Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
অ ফ A
  • English Version
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • শিশু-কিশোর
  • হাস্যরস
  • English
  • নির্বাচন
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • শিশু-কিশোর
  • হাস্যরস
  • English
  • নির্বাচন
  • English Version
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

লালে রঙিন শাহতাজ

ফুলের গ্রাম সাবদী

সালমান-ক্যাটরিনার ঝলক

বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন

লেগুনায় শিশু হেলপার

ঘুম কাড়ছেন সায়ন্তনী

এক ঝলকে দেখে নিন বিশ্বসুন্দরীকে

জলে ভেজা আনারকলি

আমিরার রূপে কুপোকাত নেট-জনতা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, তারার মেলা

কুমার দীপ
১৯ জানুয়ারী, ২০১৯, ১৬:০৮
আপডেট: ১৯ জানুয়ারী, ২০১৯, ১৬:০৮
সংশ্লিষ্ট খবর
পর্দা উঠল বটতলা রঙ্গমেলার
সমতলের আদিবাসী: কড়ারা কি পারবে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে?
সমতলের আদিবাসী: জাতির নাম কেন ‘কড়া’
ফিরতি পথে
সাঈফ ইবনে রফিকের একগুচ্ছ অনুগল্প

আমিনুল ইসলামের কবিতা : বিস্তৃত ভূগোলে শেকড়ের সন্ধান

কুমার দীপ
১৯ জানুয়ারী, ২০১৯, ১৬:০৮
আপডেট: ১৯ জানুয়ারী, ২০১৯, ১৬:০৮

১.

তার চেয়ে চলো যাই ফেলে আসা বটের ছায়ায়

স্বোপার্জিত তৃণে বাঁধি ভালোবাসার দুইচালা ঘর।

ভুল হলে আছে তো বাবুই— নিসর্গের কনসালট্যান্ট

আয়োজিত উৎসবের জারজ কথার চেয়ে

বেহেতর অনেক মুখরিত হয়ে শোনা

শ্যামাদোয়েলের কণ্ঠে মুক্ত কবিগান।

(তন্ত্র থেকে দূরে)

প্রথম কাব্য ‘তন্ত্র থেকে দূরে’র নাম কবিতায় রাজনীতির কুটিলতা, নাগরিক জীবনের জটিলতা, বুদ্ধিজীবীর পরান্নে জাবর কাটা... এইসব ভ্রষ্টতার বাইরে এসে স্বস্তিময় নিরুপদ্রব জীবন কাটানোর জন্য পল্লির নিসর্গতায় ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আমিনুল ইসলাম। কিন্তু নিজে তা পেরেছেন কি ? যদি বলি- হ্যাঁ, তাহলে সত্য বলা হয়; আবার যদি বলি- না, তাহলেও মিথ্যা বলা হয় না। প্রশ্ন উঠতে পারে- এ আবার কেমন কথা ? দুটো বিপরীতধর্মী বক্তব্য, একই অবয়বে সত্য হতে পারে কি ? পারে। পারে যে, তার প্রমাণ আমিনুল ইসলাম নিজেই দিয়েছেন তাঁর কবিতার ভেতর দিয়ে। একদিকে যেমন বঙ্গপল্লির ঘর-বাড়ি নদী-নালা মাঠ-ঘাট গাছপালা-সবুজ ইত্যাদি অনুষঙ্গ; বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিভিন্ন ঘটনা-অণুঘটনা-চরিত্র ভাস্কর্য-স্থাপত্য-সৌধ প্রভৃতি পাথেয়সহ বিস্তৃত পটভূমিকায় নিজস্ব শেকড়ের সন্ধানও করেছেন, অন্যদিকে তেমনি নাগরিক ও আন্তর্জাতিক পটভূমি ও পরিমণ্ডলের বিবিধ ঘটনা-অঘটনাদি, চরিত্র-স্থান-কালসহ প্রয়োজনসিদ্ধ অসংখ্য বিষয়াদিকে পঙক্তিতে স্থান দিয়ে সর্বজনীন ভালোবাসা ও মানবিক মূল্যবোধের একটা কাব্যচারিত্র্য নির্মাণের প্রয়াস করেছেন। অর্থাৎ, তাঁর কবিতার ভূগোলটি কাঁটাতারে আবদ্ধ নির্দিষ্ট কোনো সীমানাকে মান্য করেনি। তবে একথাও সত্য যে, এইসব বহির্দেশ ও ভিন্ন ভূখণ্ডের বিষয়গুলির ভেততেরও নিজস্ব মানবিক অস্তিত্ব অনুসন্ধানের প্রচেষ্টাও সেখানে বিদ্যমান। ফলে তাঁর সার্বিক কাব্যসাধনাকে যদি বিস্তৃত ভূগোলে শেকড়ের সন্ধান হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়; বোধ করি অমূলক কিছু বলা হয় না।   

২.

প্রথাবদ্ধ কোনো দশকী হিসেবের জন্যে নয়, আবির্ভাব সময়কে বুঝে ওঠার জন্যেই জানিয়ে রাখি- আমিনুল ইসলাম নব্বই দশকের কবি। ১৯৬৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের টিকচলীচর গ্রামে তাঁর জন্ম। আমাদের দেশের অনেক মানুষের মতো এই সালটা বোধ হয় শিক্ষাসনদ থেকে প্রাপ্ত; প্রকৃত জন্মসাল হয়তো আরেকটু আগের। কারণ কবির নিজের বক্তব্যেই জানা যায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাঁর বয়স ছিলো সাড়ে আট থেকে নয় বছর। ‘যেভাবে বেড়ে ওঠা : কবি ও কবিতা’ নামক স্মতিগদ্যে কবি লিখেছেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ স্বচক্ষে অবলোকন এবং সে সময়ের বহু ঘটনার শিশুসাক্ষী হয়ে যাওয়া এবং থাকা। তখন আমি খুবই ছোটো। আমার বয়স ৮/৯ বছর; চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি। কিন্তু প্রায় সব ঘটনা বুঝার মতো জ্ঞান ছিলো এবং অধিকাংশ ঘটনা আমার আজো মনে আছে।’ সম্ভ্রান্ত কৃষক পরিবারের সন্তান আমিনুল ইসলাম কর্মজীবনে সরকারি চাকুরে এবং বর্তমানে বাংলাদেশ সচিবালয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। ২০০২ সালে, যতদূর মনে পড়ে তিনি তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা; ‘তন্ত্র থেকে দূরে’ নামক কবিতাগ্রন্থ হাতে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছিলেন। আমিই সেগ্রন্থের মুগ্ধপাঠ আলোচনা লিখেছিলাম  ছোটকাগজ ‘চিহ্ন’র পাতায়। তারপর একে একে প্রকাশিত হয়েছে ‘মহানন্দা এক সোনালি নদীর নাম’ (২০০৪); ‘শেষ হেমন্তের জোছনা’ (২০০৮); ‘কুয়াশার বর্ণমালা’ (২০০৯); ‘পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি’ (২০১০); ‘স্বপ্নের হালখাতা’ (২০১১); ‘প্রেম সমগ্র’ (২০১১); ‘জলচিঠি নীল স্বপ্নের দুয়ার’ (২০১২); ‘শরতের ট্রেন শ্রাবণের লাগেজ’ (২০১৩); ‘জোছনা রাত বেদনা বেহালা’ (২০১৪), ‘আমার ভালোবাসা তোমার সেভিংস অ্যাকাউন্ট’ (২০১৫), ‘অভিবাসী ভালোবাসা’ (২০১৬), ‘ভালোবাসার ভূগোলে’ (২০১৭) নামের কাব্যগুলো। এই সমস্ত গ্রন্থ নিয়েই ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে অনন্যা প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে আমিনুল ইসলামের ‘কবিতাসমগ্র’-এর দ্বিতীয় সংস্করণ।

