চিত্রশিল্পী আসমা সুলতানার কবিতার বই

Looks like you've blocked notifications!

একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে কাব্যগ্রন্থ ‘বালিশে লেগে থাকে বনভূমির ঘ্রাণ’, এটি শিল্পী আসমা সুলতানা মিতার প্রথম কবিতার বই। বইটির প্রচ্ছদ ও অলংকরণ শিল্পী নিজেই করেছেন।

বইটি সম্পর্কে আসমা সুলতানা বলেন, ‘জীবনের মহাকাব্য এর অভিব্যক্তি খুঁজে পেতে পারে নানা মাধ্যমে। কবিতা আর চিত্রকলা সম্ভবত সেই মাধ্যমগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অনন্য আর বাহুল্যবর্জিত। একটি কবিতা আর একটি চিত্রকলাকে বিভেদ করে কী? কিংবা প্রশ্ন করা যেতে পারে, একজন কবি আর একজন শিল্পীর মধ্যে বিভাজন রেখাটি কোথায়? পার্থক্যটি হয়তো শনাক্ত করা যেতে পারে এদের প্রকাশভঙ্গিতে। দুটি মাধ্যমই বিমূর্ত, সংক্ষিপ্ত; তবে আমাদের চোখ যে অভিজ্ঞতাটি সম্প্রসারণ করতে সক্ষম। শিল্পকলা বা কোনো চিত্রকে প্রথমে অনুভব করতে সহায়তা করে চোখ, যে বোধটি সচেতনতায় উপলব্ধ হয় অভিজ্ঞতা আর জানার পরিধির সীমানায় অনুরণিত হয়ে। একইভাবে কবিতার শব্দগুলো এর স্বতন্ত্র অর্থ নিয়ে আমাদের নিউরোনে স্পন্দিত হয়, অনুভূতি উন্মোচন করে আবেগের নানা স্তর, কবিতার শব্দের জালে আটকে পড়া অর্থগুলোর আঁকা চিত্র আমাদের অতীতবিধুরতা কিংবা ভবিষ্যৎ সম্ভাবনায় আন্দোলিত করে। কবিতা আর শিল্পকলা তাই সম্পাদিত সংক্ষিপ্ত একটি ইতিহাস। চিত্র শুধু শব্দহীন কোনো কবিতা, রোমান কবি হোরেসের অনুধ্যান ছিল এটি।’

নিজের শিল্পকর্ম ও কাব্যচর্চা সম্পর্কে আসমা সুলতানা বলেন, ‘শিল্পী হিসেবে আমার অনেক শিল্পকর্মই কাব্যিক, যাকে আমি নৈশব্দ্যের কাব্য বলে থাকি। মূলত শিল্পকলার ঐক্ষিক মাধ্যমে কাজ করলেও লেখালিখির অভ্যাসটিকে শিল্পচর্চা থেকে আমি কখনো পৃথক করে দেখতে পারিনি। শিল্পী ও কবির মাঝখানের নাজুক যে দেয়ালটি থাকে, সেটা সরিয়ে দেওয়া খুব কঠিন কাজ হয়তো নয়, তবে সেটি করার জন্য সাহসের প্রয়োজন। এই সাহসী কাজটি করেছেন এমন অনেক কবি-শিল্পী আছেন, যাঁরা আমার অনুপ্রেরণা। যেমন, ব্রিটিশ কবি উইলিয়াম ব্লেক, লেবানিজ কবি কাহলিল জিবরান, বাংলার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পূর্ণেন্দু পত্রী, কানাডার কবি লিওনার্দো কোহেন এবং আরো অনেকে। আর শিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, ভিনসেন্ট ভ্যানগগ বা সালভাদোর দালি যদিও চিঠি বা ডায়েরি লিখতেন, তবে তাঁদের লেখনী তাঁদের শিল্পকর্মের মতই শক্তিশালী। এমন আরো অনেক শিল্পীই রয়েছেন, যাঁদের শিল্পকর্মের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের লেখনীও আমাকে প্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছে।’

আসমা সুলতানার বইটিতে রয়েছে ২৮টি কবিতা আর এতে ব্যবহৃত সব রেখাচিত্র আঁকার সময়কাল ২০০৮ থেকে ২০১২। বইটি পাওয়া যাচ্ছে মেলার ২০৬-২০৭ নম্বর স্টলে।