বইমেলায় বইপ্রেমী, ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়

Looks like you've blocked notifications!
অমর একুশে গ্রন্থমেলার নবম দিনে শিশু প্রহরে শিশুদের অটোগ্রাফ দিচ্ছেন লেখক ও অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আজ শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা। ছবি : ফোকাস বাংলা

অমর একুশে গ্রন্থমেলার নবম দিন আজ শনিবার। ছুটির এ দিনে বেলা ১১টা থেকে শুরু হয় গ্রন্থমেলা। সকালে ছিল শিশুপ্রহর। আজ সকাল থেকে আবহাওয়া মেঘলা ও শীত কিছুটা বেশি বলে মনে হলেও শিশুরা বাড়িতে বসে থাকেনি। মা-বাবার হাত ধরে দলে দলে বইমেলায় এসেছে। কিনেছে পছন্দের এক বা একাধিক বই।

এদিন সকাল ১০টায় থেকে বাংলা একাডেমির আয়োজনে শিশুদের উপস্থিত বক্তৃতা ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় বাংলা একাডেমির ভেতরে বইমেলার মূল মঞ্চে। সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা পর্বে ৫০টি প্রশ্নের উত্তর দেয় শিশুরা। উপস্থিত বক্তৃতা পর্বে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত বিষয়ে বক্তৃতা দেয় শিশুরা।

মেলার দ্বিতীয় প্রহর শুরু হয় বিকেল ৩টায়। ছুটির দিন হিসেবে গতকালের মতো আজও সন্ধ্যায় উপচে পড়া ভিড় ছিল বইপ্রেমী ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। 

নতুন বই

মেলার নবম দিন প্রতিটা প্রকাশনী সংস্থা থেকে বেশকিছু নতুন বই এসেছে। এ দিনে বাংলা একাডেমিতে নতুন বই জমা পড়েছে ২৬৩টি। এর আগের দিন পর্যন্ত  নতুন বই জমা পড়েছে ১ হাজার ৯৫টি। গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদ-শিশুসাহিত্য সব ধরনের বই আছে এ তালিকায়। ষষ্ঠ দিন পর্যন্ত সাহিত্যের বিভাগ অনুযায়ী বই জমা পড়েছে: গল্প ১০৭টি, উপন্যাস ১২২টি, প্রবন্ধ ৪৫টি, কবিতা ১৬১টি, গবেষণা ১২টি, ছড়া ২৩টি, জীবনীগ্রন্থ ১৯টি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ২৭টি, নাটক ৮টি, বিজ্ঞানবিষয়ক বই ১৩টি, ভ্রমণকাহিনি ১৫টি, ইতিহাসমূলক ১৩টি, রাজনীতিবিষয়ক ৫টি, চিকিৎসাসংক্রান্ত ৫টি, রম্য ৬টি, ধর্মীয় ১টি, অনূদিত বই ৩টি, সায়েন্স ফিকশন/গোয়েন্দা ১১টি এবং বাকিগুলো অন্যান্য।

আলোচনা পর্ব

প্রতিদিন বইমেলার মূলমঞ্চে বিকেল ৪টার সময় শুরু হয় আলোচনা পর্ব। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল- ‘চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর : শ্রদ্ধাঞ্জলি’। মূল প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন মঈনুদ্দীন খালেদ। আলোচনায় অংশ নেন ফরিদা জামান, নিসার হোসেন ও মলয় বালা। সভাপতিত্ব করেন হাশেম খান। এরপর শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও সংগীত সন্ধ্যা। চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।

লেখক বলছি

অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের সংযোজন ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে আজ উপস্থিত ছিলেন কবি মাহবুব সাদিক, কবি কুমার চক্রবর্তী, কবি মারুফ রায়হান, কথাশিল্পী পাপড়ি রহমান ও কবি-কথাসাহিত্যিক মাহবুব আজীজ।

এ মঞ্চে বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচজন করে লেখক উপস্থিত থাকেন। প্রত্যেকে ২০ মিনিট করে এই মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেন। সঞ্চালনায় থাকেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা।

অমর একুশে গ্রন্থমেলার নবম দিনে বই দেখছে এক শিশু। আজ শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা। ছবি : ফোকাস বাংলা

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে এক কপি বই জমা দেবেন। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়। এর জন্য কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত বইয়ের লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি থেকে মনোনীত বই বাছাই উপকমিটি এই বই বাছাই করবে। বইয়ের প্রকাশকাল হতে হবে মার্চ ২০১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯।   

মোড়ক উন্মোচন

মেলার নবম দিন মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ৯০টি বইয়ের।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচনের জন্য বই জমা দেবেন। এজন্য তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেলে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়। 

লিটলম্যাগ চত্বর

লিটলম্যাগ কর্নারে কথা হয় স্টলের দায়িত্বে থাকা লিটলম্যাগকর্মীদের সঙ্গে। তাঁরা জানান, গত কয়েকদিনে পাঠক আসছেন। পত্রিকা বিক্রি হচ্ছে। তাঁরা এও বলছেন, লিটলম্যাগ সম্পর্কে অনেকের ধারণা নেই। পত্রিকা নেড়েচেড়ে নানা প্রশ্ন করেন।

তাঁদের দাবি, লিটলম্যাগ নিয়ে বাংলা একাডেমি সেমিনার করতে পারেন। লেখক বলছি মঞ্চে লেখকদের পাশাপাশি লিটলম্যাগের সম্পাদকদের কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আবেদন জানান তাঁরা।

আগামীকাল রোববার মেলার দশম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।