অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা করে চুরির নাটক সাজান স্বামী
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা গ্রামে তমালিকা (২০) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহবধূর স্বামীকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গৃহবধূকে হত্যার পর চুরির নাটক সাজানো হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান।
হত্যারহস্য উদঘাটন সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, ‘এক বছর আগে রাসেল ও তমালিকার বিয়ে হয়। পারিবারিক কারণে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ ও বিরোধ চলে আসছিল। গত ৮ জানুয়ারি রাসেল ও অজ্ঞাতনামা (তদন্তের স্বার্থে নাম গোপন) আরেকজনকে নিয়ে ভালুকা থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। রাত আনুমানিক ১২টার দিকে তাঁরা বাড়িতে পৌঁছে এবং রাসেলের মা দরজা খুলে দেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাসেল তাঁর মায়ের হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে রাখেন। এরপর তারা গৃহবধূ তমালিকার শয়নকক্ষে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় নাক মুখ চেপে ধরায় তমালিকা অজ্ঞান হয়ে যান। দুজনে মিলে ধরাধরি করে তমালিকাকে বারান্দার মেঝেতে রেখে চাকু দিয়ে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চুরির নাটক সাজানো হয়।’
এ ঘটনায় মূল আসামি রাসেলকে গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহমেদসহ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা গাজীপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে। আসামি রাসেল খুবই দূরদর্শী এবং মোবাইল প্রযুক্তি সম্পর্কে কৌশলী ছিলেন। ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার সিডস্টোর এলাকায় আরেকটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তাঁর। সেই মেয়ের সহযোগিতায় অবশেষে গত ৩০ জানুয়ারি রাসেলকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
হত্যার ব্যাপারে গ্রেপ্তারকৃত রাসেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং এ কাজে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান নেত্রকোনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এসএম আশরাফুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফকরুজ্জামান জুয়েল, সংশ্লিষ্ট দুই থানার ওসিসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক্স মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।