কবিতাসমগ্র শুরু হয়েছে ২০১৫তে প্রকাশিত ‘আমার ভালোবাসা তোমার সেভিংস অ্যাকাউন্ট’ কাব্যটি দিয়ে এবং শেষ হয়েছে প্রথম কাব্য ‘তন্ত্র থেকে দূরে’ দিয়ে (বন্ধনীতে একটা কথা বলে রাখি, এই যে সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত বিভিন্ন কবিতাসমগ্রতে একেবারে শেষ কাব্য থেকে গ্রন্থটি শুরু করবার প্রবণতা, এটা আমাদের অভ্যস্ত দৃষ্টিকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। এবং লেখকসত্তার স্বাভাবিক ক্রমবিকাশকে চিহ্নিত করতে ঈষৎ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বলেই মনে হয়।)। ফলে কবির প্রারম্ভ থেকে বিকাশ চিহ্নিত করতে হলে বইটিই পাঠ শুরু করতে হয় শেষের দিক থেকে ! আর হ্যাঁ, কবিতার পাশাপাশি ‘দাদুর বাড়ি’ (২০০৮) ‘ফাগুন এলো শহরে’ (২০১২) ও ‘রেলের গাড়ি লিচুর দেশ’ (২০১৫) নামে তিনটি ছড়ার বই এবং ‘বিশ্বায়ন বাংলা কবিতা ও অন্যান্য প্রবন্ধ’ (২০১০) নামে একটি গদ্যগ্রন্থ আছে। এর বাইরে নজরুল সঙ্গীতের একজন বিশ্লেষক হিসেবেও তাঁকে আমি জানি। সাহিত্যসাধনার স্বীকৃতি হিসেবে ‘রাজশাহী সাহিত্য পিরষদ সাংগঠনিক সম্মাননা’ (২০০৪); ‘বগুড়া লেখকচক্র স্বীকৃতি পুরস্কার’ (২০১১); ‘নজরুল সঙ্গীত শিল্পী পরিষদ সম্মাননা’ (২০১৩); ‘গাঙচিল সাহিত্য পুরস্কার’ (২০১৫), ‘দাগ সাহিত্য পুরস্কার-২০১৮’ ইত্যাদি পেয়েছেন।

শিরোনামের দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা আমিনুল ইসলামের কবিতারাজ্যের দিকে একটু নজর দিতে চাই। 

৩.

আমিনুল ইসলামের কবিতার বিষয়বস্তু বিবিধ এবং বৈচিত্র্যময়। নদীমাতৃক বাংলার ছবি যেমন তাঁর অন্যতম প্রিয় বিষয়, তেমনি বিস্তীর্ণ পটভূমিকায় উঠে এসেছে শস্য-শ্যামল বাংলাদেশের প্রকৃতি ও মানুষের কথা। শহুরে জীবন ও জীবনের ক্লেদ, রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের কুটিল মানুষ ও তাদের প্রতারণাপূর্ণ জীবনবৈশিষ্ট্য... এসবও তাঁর কবিতার পঙক্তিতে পরিণত হয়েছে। বাদ পড়েনি বাংলার ইতিহাস-সংস্কৃতি-পুরাণ প্রভৃতি শেকড়ের বার্তাও। মাঝে-মধ্যেই উঁকি দিয়েছে সমকালীন বিশ্বপরিস্থিতি। নির্যাতিত মানব সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতি আর সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ভোগ-দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী পঙক্তিও আমিনুল ইসলামের কবিতার একটি বৈশিষ্ট্য। এসব ক্ষেত্রে সাধারণ বক্তব্যের মাঝে মাঝে বুদ্ধিবৃত্তিক বিদ্রুপও করেছেন তিনি। কবি ও কবিতা এবং সঙ্গীত ও কণ্ঠশিল্পীসহ আরও অনেক বিষয়াদিও আমিনুল ইসলামের কবিতায় জায়গা করে নিয়েছে। আর হ্যাঁ, প্রেম; মানব-মানবীর প্রেম ব্যতীত কি কবিতা হয় ? আমিনুলও তাঁর কবিতার অন্যতম অনুষঙ্গ করেছেন প্রেমকে।

কবিতার অনুষঙ্গ হিসেবে বহুকিছুকেই গ্রহণ করলেও কোনো কিছুতেই তিনি দীর্ঘসময় আটকে থাকেননি, বরং এক বিষয় থেকে আরেক বিষয়ে নিরন্তর পরিভ্রমণ করে বেড়িয়েছেন।

কী কারণে তা জানি না, তবে আমিনুল ইসলামের কবিতার বিষয় হিসেবে প্রথমেই যে জিনিসটির কথা চোখে ভাসে, তা হলো— নদী। বাংলার নদী। সমগ্র বাঙলা সাহিত্যেই নদী একটি সার্বভৌম বিষয়। আমিনুল ইসলামের কবিতায় তো এটি প্রায় একটি অনিবার্য অনুষঙ্গ। বলা যায়- নদীর অনুষঙ্গেই তিনি অঙ্কন করতে চেয়েছেন কৃষিপ্রধান শ্যামল বাংলার মানুষ প্রকৃতির বিচিত্র রূপচিত্র। কখনও কখনও নদীর অবয়বেই দেখতে চেয়েছেন বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য আর পৌরাণিক গাথাকেও। যেমন: প্রথম কাব্যের ‘মহানন্দা’ কবিতায় মহানন্দাকে দেবরাজের আশীর্বাদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন; নদীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘অফুরান জলসত্র, অকাতর তুমি আরো অনার্যের প্রেমে।’ তবে এই মহানন্দাকে ব্যবহার করেই কেউ মঙ্গলসাধন করেছেন, কেউ অমঙ্গল। কবির ভাষায় :

স্রোতে বেয়ে লক্ষী আসে, গড়ে ওঠে স্বপ্নের শহর

গৌড়পতি সুলতান নবাব ইংরেজ

কেউ রচে রাজ্য, কেউ ছারখার এনেছে কহর

বর্ণহীনা, তুমি দিলে জল পাতে অবাধ অভেদ !

