বসন্তের প্রথম দিনে মেলায় উপচে পড়া ভিড়

Looks like you've blocked notifications!

ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন আজ পয়লা ফাল্গুন। প্রকৃতিতে লেগেছে রঙের ছোঁয়া। চারদিকে তরুণ-তরুণীদের সাজ সাজ রব। রাজধানীতে নানাভাবে চলছে বসন্ত বরণ উৎসব। বসন্তের এই বর্ণিল সাজে পাল্লা দিয়ে সেজেছে আজ অমর একুশে গ্রন্থমেলা। গ্রন্থমেলা শুরু হয় বিকাল ৩টায়। দুপুর থেকেই মেলার প্রবেশপথে দীর্ঘ লাইন ছিল। মেয়েদের পরণে হলুদ, কমলা, বাসন্তিসহ নানা রঙের শাড়ি, খোপায় গাঁদা-গোলাপসহ নানা রঙের ফুল ও ফুলের রিং। ছেলেরা পরেছে হলুদসহ নানা রঙের পাঞ্জাবী। শিশুরাও সেজেছে বাসন্তী রঙে। বসন্তের এ দিনে পাঠকদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তাদের প্রিয় লেখকরাও।  অনেকে এসেছেন ঘুরতে, অনেকে তাদের প্রিয় লেখকের অটোগ্রাফসহ বই কিনতে। বই কিনে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপ করতে দেখা গেছে তরুণ-তরুণীদের। শিশু চত্বরেও ছিল উপচেপড়া ভিড়।

নতুন বই

মেলার তেরোতম দিনে এসে বাংলা একাডেমিতে নতুন বই জমা পড়েছে ১৭২টি। গতকাল পর্যন্ত নতুন বই জমা পড়েছে ১ হাজার ৬ শত ৮০টি। গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদ-শিশুসাহিত্য সব ধরনের বই আছে এ তালিকায়। বাংলা একাডেমির হিসাব অনুযায়ী, গত এগার দিন পর্যন্ত সাহিত্যের বিভাগ অনুযায়ী বই জমা পড়েছে: গল্প ২৪১টি, উপন্যাস ২৪৫টি, প্রবন্ধ ৯০টি, কবিতা ৪৪৫টি, গবেষণা ২৬টি, ছড়া ৩৭টি, শিশুতোষ ৪৭টি, জীবনীগ্রন্থ ৪৮টি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ৪৪টি, নাটক ১৪টি, বিজ্ঞানবিষয়ক বই ৩০টি, ভ্রমণকাহিনি ৩৩টি, ইতিহাসমূলক ৩০টি, রাজনীতিবিষয়ক ১৩টি, চিকিৎসাসংক্রান্ত ১২টি, রম্য ১৪টি, ধর্মীয় ৮টি, অনূদিত বই ৫টি, সায়েন্স ফিকশন/গোয়েন্দা ২৩টি এবং বাকিগুলো অন্যান্য।

আলোচনা পর্ব

প্রতিদিন বইমেলার মূলমঞ্চে বিকেল চারটার সময় শুরু হয় আলোচনা পর্ব। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল: কবি রফিক আজাদ : শ্রদ্ধাঞ্জলি। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বজিৎ ঘোষ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অসীম সাহা, ফারুক মাহমুদ এবং জাফর আহমদ রাশেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রশীদ হায়দার। এরপর শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও সংগীত সন্ধ্যা।

লেখক বলছি

‘লেখক বলছি’ মঞ্চে আজ উপস্থিত ছিলেন প্রাবন্ধিক-গবেষক আহম্মেদ রফিক, প্রাবন্ধিক শহীদ ইকবাল, কথাশিল্পী মণিকা চক্রবর্তী, কবি সঞ্জীব পুরোহিত ও কবি ফারুক সুমন। এ মঞ্চে বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচজন করে লেখক উপস্থিত থাকেন। প্রত্যেকে ২০ মিনিট করে এই মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেন। সঞ্চালনায় থাকেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে এক কপি বই জমা দেবেন। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়। এর জন্য কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত বইয়ের লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি থেকে মনোনীত বই বাছাই উপকমিটি এই বই বাছাই করবে। বইয়ের প্রকাশকাল হতে হবে মার্চ ২০১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯।

মোড়ক উন্মোচন

মোড়ক উন্মোচন করা হয় ৩০টি বইয়ের। গত ১২দিনে প্রায় চার শতাধিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় বইমেলার এই মঞ্চে।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচনের জন্য বই জমা দেবেন। এজন্য তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেলে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়।

আগামীকাল বুহস্পতিবার মেলার ১৪তম দিন।  আশা করা যাচ্ছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে  আগামীকালও মেলা প্রাঙ্গণ তরুণ-তরুণীদের আড্ডা ও কলহাস্যে ভরে উঠবে। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।