের নিকট ক্ষমা চাই। আপনারা আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করে দেবেন।’

বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরিফের নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের কর্মী প্রধান খন্দকার শাহ আলমের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় মিশন সভায় মিশনের প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরিফের খাদেম হাবিবুর রহমান সেরনিয়াবাত। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য আব্দুল কবীর, শাহীন হাফিজ, আব্দুর রহিম খান, কাজি জামসেদ কবীর, বাকী বিল্লাহ প্রমুখ।