এডনা সেন্ট ভিনসেন্ট মিল্যের কবিতা

Looks like you've blocked notifications!

এডনা সেন্ট ভিনসেন্ট মিল্যে প্রথম পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী নারী। তিনি কবিতায় ও ব্যক্তিজীবনে বিস্ময়কর রকমের সাহসী ও ব্যতিক্রমী ছিলেন। তিনি তাঁর সময়েই প্রকাশ্যে উভলিঙ্গগামী ছিলেন, একাধিক নারী ও বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। তিনি বিয়ে করার সময়ও স্বামীর সঙ্গে এই মতে এসেছিলেন যে, যখন যার সঙ্গে খুশি তার সঙ্গে তিনি সহবাস করতে পারবেন। তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘আ ফিউ ফিগস ফ্রম থ্রিসল’ (১৯২০) নারীর যৌনতাকে বিষয়বস্তু হিসেবে তুলে ধরার জন্য তীব্রভাবে সমালোচিত হয়। তাঁর কবিতার অন্যতম বিষয়বস্তু ছিল পুরুষ চাইলে নারী শরীর ব্যবহার করতে পারবে, কিন্তু তার ওপর অধিকার বা শাসন খাটাতে পারবে না।

এখানে কবি এডনা সেন্ট ভিনসেন্ট মিল্যের কয়েকটি কবিতার অনুবাদ দেওয়া হলো। ভাষান্তর করেছেন মুম রহমান।

প্রথম ডুমুর

মম মোমবাতি দুই প্রান্ত থেকে জ্বলে;

সে পুরো রাত টিকিবে না;

তবু আহ, শত্রুরা মোর, তবু ওহে, বন্ধুরা মোর—

সে বড় মনোরম আলো দেয়।

 

দ্বিতীয় ডুমুর

কঠিন শিলার ওপরে নিরাপদে দাঁড়িয়ে আছে কদাকার বাড়িখানা :

আসুন এবং দেখে যান বালির ওপর বানানো আমার চকচকে প্রাসাদখান!

 

একজন প্রতিবেশীর করা প্রতিকৃতি

তার মেঝে ধোয়ার আগে

কিংবা থালাবাসন ধোয়ার আগে,

যেকোনো দিন তুমি তাকে খুঁজে পাবে

সূর্যের মাঝে তার সৌরোজ্জ্বলতা!

মাঝরাতের অনেক পরে

তার চাবি তালাতে থাকে,

আর তুমি কখনই তার চিমনির ধোঁয়া দেখবে না

দশটা বাজার আগ পর্যন্ত!

সে তার বাগান খুঁড়ে চলে

শাবল আর একটা চামচ দিয়ে,

সে আগাছা নিড়ায় আলসে লেটুসের

চাঁদের আলোর ধারে!

সে কর্মক্ষেত্রে হেঁটে যায়

স্বপ্নের মধ্যে এক নারীর মতো,

সে ভুলে যায় যে সে মাখন ধার নিয়েছিল

আর বিনিময়ে তোমাকে ননী দিয়ে যায়!

তার ঘাসের বাগান তৃণভূমির মতো মনে হয়,

আর সে যদি সে জায়গাকে কাস্তেতে নিড়ানি দেয়

সে মেথি শাকগুলো রেখে দেয়

আর রানি এনিসের জরি ফিতাও রেখে দেয়!

 

পুরুষ হওয়ার অবেচতন ইচ্ছা

আমার অল্প বেদনা আছে,

জন্মের ছোট্ট পাপ আছে,

একটা ঘর পেয়েছিলাম পুরোটা অন্ধকার আর স্যাঁতসেঁতে

আর আমাদের সবাইকে তার মধ্যে বন্দি রাখা হতো;

আর ‘ছোট্ট ব্যথা, কাঁদো’, বলেছিলাম,

‘আর ছোট্ট পাপ, ঈশ্বরের কাছে মৃত্যু প্রার্থনা করো,

আর আমি মেঝেতে শুয়ে থাকি

আর ভাবি আমি কত খারাপই ছিলাম!’

হায়রে ভক্তের পরিকল্পনা—

এর কণা মূল্যও নাই!

যতক্ষণ ওই ঘরে আধার পূর্ণ হয়ে আছে

প্রদীপটি ততক্ষণ জ্বলতে থাকবে!

আমার ছোট্ট বেদনা হয়তো কাঁদবে না,

আমার ছোট্ট পাপ হয়তো ঘুমিয়ে পড়বে—

আমার আত্মাকে বাঁচাতে আমি পারিনি

আমার বিশ্রী মনকে মানাতে পারিনি।

 

তাই আমি ক্রমশ ক্রুব্ধ হই,

আর আমার বইটা তুলে নেই

আর চুলে ফিতা বাঁধি

গমণকালী বালকদের খুশি করতে।

আর, ‘একটা জিনিস যেটাতে কোন অন্যথা নাই

আমি একটা দুষ্ট মেয়ে ছিলাম সন্দেহ নাই।’

আমি বলতাম;

‘কিন্তু আমি যদি দুঃখিত হতে না পারি, কেন,

আমি হয়তো আনন্দিতও হতে পারি!’

 

বৃহস্পতিবার

আর যদি ভালোবাসি তোমাকে বুধবারে,

বেশ, তাতে তোমার কি আসে যায়?

আমি তোমাকে বৃহস্পতিবারে ভালোবাসি না—

এটা অনেকখানি সত্যি।

আর তুমি কেন অভিযোগ করতে আসে

যা আমার দেখার চেয়ে বেশি।

আমি তোমাকে বুধবারে ভালোবাসি—হ্যাঁ—কিন্তু কি

সেটাই কি সব?