ইতিহাসনির্ভর দুটি বই

Looks like you've blocked notifications!

একুশের গ্রন্থমেলায় দুটি ইতিহাসবিষয়ক বই পাওয়া যাচ্ছে। বই দুটি সম্পর্কে নিচে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেওয়া হলো।

পৃথিবীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মূল লেখক ই এইচ গমব্রিখ, ক্যারোলাইন মাস্টিলের ইংরেজি অনুবাদ থেকে ভাষান্তর : আসমা সুলতানা ও কাজী মাহবুব হাসান। প্রচ্ছদ করেছেন আসমা সুলতানা মিতা। বইটি পাওয়া যাচ্ছে দিব্যপ্রকাশের স্টলে (৫১৩-৫১৬)।

শিল্পকলার ইতিহাসবিদ ই. এইচ. গমব্রিখের লিটল হিস্ট্রি অব দ্য ওয়ার্ল্ড যদিও লেখা হয়েছিল ১৯৩৫ সালে (জার্মান ভাষায়), ২০০৫ সালে ইংরেজিতে প্রকাশ হওয়ার থেকেই ইতিহাস নিয়ে লেখা হয়েছে এমন বইগুলোর মধ্যে এটি একটি অত্যন্ত মূল্যবান বইয়ে পরিণত হয়েছে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্করণটি বিশ্বব্যাপী পাঁচ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়েছিল এবং সারা বিশ্বে মোট ত্রিশটি ভাষায় বইটি পাওয়া যায় এখন। সর্বশেষ তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাংলা ভাষার এই অনুবাদটি। এটি প্রকাশ করছে দিব্যপ্রকাশ। অবশ্যই গমব্রিখ তাঁর সময়ে এবং আজো পৃথিবীর সেরা শিল্পকলা ইতিহাসবিদদের একজন। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক প্রকাশনা ছাড়াও শিল্পকলার ইতিহাস নিয়ে তাঁর জনপ্রিয় ভূমিকাসংবলিত ‘দ্য স্টোরি অব আর্ট’ বইটি তাঁকে সুপরিচিত করেছিল বিশ্বব্যাপী বহু মিলিয়ন পাঠকের কাছে। কিন্তু যদি ‘লিটল হিস্ট্রি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বইটি তিনি না লিখতেন, দ্য স্টোরি অব আর্ট বইটিও তাঁর কখনোই লেখা হতো না। তুর্কি সংস্করণের ভূমিকায় বইটি নিয়ে গমব্রিখ লিখেছিলেন, ‘আমি গুরুত্বারোপ করতে চাই, এই বইটি ইতিহাসের কোনো পাঠ্যপুস্তক কখনোই প্রতিস্থাপন করার জন্য নয়, যে বইগুলো বিদ্যালয়ে খুবই ভিন্ন একটি উদ্দেশ্য পূরণ করে। আমি চাই আমার পাঠকরা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে এই গল্পটি অনুসরণ করুক, কোনো নোট নেওয়া বা নাম কিংবা তারিখ মুখস্থ করার কোনো চাপ ছাড়াই। বাস্তবিকভাবেই, আমি প্রতিজ্ঞা করছি, তাঁরা কী পড়েছেন সেটি নিয়ে আমি কোনো পরীক্ষা নেবো না’।

প্রতিমূর্তি : ৫০টি জীবনে ভারতের ইতিহাস

মূল লেখক সুনীল খিলনানি। অনুবাদ করেছেন কাজী মাহবুব হাসান। প্রচ্ছদ করেছেন আসমা সুলতানা মিতা। বইটি পাওয়া যাবে দিব্যপ্রকাশের স্টলে (৫১৩-৫১৬)

কিংস কলেজ লন্ডনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং অধ্যাপক সুনীল খিলনানির ‘ইনকারনেশনস : ইন্ডিয়া ইন ফিফটি লাইভস’ বইটি পঞ্চাশটি জীবনীর মাধ্যমে ভারতে ইতিহাসের একটি বিবরণ। এমারসন বলেছিলেন, ইতিহাস বলে কিছু নেই, আছে শুধু জীবনী। জীবনী প্রকৃত সামাজিক ইতিহাসের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না, এমন মতামতের কারণে হয়তো উপমহাদেশের সাহিত্যভাণ্ডারে জীবনী এবং বিবরণমূলক ইতিহাস অদ্ভুতভাবেই অনুপস্থিত। সুনীল খিলনানি মনে করেন, এই জীবনীগুলোকেই রাজনৈতিক পুরাণ সৃষ্টি করতে ব্যবহার করা হয়েছে, ইতিহাসের রক্তমাংসের মানুষগুলোকে যা একমাত্রিক দানব বা দেবতায় রূপান্তরিত করেছে এবং কিছু ঐতিহাসিক চরিত্রকে সুরক্ষিত করে রেখেছে নিরীক্ষা থেকে। তাঁর মতে, ভারতের আত্ম-অনুসন্ধানের প্রচেষ্টা ও সংগ্রামে এই জীবনীগুলো মূল ধারণা আর যুক্তিগুলোর প্রতিনিধিত্ব করছে, আর এই বিচিত্র চরিত্রগুলো এখনো প্রাসঙ্গিকতা হারাননি। ভারতীয় বর্তমানে এখনো তাঁরা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন। এ ছাড়া ভবিষ্যতের সম্ভাবনাগুলো চিরতরে হারানোর ঝুঁকিটিকেও স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন।