ইমদাদুল হক মিলন ও আনিসুল হকের উপন্যাসের চাহিদা বেশি

Looks like you've blocked notifications!

আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বইমেলার প্রাঙ্গণ বিকাল ৩টা থেকেই তরুণ তরুণীদের আনন্দ-উল্লাসে ভরে উঠেছে। গতকাল ছিল পয়লা ফাল্গুন। বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ সেজেছিল হলুদ-কমলা ও বাসন্তী রঙে। আজ তাঁরা পরেছেন বিচিত্র রঙের পোশাক। কেউ কেউ প্রিয়জনদের উপহার দিচ্ছেন প্রেমের গল্প-কবিতা-উপন্যাস। কয়েকজন প্রকাশকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইমদাদুল হক মিলন ও আনিসুল হকের প্রেমের উপন্যাসের চাহিদা বেশি। হুমায়ূন আহমেদের পাশাপাশি তরুণ লেখকদের বই বিক্রি হচ্ছে বলে জানান অন্যপ্রকাশের বিক্রয়কর্মীরা। অনেকে শহীদ কাদরী, নির্মলেন্দু গুণ ও হেলাল হাফিজের প্রেমের কবিতা খোঁজ করছেন। তবে একজন প্রকাশক এও জানান, ভালোবাসা দিবসে যাঁরা বইমেলায় এসেছেন তাঁদের আগ্রহ খাবার ও সেলফি তোলায়। অধিকাংশ দর্শনার্থী কোনো স্টলে গিয়ে বই না দেখে আড্ডা দেওয়ার জায়গা খোঁজেন। তবে বাংলা একাডেমির এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশেষ দিনগুলোতে বইবিক্রি বেশি হয়।

নতুন বই

মেলার চৌদ্দতম দিনে এসে বাংলা একাডেমিতে নতুন বই জমা পড়েছে ১৪৭টি। গতকাল পর্যন্ত নতুন বই জমা পড়েছে ১ হাজার ৮ শত ৫০টি। গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদ-শিশুসাহিত্য সব ধরনের বই আছে এ তালিকায়। বাংলা একাডেমির হিসাব অনুযায়ী, গত এগার দিন পর্যন্ত সাহিত্যের বিভাগ অনুযায়ী বই জমা পড়েছে গল্প ২৪১টি, উপন্যাস ২৪৫টি, প্রবন্ধ ৯০টি, কবিতা ৪৪৫টি, গবেষণা ২৬টি, ছড়া ৩৭টি, শিশুতোষ ৪৭টি, জীবনীগ্রন্থ ৪৮টি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ৪৪টি, নাটক ১৪টি, বিজ্ঞানবিষয়ক বই ৩০টি, ভ্রমণকাহিনি ৩৩টি, ইতিহাসমূলক ৩০টি, রাজনীতিবিষয়ক ১৩টি, চিকিৎসাসংক্রান্ত ১২টি, রম্য ১৪টি, ধর্মীয় ৮টি, অনূদিত বই ৫টি, সায়েন্স ফিকশন/গোয়েন্দা ২৩টি এবং বাকিগুলো অন্যান্য।

আলোচনা পর্ব

প্রতিদিন বইমেলার মূলমঞ্চে বিকেল চারটার সময় শুরু হয় আলোচনা পর্ব। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল: ডিজিটাল বাংলাদেশে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বিজ্ঞানভাবনা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রেজাউর রহমান, আবদুল কাইয়ুম এবং অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। এরপর শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও সংগীত সন্ধ্যা।

লেখক বলছি

অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের সংযোজন ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে আজ উপস্থিত ছিলেন কথাশিল্পী আনিসুল হক, প্রাবন্ধিক-কথাশিল্পী আকিমুন রহমান, প্রাবন্ধিক রাহাত মিনহাজ ও কবি চাণক্য বাড়ৈ, কথাশিল্পী মাহবুব ময়ুখ রিশাদ। এ মঞ্চে বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচজন করে লেখক উপস্থিত থাকেন। প্রত্যেকে ২০ মিনিট করে এই মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেন। সঞ্চালনায় থাকেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে এক কপি বই জমা দেবেন। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়। এর জন্য কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত বইয়ের লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি থেকে মনোনীত বই বাছাই উপকমিটি এই বই বাছাই করবে। বইয়ের প্রকাশকাল হতে হবে মার্চ ২০১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯।

মোড়ক উন্মোচন

মেলার চৌদ্দতম দিনে মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ২৮টি বইয়ের। গত ১৩দিনে প্রায় চার শতাধিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় বইমেলার এই মঞ্চে।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচনের জন্য বই জমা দেবেন। এজন্য তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেলে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়।

আগামীকাল শুক্রবার মেলার ১৫তম দিন। ছুটির দিন হিসেবে মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর।