প্রাচ্যধারার কাজ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে ‘অনন্ত সৌন্দর্য মাঝে’ শিরোনামে শুরু হয়েছে নবীন শিল্পী অমিত নন্দীর প্রথম একক প্রাচ্যচিত্রকলা প্রদর্শনীর।

গত ১০ নভেম্বর বিকেল ৪টায় এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বনামধন্য শিল্পী অধ্যাপক আবুল বারক আলভী এবং ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লালারুখ সেলিম।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘প্রাচ্যধারার মাধ্যম ও টেকনিক ব্যবহার করে শিল্পী প্রকৃতির অনন্ত সৌন্দর্য যেমন তুলে ধরেছেন, তেমনি এই সৌন্দর্যের মাঝে মানবসৃষ্ট সমসাময়িক বাস্তবতার প্রকৃতির বিপন্ন অবস্হাকেও তুলে ধরেছেন। তাই তাঁর কাজে প্রকৃতি-সচেতনতার বার্তা দেয়। আমার বিশ্বাস অমিতের প্রাচ্যরীতিতে আঁকা চিত্রকর্মগুলো শিল্পপ্রেমীদের বিমোহিত করবে।’

শিল্পী অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, ‘প্রাচ্যশিল্পের একটি ধারা ওয়াস টেকনিক বা ধোয়া পদ্ধতি। একান্ত মননশীলতা এবং গভীর একাগ্রতায় এ ধারার কাজগুলো সম্পন্ন করতে হয়। ফলে প্রাচ্যচিত্রধারার কাজগুলো স্বকীয় ও ভাবরসে ঋদ্ধ হয়ে ওঠে। অমিত নন্দী তাঁর প্রথম একক প্রদর্শনীতে একাডেমিক শৈলীর কাজগুলোকেই উপস্থাপন করেছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘এসব কাজের বিষয় নির্বাচনে প্রকৃতি ও সমসাময়িক বাস্তবতার নানা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। তাঁর কাজগুলোতে একাডেমিক দক্ষতার ছাপ যেমন রয়েছে, তেমনি কতগুলো কাজে নিরীক্ষা প্রবণতাও লক্ষ করা যায়।’

প্রদর্শিত চিত্রকর্মগুলোতে প্রাচ্যরীতির বিভিন্ন মাধ্যম, টেকনিক ও শিল্প অনুভূতির নানা অনুষঙ্গের প্রভাব লক্ষণীয়। বিশেষ করে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবর্তিত জলরঙের ওয়াশ পদ্ধতিতে বেশির ভাগ কাজ করা হয়েছে। শিল্পকর্মগুলোতে প্রাচ্যচিত্রকলার সমৃদ্ধ ধারা এবং ঐতিহ্যের সুস্পষ্ট অনুষঙ্গ ও অনুরণন পাওয়া যায়। প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং সৌন্দর্যের সঙ্গে মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই প্রদর্শনীতে প্রকৃতি ও মানব অবয়বের বিভিন্ন কম্পোজিশন রয়েছে। রয়েছে কয়েকটি সিরিজ চিত্র।

শিল্পী অমিত নন্দীর বিএফএ এবং এমএফএ অধ্যায়ের একাডেমিক চর্চা, নিরীক্ষাধর্মীসহ ২৮টি চিত্রকর্ম নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রদর্শনী। প্রাচ্য ঘরানার ড্রয়িং, ক্যালিগ্রাফি, জলরং ওয়াশ পদ্ধতির কাজ, পাণ্ডুলিপি চিত্রণ এবং অ্যাক্রেলিক মাধ্যমে করা নিরীক্ষাধর্মী কাজ রয়েছে প্রদর্শনীতে।

প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ১৫ নভেম্বর (প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা) পর্যন্ত।