মহানন্দা কবির অন্যতম প্রিয় একটি নাম। এই মহানন্দা এখানেই কিন্তু কবিকে ছাড়েনি, দ্বিতীয় কাব্যের নামই দিয়েছেন, ‘মহানন্দা এক সোনালি নদীর নাম’। নাম কবিতাতে কেবল মহানন্দা নদীর ইতিহাস-ঐতিহ্যই তুলে ধরেননি, প্রকাশ করেছেন মহানন্দাতীরবর্তী জনপদের স্বর্গীয় সৌন্দর্য আর বিজয়গাথাও।

বাইনোকুলারে আমার চোখ- এপারে রেহাইচর-

ওপারে মহারাজপুর-চকলামপুরের আম্রকানন,

থোকা থোকা আম- ল্যাংড়া ক্ষীরসাপাত মোহনভোগ

স্বর্গীয় লোভের মতো ঝুলে আছে হাতের নাগালে,

নাকের ডগায়; রসনায় জল এসে যায়। আর ছায়া।

আর প্রকৃতির কিন্নরি কোকিল শ্যামার গান, খঞ্জনার নাচ।

মাঝখানে বয়ে চলে মহানন্দা- সর্পিল অলকানন্দা বরেন্দ্রীর।

ও বাতাস ! অক্সিজেন ভরে আসে বুক। আহা ! আমের ট্রাকে

যদি তার নেয়া যেত কিছুটাও রুগ্নতার রাজধানী ঢাকায় !

জান্নাত-স্বর্গ-হেভেন ! কী আর বেশি পাবেন মহাগ্রন্থসমূহে ?

মহান্দার সূত্র ধরেই এসেছে ঐতিহাসিক বারঘরিয়ার ঘাটের কথা, তুর্কি সুলতানদের কথা, সোনামসজিদের কথা, ইংরেজদের কথা এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৭১-এর বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের আত্মদান ও স্বাধীনতার দৃপ্ত আগমনের বারতা। শেষ স্তবকে একটু আফশোসের সুরেই কবি বলেছেন, ‘আমাদের একজন অদ্বৈতমল্ল নেই; থাকলে আমরাও / পেতাম : কালের স্রোতে মহানন্দা এক সোনালি নদীর নাম।’।  কিন্তু অদ্বৈতকে না পেলেও কবির কাছে এই নদী যে স্বর্গের সুধাবাহী তা অনুমান করা যায় ‘পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি’ কাব্যের ‘পিপাসার জল’ কবিতায় যখন তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়-জঙ্গল পেরিয়ের রাখালদাশ পেয়েছিলো / স্রোতেলা শ্রাবণ; / জনারণ্য ভেঙে আমিও পেয়েছি / স্বর্গ হতে নেমে আসা নদী।’

কেবল মহানন্দাই নয়, অন্য অনেক নদী, বিশেষত উত্তরবঙ্গে প্রবাহিত কয়েকটি নদী আমিনুল ইসলামের কবিতার প্রতক্ষ্যে-অপ্রত্যক্ষে সদাস্রোতস্বিনী হয়ে বিরাজমান। করবেই বা না ক্যানো ? ‘পদ্মা-মহানন্দা-পাগলা-পাঙ্গাশমারী বিধৌত চাঁপাইনবাবগঞ্জের পলিসমৃদ্ধ চরাঞ্চলে’ জন্ম নেওয়া ‘বৃষ্টি ও জলের অক্লান্ত ভক্ত’, ভরাবর্ষায় তরঙ্গায়িত নদীর বুকে গাঙচিলের মতো ঝাঁপ দেওয়া কবির কাছে, সেটাই যে স্বাভাবিক। তাছাড়া কবি নিজেই তো বলেছেন ‘যে কোনো অর্থেই আমি জলের সন্তান- কোনো জনমে জলদাস ছিলাম কি না জানি না। নদী আমার জন্মদাত্রী থেকে খেলার সাথি হয়ে প্রথম যৌবনের প্রেমিকার স্থান দখল করে।’ (আমার কবিতা : কাছের কেন্দ্র- দূরের পরিধি)। কখনও জন্মদাত্রী, কখনও প্রেমিকা হয়ে ওঠা নদীদের গল্প বলা যে আমিনুলের অত্যন্ত প্রিয় একটি বিষয়, নদীর কথা বলে তিনি যে ক্লান্তি বোধ করেন না, তা বোঝা যায় ‘শেষ হেমন্তের জোছনা’ কাব্যের ‘নদীর গল্প’, ‘নদী ও খালের গল্প’, ‘নদী-এক’, ‘নদী- দুই’, ‘নদী- তিন’, ‘নদী- চার’... কবিতাগুলো। ‘নদীর গল্প’ কবিতায় নদীর গতিপথ নিয়ে নিজস্ব বয়ানে তৈরি করতে চেয়েছেন এক রোম্যান্টিক আখ্যান :

আমাদের পাড়ায় বেড়ে উঠেছিলো দুটি নদী; গ্রামবাসীরা আদর করে / নাম রেখেছিলো পদ্মা যমুনা। কানামাছি খেলতে খেলতে কখন যে / তারা বউ বউ শিখেছিলো, পড়াশি বৃক্ষলতা ছাড়া আর কেউ তা লক্ষ / করেনি। কোনো এক শুক্লাতিথিতে জোছনার পরী এসে চিরকুট দিয়ে / গেলে শুরু হয় সম্মিলিত সমুদ্রগামিতা। পদ্মা গান আর যমুনার নাচে / মেতে ওঠে বাতাস; ঝড়ের রাতে তারা মিথুনরত পায়রা হয়ে যায়।...

