ইভিএমে কারসাজির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে : বদিউল আলম
ঢাকা সিটি নির্বাচনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহারকে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। ‘সুজন’ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘ইভিএমে প্রাপ্ত ভোটের অডিট ব্যবস্থার সুযোগ না থাকায় কারসাজির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।’
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আপনি কাকে ভোট দিয়েছেন, নিশ্চিত না। কারণ, আগে থেকে কেলিব্রেট করে রাখা হয়নি। আপনি এক মার্কায় দিলেন, অন্য একটি মার্কায় কাউন্ট হলো। ভোটার ভেরিফায়েবল যদি থাকত, তাহলে আপনি প্রিন্ট আউট পেতেন, পরে এটি অডিট করা যেত। ভারতীয় ইভিএমের তুলনায় ১১ গুণ বেশি দামে কেনা হয়েছে। কিন্তু তাতে ওই ব্যবস্থা নেই।’
তিনি বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে আস্থার সংকট আছে। এবং নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোটারের অনুপস্থিতিতে ভোট দিতে পারে।’
সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ওপর যদি ভোটারদের আস্থা থাকত, তবে ইভিএম নিয়েও কোনো প্রশ্ন উঠত না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সব দলের সম্মতি ছাড়া ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি। যেহেতু ব্যালট পেপারে ভোটটাই আমাদের জন্য স্বীকৃত ও প্রচলিত পদ্ধতি, অতএব সেটাতে হতে পারত।’
দুই সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৪৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করলেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে তাঁদের কোনো তৎপরতা নেই বলেও দাবি করে সুজন।
প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানিয়ে সংগঠনটি বলছে, স্বল্পশিক্ষিত প্রার্থীদের পাশাপাশি সম্পদশালীদের সংখ্যা বেড়েছে ঢাকার সিটি নির্বাচনে।
ঢাকা সিটি নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে সম্পদের যে বিবরণ দিয়েছেন, তাতে বার্ষিক আয়ের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তাঁর বার্ষিক আয়ের পরিমাণ ৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আর তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপির ইশরাক হোসেনের সম্পদের পরিমাণ ৯১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে উত্তর সিটির বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের বার্ষিক আয় তিন কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের বার্ষিক আয় এক কোটি ২৯ লাখ টাকা। প্রার্থীদের হলফনামার সম্পদের বিবরণ তুলে ধরে সুজন এসব সম্পদের হিসাব যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানায়।
ড. বদিউল আলম বলেন, ‘মানুষ প্রার্থীদের সম্পর্কে জেনেশুনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। তথ্য তাদের ক্ষমতায়িত করে, প্রার্থীদের ব্যাপারে জানার ব্যাপারে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের ওই দায়িত্ব পালন করছে না। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে আমরা বহুদিন থেকে বলে আসছি তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা দরকার।’