লিখেছি, লিখছি, লিখে যাবো : সৈয়দ শামসুল হক
‘পিকাসোর যে শান্তি পারাবতটি ডানা ভেঙে পড়ার সম্ভাবনায় বিশ্বব্যাপী মানুষের যে উৎকণ্ঠা, তাকে উড্ডীন রাখার দায় নিয়েই রচিত হতে থাকে আমাদের সাহিত্য। মন্দকালে সাহিত্যকেই আমি শেষ পর্যন্ত দেখে উঠি সত্য ও মানবিকতার শেষ আশ্রয়, প্রথম ও প্রধান দুর্গ। এই দুর্গটিকে অজেয় রাখতেই হবে—এ আবেদন আমার অনুজ ও আগামীর সাহিত্যপথিক সবার জন্য।’ কথাগুলো সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের।
আগামীকাল ২৭ ডিসেম্বর সৈয়দ শামসুল হকের ৮০তম জন্মবার্ষিকী। কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও জাতীয় কবিতা পরিষদ এক সংবর্ধনা সভার আয়োজন করে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কবি সৈয়দ শামসুল হককে সম্মাননা ক্রেস্ট ও উত্তরীয় প্রদান করে জাতীয় কবিতা পরিষদ।
অনুষ্ঠানে জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে কবিকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্য রাখেন কবি বেলাল চৌধুরী, রফিক আজাদ, রবিউল হুসাইন, হাবীবুল্লাহ সিরাজী প্রমুখ।
আয়োজনের মধ্যমণি সৈয়দ শামসুল হক বলেন, ‘ঘাসের ওপরে এখনো যে আমি আছি, আমার কলমের কাজ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বয়স আমার ৮০ বছরে পৌঁছালেও, শরীর তার কালগতিতে ভাঙনের দিকে যাত্রা করলেও, পরাস্ত নই আমি, অবসানের মুখে তো নই-ই। আজ আমি প্রতিদিন প্রথম দিনের মতোই তরুণ কবি, তরুণ লেখক বলে নিজেকে অনুভব করে উঠি; নতুন থেকে নতুনতর বিষয় পাই, আঙ্গিকের পরীক্ষায় মেতে উঠি, বক্তব্যের রশ্মিতে ভেসে যাই। ভাগ্যতারাকে ধন্যবাদ দিই যে তার দূরস্থিত আলো আজো আমার ওপরে। আমাকে তা অটুট রেখেছে।’
‘লিখেছি, লিখছি, লিখে যাবো’ —জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভাষণ ‘দৃষ্টিভূমিতে দীর্ঘছায়া’ থেকে এভাবেই নিজের কথাগুলো বলেছেন কবি ও লেখক সৈয়দ শামসুল হক।