বিশেষ শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার চান অভিভাবকরা

Looks like you've blocked notifications!

অমর একুশে গ্রন্থমেলার অষ্টম দিন আজ। ছুটির দিন শুক্রবার হওয়ায় আজ সকাল ১১টা থেকে শুরু হয় গ্রন্থমেলা।

সকালে ছিল শিশুপ্রহর। শিশুপ্রহরে মা-বাবাদের সঙ্গে শিশুরা আসে। সিসিমপুরের পরিবেশনায় তারা আপ্লুত হয়। বটগাছের নিচের শিশুমঞ্চে লাফালাফি করতে থাকে চার বছরের নিচের শিশুরা। অনেক শিশুর হাতে বইমেলা থেকে বের হওয়ার সময় নানা রঙের বই দেখা গেছে।

এক শিশুর সঙ্গে আসা বাবার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার শিশুটি স্পেশাল চাইল্ড। তিনি প্রতিবছর ওকে বইমেলায় নিয়ে আসেন। স্পেশাল শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার থাকলে বাবা হিসেবে তিনি খুশি হবেন বলে জানান।

সকালে বাংলা একাডেমি আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় বাংলা একাডেমির ভেতরে। মেলার দ্বিতীয় প্রহর শুরু হয় বিকেল ৩টায়। ছুটির দিন হিসেবে সন্ধ্যায় উপচে পড়া ভিড় ছিল বইপ্রেমী ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। অনেকে তাদের পছন্দের বই কিনেছে। আজ অনেক জনপ্রিয় লেখককেও মেলায় দেখা গেছে নিজ নিজ স্টলে পাঠকদের অটোগ্রাফ দিতে। ঢাকার বাইরে থেকেও লেখকরা এসেছেন।

নতুন বই

আজ প্রায় প্রতিটি প্রকাশনী সংস্থা থেকে বেশ কিছু নতুন বই এসেছে। এ দিনে বাংলা একাডেমিতে নতুন বই জমা পড়েছে ২৬৩টি। এর আগে নতুন বই জমা পড়েছে ৮৩২টি। গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদ-শিশুসাহিত্য সব ধরনের বই আছে এ তালিকায়। ষষ্ঠ দিন পর্যন্ত সাহিত্যের বিভাগ অনুযায়ী বই জমা পড়েছে : গল্প ১০৭টি, উপন্যাস ১২২টি, প্রবন্ধ ৪৫টি, কবিতা ১৬১টি, গবেষণা ১২টি, ছড়া ২৩টি, জীবনীগ্রন্থ ১৯টি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ২৭টি, নাটক ৮টি, বিজ্ঞানবিষয়ক বই ১৩টি, ভ্রমণকাহিনী ১৫টি, ইতিহাসমূলক ১৩টি, রাজনীতিবিষয়ক পাঁচটি, চিকিৎসা-সংক্রান্ত পাঁচটি, রম্য ছয়টি, ধর্মীয় একটি, অনূদিত বই তিনটি, সায়েন্স ফিকশন/গোয়েন্দা ১১টি এবং বাকিগুলো অন্যান্য।

আলোচনা পর্ব

প্রতিদিন বইমেলার মূলমঞ্চে বিকেল ৪টার সময় শুরু হয় আলোচনা পর্ব। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল ‘চিত্রশিল্পী পরিতোষ সেন : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি’। মূলপ্রবন্ধকার ছিলেন আবুল মনসুর। আলোচনায় ছিলেন মতলুব আলী, সৈয়দ আবুল মকসুদ ও আমীরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন রফিকুন নবী। এরপর শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি ও সংগীতসন্ধ্যা। চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।

লেখক বলছি

অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের সংযোজন ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে আজ উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল, কবি মিনার মনসুর, কথাসাহিত্যিক নাসরিন জাহান, শিশুসাহিত্যিক রফিকুর রশীদ ও কবি দ্রাবিড় সৈকত। এ মঞ্চে বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচজন করে লেখক উপস্থিত থাকেন। প্রত্যেকে ২০ মিনিট করে এই মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেন। সঞ্চালনায় থাকেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে এক কপি বই জমা দেবেন। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়। এর জন্য কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত বইয়ের লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি থেকে মনোনীত বই বাছাই উপকমিটি এ বই বাছাই করবে। বইয়ের প্রকাশকাল হতে হবে মার্চ-২০১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি-২০১৯।

মোড়ক উন্মোচন

মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে মোড়ক উন্মোচন করা হয় আজ ১২টি বইয়ের।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচনের উদ্দেশ্যে বই জমা দেবেন। এ জন্য তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়।

লিটলম্যাগ চত্বর

লিটলম্যাগ চত্বরে লোকসমাগম ছিল আজ অন্যদিনের চেয়ে বেশি। আজ মেলায় এসেছে সপ্তকের অনুবাদ সংখ্যা। এবারের মেলায় অনুবাদ নিয়ে এই একটি মাত্র পত্রিকা তাদের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন দেশের গল্প-কবিতা-প্রবন্ধের পাশাপাশি অনুবাদবিষয়ক গদ্যও আছে। আছে অনুবাদকের সাক্ষাৎকার। যাঁরা অনুবাদ সাহিত্য নিয়ে ভাবেন, তাঁদের জন্য সংখ্যাটি কাজে দেবে বলে মনে করেন সম্পাদক কবি শিকদার ওয়ালীউজ্জামান। আগামীকাল শনিবার মেলার নবম দিন। ছুটির দিন হিসেবে মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত থাকবে শিশুপ্রহর।