‘নদী ও খালের গল্প’তে অবশ্য নদীর স্বাভাবিক যৌবনদীপ্ততা নয়, নগুরে সভ্যতার কষাঘাতে জর্জরিত নদীর যন্ত্রণাকাতর দুর্দিনকে তুলে ধরবার চেষ্টা করেছেন কবি। সেখানে ‘বৃদ্ধার স্তনের উপমায় / ফাল্গুনের সব নদী; / শুধু  তোমার চুল জড়িয়ে / শ্রাবণের এক যমুনা।’ নদীমাতৃক বাংলাদেশে এধরনের দৃশ্য সহ্য করা নদীপ্রিয় কবির জন্যে সত্যিই কষ্টকর। তবে রাজধানী বা বড়ো শহরের মনুষ্যবর্জ বহনকারী অর্ধমৃত নদীরা কবির আরাধ্য নয়, বঙ্গপল্লির কোলে বয়ে চলা রূপবতী ললনা-নদীই কবি আমিনুল ইসলামের কাম্য। তিতাসের মতো কোনো নদী যাকে কলের গান শুনিয়ে যায়; দক্ষিণের কোনো একটি নদী যার স্বপ্নের উঠোনে ঢেউয়ের আঁচল বাড়িয়ে দেয়; শৈশবের নদীটি যার জন্যে সঙ্গোপনে সন্ধ্যাজল নিয়ে আসে- সেই আমিনুল তো নদীর প্রতি অভিমানে বলতেই পারেন:

ফাগুনে রাঙাবে না অথচ শ্রাবণে ভাসাবে;

ও আমার জন্মসখা নদী,

প্রাপ্তবয়স্ক পাঠশালায় এ ক্যামন ভালোবাসার ব্যাকরণ !

সত্যিই তাই। বেশ কিছু বছর ধরে আমাদের উত্তরের নদীগুলো ফাল্গুন থেকে শুরু করে গ্রীষ্মমৌসুমে একেবারে শুষ্ক। আবার বর্ষামৌসুমে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এই নদীগুলোর জন্ম যে উজানে, তার গতিপথ অনেকটা ভারতদ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ফারাক্কা বাঁধের স্লুইচগেইটগুলো তারা গ্রীষ্মমৌসুমের অধিকাংশ সময়েই বন্ধ রাখে। ফলে বহমান জলের অভাবে শুকিয়ে যায় বাংলার নদীগুলো। আবার বর্ষামৌসুমে যখন এমনিতেই জল ভরে যায় চারদিকে, তখন বাঁধের দরজাগুলো খুলে দিলে দু’কুল প্লাবিত হয়ে ভেসে যায় নদীতীরবর্তী বিস্তীর্ণ জনপদ। বৃষ্টির জলের সাথে পাহাড়ি ঢলের মিশেলে যে ভয়াবহ স্রোতের সৃষ্টি হয়, তার তীব্র ভাঙনের মুখে মুহূর্তেই বিলীন হতে পারে ঘর-বাড়ি-স্কুল-কলেজসহ যে কোনো স্থাপনা। এই স্রোতের ভয়ঙ্কররূপের একটি চিত্র পাওয়া যায়, ‘কুয়াশার বর্ণমালা’ কাব্যের ‘স্রোত ও ঢেউ- এক’ নামের কবিতায় : ‘সর্পিল স্রোতে ভেসে যাচ্ছে / শেওলা-কচুরি-শাপলা / ভেসে যাচ্ছে জীর্ণশীর্ণ খড়কুটো / ভেসে যাচ্ছে অগলিত আধাগলিত লাশ / ভেসে যাচ্ছে স্বর্ণসূত্র রোদ / ভেসে যাচ্ছে মসলিন জোছনা / ভেসে যাচ্ছে সুলতানী বজরা / ভেসে যাচ্ছে মরণজয়ী কলার মান্দাস / ভেসে যাচ্ছে মাঝিহীন ধুলু মাঝির নাও / ভেসে যাচ্ছে সুজনের তালপাতার বাঁশি / ভেসে যাচ্ছে নুসাইবাবার তালপাতার ঘর / ভেসে যাচ্ছে নির্বাচনি নৌকা / ভেসে যাচ্ছে পাড়ভাঙা মাটি / ভেসে যাচ্ছে নদীমাতৃক শপথের লাশ।’ এবং এভাবে, এই ভাসমান স্রোতে; এই নদীগর্ভেই কবি আমিনুলও হারিয়েছেন পৈত্রিক ভিটে-মাটি ও জমিজমা। জন্মগ্রাম টিকলির চরসহ আশে-পাশের চার-পাঁচটি গ্রামকে নিশ্চিহ্ন হতে দেখেছেন। ভিটেমাটিহারা শেকড়চ্যুতির যন্ত্রণা কবিকে স্বাভাবিকভাবেই খুব পীড়িত করে। 

কেবল উত্তরবঙ্গের নদীসমূহ নয়, দক্ষিণবাংলা তথা সারা বাংলাদেশের যেখানেই কবি গেছেন, সেখানকার নদীই তাকে আকৃষ্ট করেছে। এবং এগুলোর অধিকাংশ নদীই কোনো না কোনো কবিতার কোনো না কোনো পঙক্তিনির্মাণে; শব্দরূপ বিনির্মাণে পাথেয় হয়ে উঠেছে। বরিশাল অঞ্চলের কীর্তনখোলা, আড়িয়াল খাঁ; যশোর-সাতক্ষীরা অঞ্চলের কপোতাক্ষ প্রভৃতি নদীও আমিনুলের কবিতার অন্যতম প্রিয় অনুষঙ্গ। কীর্তনখোলাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘তোমার জোয়ারের জলে উঠে আসে / আমার দুচোখের গলে যাওয়া নুন / তোমার ভাটার স্রোতে বেসে যায় / আমার ক্লান্তিময় ভুলে থাকা সময়।’ (কীর্তনখোলার ঢেউ / জলচিঠি নীল স্বপ্নের দুয়ার’)। একই কবিতাতেই আবার কান পেতে থেকেছেন আড়িয়াল খাঁর বুকে। কপোতাক্ষকে ঠাঁই দিয়েছেন হৃদয়ের পরম নৈকট্যে:

ও কপোতাক্ষ, ও আমার প্রত্নপ্রিয়জন ! আজও এই কানে বাজে

নিষিদ্ধ ডাকের পরকীয়া অনুবাদ। রূপ পাল্টিয়ে আজো যে ডাকো,

বাতাসের সেলফোনে আজো যে পাঠাও স্রোতের আমন্ত্রণ, ঢেউয়ের

দাওয়াত- , ভিজে উঠি আমি। আমি তো যেতেই চাই, যেতে বসি

আর সে এক অদ্ভূত সাঁঝের স্মৃতি এসে দুহাতে জড়িয়ে ধরে কোমর।

(কপোতাক্ষ: সে এক হাফ-সাঁতারের স্মৃতি / জোছনার রাত বেদনার বেহালা)

