রাষ্ট্রীয় সম্মাননা আনন্দের : মুহম্মদ নুরুল হুদা
এ বছর একুশে পদক সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন বাংলা ভাষার অন্যতম কবি, বাঙালি জাতিসত্তার কবি হিসেবে পরিচিত কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা। মেলার নবম দিনে বইমেলায় দেখা হয় তাঁর সাথে। কথা হয় বিভিন্ন বিষয়ে।
প্রশ্ন : একুশে পদক সম্মাননা পাওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন।
উত্তর : তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ।
প্রশ্ন : সম্মাননা পাওয়ার খবর শোনার পরে কেমন লাগছে?
উত্তর : যে কোনো পুরস্কার বা বিষয়টিই আনন্দের। পুরস্কার পেলে ভালো লাগে। মনে হয় কিছু হয়তো করতে পেরেছি, তারই একধরনের স্বীকৃতি হচ্ছে পুরস্কার। আর রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বিষয়টি সত্যিই অনেকটা আনন্দের ও গর্বের।
প্রশ্ন : এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ। আপনাদের সময়ের বইমেলা আর এখনকার বইমেলার মধ্যে কোনো পার্থক্য চোখে পড়ে কি?
উত্তর : আমাদের সময়ের মেলা এত বড় পরিসরে হতো না। এখন পরিসর অনেক বেড়েছে। পরিসর যেমন বেড়েছে, সেই সাথে বেড়েছে হুলুস্থুল। তখন এত হলুস্থুল ছিল না। তখন মেলা প্রাঙ্গণের এক জায়গায় আমরা চা খেতাম, এক জায়গায় সিগারেট খেতে পারতাম, অনেক কিছু করতে পারতাম। তুলকালাম কাণ্ড, চিৎকার করা যেত। বন্ধুদের নিয়ে বেড়ানো যেত। এখন চা খাওয়ার সুযোগটা সীমিত। সিগারেট খাওয়ার সুযোগ নেই। যাই হোক, বইমেলা এখন অনেক নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। একটা সময়ে আমি যখন বাংলা একাডেমিতে ছিলাম, তখন আমিও একসময় মেলায় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করেছি। তবে এবারের মেলার পরিসর বাড়ানোতে অনেকটা ঘুরেফিরে বই কেনার সুযোগ হয়েছে।
প্রশ্ন : মেলার পরিসর হয়তো বেড়েছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে আমাদের প্রকাশনা শিল্প কতদূর এগিয়েছে বলে মনে করেন?
উত্তর : আমাদের প্রকাশনা শিল্প একেবারেই যে কিছু ভালো কাজ করেনি তা বলছি না। তবে এখন সবকিছুতেই বিশ্বায়নের এবং বাণিজ্যের একটা প্রভাব পড়ে গেছে। তাই এখন আর শুধুই সাহিত্যনির্ভর প্রকাশনা নেই। সেই সাথে যুক্ত হয়েছে বাণিজ্যিকভাবে মুনাফা ঘরে তোলার চেষ্টাও। এতে করে হয়তো কেবলই সাহিত্যিক ঘরানার প্রকাশনা দাঁড়াচ্ছে না। এখন অনেক মিডিয়া প্রকাশনা হাউসে পরিণত হয়েছে।
প্রশ্ন : মেলায় কি নিয়মিত আসেন?
উত্তর : এখন আর নিয়মিত মেলায় আসা হয় না। জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছি বাংলা একাডেমিতে। এখানেই ছিল কর্মস্থল। তাই এই জায়গার প্রতি, এই মেলাকে ঘিরে রয়েছে একটি বাড়তি টান, যা প্রায়ই আমাকে অন্যমনস্কভাবে পরিচালিত করে এখানে নিয়ে আসে। এমনও হয়েছে, শাহবাগ থেকে হাঁটতে হাঁটতে মেলা প্রাঙ্গণে চলে এসেছি। অথচ এদিকে আসার কথা ছিল না। এখন বয়স হয়েছে, শরীর মাঝে মাঝে সায় দেয় না। তাই চাইলেও আর আগের মতো বইমেলায় আসা হয় না।