নারীর মৃতদেহকে ভেঙে ছোট করে শেষযাত্রা
হাসপাতালে মারা গেছেন এক নারী। হাসপাতাল থেকে মৃত নারীর বাড়ি বহুদূরের পথ। মৃতদেহটিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সম্বলটুকুও নেই স্বজনদের কাছে। হাসপাতালে অনুরোধ, উপরোধ আর কাকুতি মিনতিতে ফল না হওয়ায় শেষে মৃত ওই নারীকে কাঁধে করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেন স্বজনরা।
মৃত স্ত্রীকে কাঁধে করে বাড়ি বয়ে নিয়ে যাওয়ার একদিন পরেই ভারতের ওড়িষ্যা রাজ্যে ঘটেছে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা। নারীর মৃতদেহকে ভেঙে ছোট করে শেষযাত্রার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে দেখা যায়, উড়িষ্যার বালাসোর জেলার সরো শহরের একটি কমিউনিটি হাসপাতালের বাইরে ওই নারীর মৃতদেহের ওপর উঠে দাঁড়িয়েছেন হাসপাতালেরই এক কর্মচারী। শীর্ণকায় ওই মৃতদেহের বুকের ওপর পায়ের চাপে ভেঙে ফেলেন এই নারীর পাঁজর। এরপর এক হ্যাঁচকা টানে ওই নারীর পায়ের হাড় ভেঙে নিয়ে মৃতদেহটিকে ছোট একটি পুঁটুলিতে পরিণত করেন। এরপর ওই নারীর দুই স্বজন মিলে আকৃতিতে ছোট করে ফেলা ওই দেহটিকে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ঢুকিয়ে নেন। এরপর বাঁশে বেঁধে রাস্তা ধরে হেঁটে চলে যান।
এনডিটিভির অনুসন্ধানে জানা গেছে, মৃতার নাম সালামানি বারিক। ৭৬ বছর বয়সী ওই নারী কয়েকদিন আগে বালাসোরের মাকাইয়া এলাকায় ট্রেন থেকে পড়ে আহত হয়েছিলেন। প্রত্যন্ত ওই এলাকাটি সরো শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রকাশিত খবরে জানা যায়, বিধবা সালামানি বারিকের ছেলে নেই। এক স্বজন জানিয়েছেন, ওই মৃতদেহটিকে বহন করে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তাঁদের কাছে। কারণ মৃতদেহটিকে গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার মতো টাকা নেই তাঁদের কাছে। আর ট্রেনে মৃতদেহটি ওঠানোই যাবে না।
বৃদ্ধা সালামানি বারিকের এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটির মাত্র একদিন আগেই উড়িষ্যার কালাহান্ডির জেলায় ঘটেছিল আরেকটি মর্মন্তুদ ঘটনা। আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাই মৃত স্ত্রীর দেহ কাঁধে নিয়েই প্রকাশ্য রাস্তা ধরে ১৬ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে এসেছিলেন এক স্বামী। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সালামানি বারিকের এই রকম শেষযাত্রা কাঁদিয়েছে অনেককেই।