তবে আমিনুল ইসলামের কবিতায় নদী সবসময়ই কেবল নদী হয়ে থাকেনি। কখনও কখনও নদী তার সাধারণ রূপ থেকে উত্তোরিত হয়ে ভিন্ন প্রতীকে রূপায়িত হয়েছে। স্বাভাবিক অর্থের অতিরিক্ত ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছেন কবি। মাঝে-মধ্যেই নদী হয়ে উঠেছে প্রণয়েরই রূপ; প্রেম জাগানিয়া আবাহন। কখনওবা কবিভাষ্যে নদীর রোম্যান্টিক আবহটা অনুভব্য হয়ে ওঠে:

নতুন শতাব্দির অন্তরে কালো ধোঁয়া

আর মৌসুমের মরুকরণ দেখে

তোমাকে নদী হতে বলেছিলাম;

তুমি শ্রাবণ-ঢেউয়ের ভাঁজ দেখালে

আমার অস্তিত্বে সাতপুরুষের সাঁতারের পোশাক উঠেছিল।

(নদী অথবা চাঁদ / কুয়াশার বর্ণমালা)

কিংবা ‘মন অথবা মোহনা’ কবিতায় :

জানাশোনা দুটি নদী রবীন্দ্রসঙ্গীতের মতো ঘুমিয়ে পড়েছিল

মোহনারঙের এক জলজ ভূগোলে;

নদীর কথা লিখতে লিখতে কবি নিজেই বুঝি নদী ! নদীর ছবি আঁকতে আঁকতে কবি নিজেই যেন ছবি ! ‘পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি’ বইয়ের ‘একটি নদীর আত্মকথা’ কবিতাপাঠে এভাবনাই সত্য হয়ে ওঠে :

আমি শ্রাবণের গঙ্গা নই,

আমি ভাদরের মেঘনা নই,

আষাঢ়ের যমুনাও নই আমি;

হতে পারি আমি ইছামতি,

হয়তো হতে পারি পুনর্ভবা

সত্য যে আমি একটি নদী।

নদীর জীবনে যেমন নানা তরঙ্গ থাকে, তরঙ্গীনতা থাকে, সাফল্য-ব্যর্থতা থাকে; কবির জীবনেও তাই থাকে। অধিকাংশ মানুষের জীবনেই সেটাই থাকা স্বাভাবিক। সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে যে জীবন তাকে শেষ পর্যন্ত নদীজীবনের প্রতীকে তুলে ধরেছেন আমিনুল ইসলাম। আর হ্যাঁ, নদীপ্রেম কিন্তু নিজের শেকড়ের প্রতিই ভালোবাসা। দেশের প্রতি, জন্মমৃত্তিকার প্রতি, আপন অস্তিত্বের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে নদী নিয়ে এভাবে লেখা যায় না।

৪.

কেবল নদী বা নদীবাহিত পল্লি অঞ্চলের চলমান জীবনপ্রবাহ নয়, ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী অনেক স্থান ও স্থাপত্য নিদর্শন, এমনকি পৌরাণিক কাহিনিও আমিনুলের কবিতায় অনন্য মর্যাদায় জায়গা করে নিয়েছে। বগুড়ার মহাস্থানগড়ের ঐতিহ্যবাহী ‘বেহুলার ভিটা’কে নিয়ে লিখেছেন, ‘মহাকালের বুকে ধূসর আঁচলে আবৃত স্তন/ স্তন হতে চুয়ে নামা দুধ— / ঝরনার মতো মিশে যায়— / কালের করতোয়ায় / সেই জল পান করে দুইতীরে বেড়ে ওঠে শিশুরা / তাদের পরনে ইস্কুল-ড্রেসের মতো ভালোবাসার ইউনিফর্ম।’ অতীত-বর্তমানের এক সেতুবন্ধ যেন। একই কাব্যে, পরের কবিতাতেই সময়ের নদীর শুষ্ক বাস্তবতাকে কিঞ্চিৎ বিদ্রুপ করে লেখেন, ‘হাজার বছর ভাসা প্রত্নরাঙা দিন লখিন্দরের লাশ / ডুবে যায়— / গাঙুড়ের জল ছেড়ে / প্রযোজিত ফোরকালার বালুর মোহনায়; / হায় প্রযোজনা ! হায় বালুর বাহার !’ (বেহুলা বিশ্ববিদ্যালয় / জলচিঠি নীলস্বপ্নের দুয়ার)। তবে বেহুলাকে নিয়ে অসামান্য পঙ্ক্তিগুচ্ছের সন্ধান মেলে ‘পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি’ কাব্যের নামকবিতার দীর্ঘ শরীরের ‘ছয়’ নম্বর পর্বে :

বেহুলার ভিটা— সর্বজয়ী প্রণয়ের প্রত্নরঙা বিস্ময়-স্মারক; সময়ের মতো

ইতিহাসের হাত ধরে উত্তরে সরে গেছে নদী; কলার মান্দাস নেই;

নেই কোনো সপ্তডিঙা; মানুষের মুখে মুখে তবু সেই প্রেমগাথা বেঁচে

আছে আজো— জননীর বুকে যেভাবে বেঁচে থাকে হারানো-সন্তান।

শুধু বেহুলার ভিটা নয়, ‘পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি’ সিরিজের দীর্ঘ কবিতাটিতে যে ৯টি পর্ব আছে, তার প্রত্যেকটিতেই বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিবিধ সত্য ও কিংবদন্তিকে অনুসরণ করেই। ঐতিহাসিক স্থাপনা সোনা মসজিদকে নিয়ে লিখেছেন, ‘এই সেই সোনা মসজিদ— আমাদের পূর্বজদের প্রেম ও ঘামের সাক্ষী; / ঘূণে-পোকার ঈর্ষা জাগিয়ে তাকে কাটে দিনরাত— কালের করাত আর / ছদ্মবেশী ইঁদুর;’

রানী ভবানীনির্মিত বিখ্যাত নাটোরের রাজপ্রাসাদকে নিয়ে লিখতে গিয়ে তুলে ধরেছেন রানী ভবানীর মাতৃময়ী রূপকে,  দীঘির কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন তাঁর দৃঢ়তা ও দারিদ্র্যবান্ধব প্রকৃতিকে : ‘এই সেই দীঘি— এই সেই ঘাট— এসো না হয় বসি / কিছুক্ষণ; এই ঘাটে বসে কতদিন ভেবেছেন রানী— কী করে / রুখতে হবে সূর্যগ্রাসী আগ্রাসন, কিভাবে উঠবে বেঁচে এদেশের / চাষী।’

