আগামী বছর বাংলাদেশে আসবেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান
আগামী বছর বাংলাদেশ সফরে আসবেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। আগামী বছরের গোড়ার দিকে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশে আসবেন তিনি। এ ছাড়া মহামারি কোভিড-১৯ অবসানের পর দ্রুততম সময়ে ঢাকায় নবনির্মিত তুরস্কের দূতাবাস ভবন উদ্বোধনের প্রাক্কালে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বাংলাদেশে ভ্রমণের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন গতকাল বুধবার তুরস্কের আঙ্কারায় প্রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্সে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ আসার আমন্ত্রণ জানালে তিনি উপরোক্ত আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন রোহিঙ্গা শরণার্থী ও দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
নির্যাতিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এ সংকট সমাধানে দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সব বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার অভিমতও ব্যক্ত করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া বিদ্যমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে তুরস্ক থেকে আরো সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, উষ্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে তাঁরা বাণিজ্যিক পণ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ, আরো বেশি প্রতিনিধিদল প্রেরণ এবং মেলা ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামরিক খাতে চলমান সহযোগিতা শক্তিশালী বলে অভিহিত করেন তাঁরা। আলোচনায় উভয়েই বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
আগামী বছরের গোড়ার দিকে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান চেয়ার ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান যোগদানের বিষয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি নতুন সদস্যরাষ্ট্র যুক্ত করে ডি-৮ সম্প্রসারণের ব্যাপারে জোর দেন। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দেন। যার মধ্যে রয়েছে বিদ্যমান শুল্কবাধা এড়িয়ে নতুন পণ্য, বস্ত্র, ওষুধ ও অন্যান্য খাতের বিনিয়োগ। এ ছাড়া উভয় দেশে বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বাংলাদেশে তুরস্কের আর্থিক সহযোগিতায় একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দের জন্য এরদোয়ান প্রস্তাব দেন।
দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে নিয়মিত বিরতিতে উচ্চতর পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সন্তোষ প্রকাশ করেন। অদূর ভবিষ্যতে উভয় পক্ষ উচ্চতর পর্যায়ে নিয়মিত আলাপ-আলোচনা চালিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ফোরাম গঠনের ব্যাপারে একমত হয়।
বৈঠকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভাসওলু উপস্থিত ছিলেন।