নাটোর প্রসঙ্গে বনলতা সেনের কিংবদন্তিকেও তুলে ধরতে ভুল করেননি। ঐতিহাসিক বা বিখ্যাত স্থানগুলো অনেকেই ভ্রমণ করেন, কিন্তু কবির ভ্রমণ আর সাধারণ মানুষের ভ্রমণ এক নয়। কবি তো কেবল দেখেন না, অন্তর্দর্শন করেন। দৃষ্টিগ্রাহ্য চিত্রের ভেতরে অদৃশ্য এক বা একাধিক চিত্রকল্প উপলব্ধি করেন। আপন অস্তিত্বের ভেতরে যে নান্দনিক শিল্প-দর্শনের অস্তিত্ব অনুভব করেন, তা কবিতায় রূপায়িত করবার চেষ্টা করেন। সরকারি প্রশাসনে চাকরির সুবাদে প্রায় সমগ্র বাংলাদেশ ভ্রমণের সুযোগ পাওয়া আমিনুল তাঁর কবিতায় বিভিন্ন ঐতিহাসিক-ঐতিহ্যিক ও নান্দনিক স্থানসমূহকে কাব্যিক সুষমা দানের চেষ্টা করেছেন। তিনি নিজেই বলেছেন, ‘আমি প্রায় সমগ্র বাংলাদেশ দেখেছি। আমি সোনা মসজিদ, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, মহাস্থানগড়, বেহুলার ভিটা, রামসাগর, নীলসাগর, মহীপালের দীঘি, দিবর দীঘি, কুসুম্ব মসজিদ, ভিমের পান্টি, কান্তজীর মন্দির, উয়ারি-বটেশ্বর, ময়নামতি-শালবন বিহার, শাহজালালের মাজার, জীবনানন্দ দাশের জন্মভিটা পতিসর-শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিস্থান, সোনারগাঁও, বিভিন্ন জমিদার/রাজবাড়ি, পার্বত্য চট্রগ্রাম অঞ্চল এবং খাল-বিল-নদী-সমুদ্র দেখেছি।’ (আমার কবিতা : কাছের কেন্দ্র— দূরের পরিধি)।

কর্মের সুবাদে এই দেখা, আমিনুলের কবিতাকে নানাভাবে পুষ্ট করেছে। ঐতিহাসিক স্থানগুলো পেয়েছে কবির নিজস্ব অনুভূতিপ্রসূত তাৎপর্য। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার কেবল ঐতিহাসিক ও নান্দনিক জায়গা নয়, এটি আমাদের এই ভূখণ্ডের সভ্যতার প্রাচীনত্ব, গভীরত্ব ও উৎকর্ষতার সাক্ষ্য বহন করে। পাহাড়পুর নিয়ে আমিনুল লেখেন, ‘পাহাড় নেই,/ পর্বত নেই; আছে শুধু পাহাড়সমান অতীতের সোনালি গৌরব। / এখানে এলে ঘাড় হতে নেমে যায় বোঝ; যখন দিনের আসনে / অন্ধকারের পা, তখন এখানেই জ্বলে উঠেছিল নাক্ষত্রিক দীপের / মশাল; বাতিওয়ালার দল সেই মশাল হাতে পাড়ি দিয়েছিল / অসীমিত জল— বক্ষে নিয়ে উর্বরতার উপাদান, যেভাবে মেঘমালা / ছুটে যায় দেশ-দেশান্তর।’ ‘নাক্ষত্রিক দীপের মশাল’, ‘বাতিওয়ালার দল’... এই শব্দগুলো আমাদের জ্ঞানস্পৃহার সুদীর্ঘ প্রাতিষ্ঠানিক ইতিহাসকে ইঙ্গিত করে। পু-্রনগরকে বলেছেন— ‘সভ্যতার মাতৃঘর’; উয়ারী-বটেশ্বর সম্পর্কে বলেছেন, ‘একান্ত সঞ্চয়টুকু দুঃখমূল হৃদয়ের মতো চেপে / রাখে মৃত্তিকাও; আজকাল শোনা যায় নাম— উয়ারী বটেশ্বর; হায় ! / আসলে তো উয়ারী ও বটেশ্বর- ঘনপ্রতিবেশি দুটি সহোদরা গ্রাম !’

এরপর ‘পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি’র ৮ম পর্বে দেখি :

উয়ারী বটেশ্বর থেকে হাঁটতে হাঁটতে আমরা এসেছি ময়নামতির বাড়ি;

কে ছিল ময়না আর কে ছিল মতি— কালের পাহারাদার যাদুঘরের পায়ে

মাথা ঠুকেও তার জবাব পাবে না। তার চেয়ে এই দ্যাখো— আধুনিক পথের

পাশে শুয়ে আছে সেদিনের সূর্য।

রবীন্দ্রস্মৃতিধন্য পতিসরের কাচাড়িবাড়ি দর্শন করে মহান কবিকে স্মরণ করে লিখেছেন, ‘যখন অন্ধকারে খুঁড়িয়ে

হাঁটছিল সবাই / হাঁটা মানে হোঁচট, হোঁচট মানেই হাঁটা, / তখন তুমি এলে আলোর মহোৎসব’। আবার কীসের যেন অভাব অনুভব করে আফশোস করেছেন, ‘কাচারির বাইরে- / ভেতরে, দীঘির পাড়ে— নাগরের কিনারায় / কোথাও নেই সেই মহান প্রাণের চিহ্ন’। রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-জীবনানন্দ’র মতো মহান কবিদের পাশাপাশি শায়েস্তা খান-ঈশাখান-তিতুমীর প্রভৃতি ঐতিহাসিক চরিত্রবর্গও মর্যাদার সাথে ঠাঁই করে নিয়েছেন আমিনুলের পঙক্তিমালায়।

নিজের দেশ ও জাতির সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ভেতরেই আবদ্ধ থাকেননি আমিনুল ইসলাম। সশরীরে তিনি যখন বিদেশ ভ্রমণ করেছেন, তখন তো বটেই; আপন দেশে থেকেও অনেক পঙক্তিতে ঠাঁই দিয়েছেন অন্য দেশের বিষয় ও চরিত্রসমূহকে। এই দেওয়াটা বিদেশে থাকা অবস্থাতে একরকম— খানিকটা আনন্দ ও সৌন্দর্যমুগ্ধতা থেকে; স্বদেশে থেকে তা অনেকটা প্রয়োজনমাফিক, মানবতাবোধের জায়গা থেকে কবিতার দায়বদ্ধতা। এরকম দায়বদ্ধতা থেকেই ‘স্বপ্নের হালখাতা’ কাব্যের ‘আঁধারের জানালায়’ কবিতায় লেখেন : ‘পেন্টাগনে ক্রিয়াশীল আঁধারের হাত / ডেভিলের ওয়ার্কশপ চালু পুরোদমে / আলোকের ছাদে হবে তামস আঘাত / আণবিক মসলার ঘ্রাণ ওঠে জমে।’ বলেন, ‘গুয়ান্তানামোয় থির সূর্যহীন রাতে / সভ্যতা কঁকিয়ে ওঠে বর্বর আঁধারে’। পৃথিবীব্যাপীই যুদ্ধ চলছে নিরন্তর। মারণাস্ত্রময় বিশ্বে আলো নয়, অন্ধকারই যে গন্তব্য— সেকথা বলবার অপেক্ষা রাখে না। মানবতাবিরোধী আঁধারের  সর্বগ্রাসী রূপের দিকে ইঙ্গিত করে আমিনুল ইসলাম বলেন :

আঁধারের জাল ফেলে জেগে আছে রাত

পৃথিবী এখন শুধু মহা এক গুহা

আধোরাত আলো দিয়ে মরে গেছে চাঁদ

লাশ নিয়ে বসে আছে গুটিকয় চুহা।

অন্ধকারের অবিরল পদধ্বনিতে ঢেকে যাচ্ছে ভালোবাসার কণ্ঠস্বর। মনুষ্যত্ববোধের যেখানে কোনো মূল্য দেওয়া হয় না, সেখানে ভালোবেসে কী লাভ ? ভালোবাসা দিবসেই বা কার কী আসে যায় ? হতাশামগ্ন ক্ষুব্ধতায় কবি লেখেন : ‘ভ্যালেন্টাইন ডে এলে রোমান্টিকতায় উদ্বেলিত হয়ে ওঠে / প্রাণহীন সেলফোন ইনবক্স; কিন্তু কি হবে উদযাপন করে / বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ? ধরো, হত্যায় আসক্ত / বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যদি কখনো কোনো নারীর / সুবোধ প্রেমিক হয়েও যায়, তাতে করে কি হ্রাস পাবে / ইসরাইলী গণতন্ত্রের রক্তমূল লিপ্সাকামিতা? আর যারা/ শান্তির বসন পরে আগুন দিচ্ছে জননীর স্তনে-মুখ দিয়ে / ঘুমিয়ে পড়া সোনামণিদের খাটে আর মুখে বলছে— জগতের সকল প্রাণী শান্তি লাভ করুক, তাদের সেই গেরুয়া উচ্চারণ এতটুকু শান্তি আনে কি অগ্নিদগ্ধ / প্রাণে ! অথচ সেখানেও যুবতী ভালোবাসে তার যুবককে; / যুবক ভালোবেসে জড়িয়ে ধরে তার অনুরক্ত যুবতীর উতলা কোমর !’ (ভালোবেসে কি হবে ?)।

এই কবিতাটি ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত ‘আমার ভালোবাসা তোমার সেভিংস একাউন্ট’ কাব্যের। এখানে ইসরাইল ছাড়াও যে মিয়ানমারের রোহিঙ্গানির্যাতনকারী অত্যাচারী রূপের কথা বলা হয়েছে তা ‘শান্তির বসন’, ‘গেরুয়া উচ্চারণ’... এসব উল্লেখে বোঝা যায়। যদিও এই মুহূর্তে ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা নিধনে মিয়ানমারের অমানবিকতা আমাদেরকে প্রবলভাবে নাড়া দিচ্ছে, তথাপি তাদের এই নির্যতন কার্যাদি যে নতুন নয়, আগেও বার বার চলেছে, সেকথাটা আরেকবার স্মরণে আসে উক্ত পঙক্তিপাঠে। একই কাব্যের ‘বিধ্বস্ত ভুগোলের পাখি’ কবিতাটিতেও বিশ্বব্যাপী মানবতা লঙ্ঘনের চিত্র উদ্ধৃত হয়েছে। একজন মানবতাবাদী কবি হিসেবে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনসহ অন্যান্য মানবতাবিরোধী কর্মতৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। বিপর্যস্ত জীবনের প্রতি প্রকাশ করেছেন গভীর সমবেদনা।

৫.

সকল সময়ই যে ইতিহাস-ঐতিহ্য বা মানবতার মতো তলস্পর্শী বিষয়াদি নিয়েই ব্যস্ত থেকেছেন, তা নয়— সাধারণ ভালোলাগা বা রূপমুগ্ধতা থেকেও লিখেছেন প্রেমের পঙক্তিগুচ্ছ। যেমন : তুরস্ক ভ্রমণকালে কোনো এক তুর্কি যুবতীর প্রতি কী পরিমাণ মুগ্ধ হয়েছিলেন, তার নমুনা দ্যাখা যায় ‘তুর্কি মেয়ের জন্য’ কবিতায়। নিজের যৌবনোত্তর বয়সে এসে নতুন করে যেন প্রণয়-জোয়ারে ভেসে যেতে চাইলেন কবি। লিখলেন,

তোমার ছোঁয়ায় জেগে উঠলো প্রত্যাবৃত্ত যৌবনের

প্রমত্ত প্রবাহ; এখন আমার নবায়িত যৌবন পাহাড়ী বন্যার মতো ভিজিয়ে

দিতে পারে আঙুরের ক্ষেত ভেবে তোমার যৌবনের আনাচ-কানাচ;

বহুব্যবহৃত তুর্কি ঠোঁটে আমার বঙ্গীয় ঠোঁটে আমার বঙ্গীয় ঠোঁট এঁকে দিতে পারে

ওয়াটার-কালার এমবুশ কিস;

ইস্তাম্বুলে গিয়ে একজন সাবিহার প্রতি প্রগাঢ় প্রেমবোধে রোমান্সিত হয়ে লিখেছেন, ‘তোমার সোনালি আপেলের মতো গাল, ডালিমদানার মতো ঠোঁট- শীতল / নাকি উষ্ণ তা পরখ করা হয়নি এখনও- যদিও আমি প্রস্তুতি নিয়েই এসেছি। / দ্যাখো, দড়িবাঁধা বাছুরের মতো অস্থির আমার বাসনা।’ (সাবিহা- তোমার কাছে)। এরকম আরও আছে ‘ইস্তাম্বুলের ই-মেইল’ কবিতাতেও; খুঁজলে অন্য কবিতাতেও মিলতে পারে বিদেশিনীর প্রতি এরূপ মোহমুগ্ধতা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনে হয়, এই মুগ্ধতার প্রায় সবই বুঝি কবিতার জন্যে, প্রেমের পঙক্তি লিখে নিজেই তৃপ্ত হওয়ার জন্যে। আর হ্যাঁ, এসব বিদেশিনী বার বিদেশমুগ্ধতার মাঝেও প্রবলভাবে জেগে থাকে স্বদেশ ও স্বদেশের প্রিয় অনুষঙ্গগুলো। যেমন : ‘আমার অধরে হার-মানানো ল্যাংড়া আমের সঘন স্বাদ- / যা সহসাই উপচে তুলতে পারে— তোমার প্রাণের পেয়ালা’ ; ‘হে গাজীর দেশের মেয়ে— আমি জানি তুমি আমার সোনার বাংলা হবে না’ (তুর্কি মেয়ের জন্য)। অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় সেখানকার ব্লু মাউন্টেইনে একজন আদিবাসীর বাঁশি শুনে মুগ্ধ হয়েছেন, কিন্তু সেখানেও বুকের ভেতরে জেগে আছে বাংলাদেশ :

আমরা ঘুরছি মালয় হয়ে মেলবোর্ন-সিডনি-সুমাত্রা

আমাদের বুকে পদ্মাপাড়ের কয়েকগুচ্ছ বরেন্দ্রদিন।

নীলপর্বতের বাঁশি বাজায় সাইমন নামের আদিবাসী

চোখমুখে তার খুঁজে পাওয়া যায় আমাদের চোখমুখ

মইষাল ভাইয়ের এমন বাঁশি আমরাও ভালোবাসি

সাইমন আজ খুলে দিলো বন্ধ-থাকা সেই উৎসমুখ।

(ব্লু মাউন্টেইনে দাঁড়িয়ে / পথ বেঁধে দিলো বন্ধনহীন গ্রন্থি)

কবি পৃথিবীর যেখানেই থাকুন, যার কথাই লিখুন বুকের ভেতরে থাকবে জন্মমাটি। মাতৃভূমি আর মাতৃভাষাই একজন লেখকের সবচাইতে বড়ো ভালোবাসার জায়গা। আমিনুলের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দেশেই যাপন করে চলেছেন জীবন; মাঝে মাঝে সরকারি কিংবা দরকারি কাজের সুবাদে যেটুকু বিদেশে গেছেন, কবিতায় তার প্রভাব রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে যেখানে থাকুন আর যাই বলুন, সবই আসলে মানুষ হিসেবে, বাঙালি হিসেবে নিজেকে জানার, নিজের শেকড়কে অনুসন্ধান করবার প্রচেষ্টা। সেই প্রচেষ্টা করতে গিয়ে যেমন সাম্প্রদায়িকতামুক্ত এক অনিন্দ্য বাংলাদেশের ছবি এঁকেছেন তেমনি হানাহানিমুক্ত এক মানবিক পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেন।

৬.

আমিনুল ইসলাম ছন্দ এবং ছন্দহীনতা— উভয়প্রয়াসেই কবিতা লিখেছেন। ছন্দসঞ্চালনায় মাঝে মাঝে মুন্সিয়ানার ছায়া দেখা গেলেও আমিনুল ইসলামের কবিতা বক্তব্যপ্রধান; বলা যেতে পারে বক্তব্যেরই একচ্ছত্র আধিপত্য তাঁর কবিতারাজ্যের প্রায় সর্বত্র। বক্তব্য মানেই হচ্ছে বিষয়; বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে অন্যান্য অনুষঙ্গকে কিছুটা অবদমিত রাখা। কিন্তু একেবারেই কি তা সম্ভব ? না। না বলেই আমিনুলের বিস্তৃত বক্তব্যপ্রধান কবিতারাজ্যে মাঝে মাঝেই ঝলসে ওঠে অনন্য কিছু উপমা-চিত্রকল্পাদিও। কিন্তু সেই বিষয়ে এখন আলোকপাত করতে চাই না, আমাদের আপাত আলোচ্য তাঁর বিষয়; বিষয়ের ভেতরে অন্যতর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানবিক বোধসম্পন্ন একজন কবির বিষয়। বিষয়ের বিস্তৃতি, যাকে কবির ভূগোলও বলা যায়। সর্বজনীন বোধসম্পন্ন একজন কবির ভূগোল কেবল তাঁর আপন এলাকা ও নিজস্ব দেশ-কালের সীমানায় আবদ্ধ থাকে না। স্বদেশ ও স্বজাতি থেকে শুরু করে সমগ্র বিশ্ব ও বিশ্বের মানবজাতিই তাঁর কবিতার মানচিত্রভুক্ত হয়। আমিনুল ইসলামের ক্ষেত্রেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি; বিশ্বজুড়েই কবিতার বিষয়বস্তু খুঁজেছেন তিনি। কিন্তু তারপরও নিজের স্বাজাত্যবোধ ও স্বাদেশিকতাকে ভোলেননি, বরং সমগ্র পৃথিবী খুঁজে বেড়িয়েও চূড়ান্ত বিচারে তিনি আসলে বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিসত্তা তথা আপন অস্তিত্বের শেকড়েই নিজেকে প্রোথিত রাখবার চেষ্টা করেছেন।

সর্বাধিক পঠিত
  1. গল্প পড়ার গল্প: সমকালকে চিত্রিত করেন দিনেশচন্দ্র রায়
  2. গল্প পড়ার গল্প: বিরল শিল্পী জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী
  3. রবীন্দ্রনাথের আধ্যাত্মিকতা ও সর্বজনীন চেতনা
  4. মহাশ্বেতা দেবী ও তাঁর ‘অরণ্যের অধিকার’
  5. পর্ব ১: আমি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
  6. গল্প পড়ার গল্প: নয়নচারা, কেরায়া ও সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর গল্প
সর্বাধিক পঠিত

গল্প পড়ার গল্প: সমকালকে চিত্রিত করেন দিনেশচন্দ্র রায়

গল্প পড়ার গল্প: বিরল শিল্পী জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী

রবীন্দ্রনাথের আধ্যাত্মিকতা ও সর্বজনীন চেতনা

মহাশ্বেতা দেবী ও তাঁর ‘অরণ্যের অধিকার’

পর্ব ১: আমি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

Follow Us

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman & Managing Director

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +88 02 9143381-5, Fax: +88 02 9143366-7

Browse by Category

  • About NTV
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

Our Newsletter

To stay on top of the ever-changing world of business, subscribe now to our newsletters.

* We hate spam as much as you do

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman & Managing Director

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +88 02 9143381-5, Fax: +88 02 9143366-7

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved