আফগান হাসপাতালে হামলায় মার্কিন সেনাদের সাজা
আফগানিস্তানের কুন্দুজে এক হাসপাতালে বিমান হামলা চালানোর দায়ে ১৬ জন সেনা সদস্যের বিরুদ্ধের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনী। তবে, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
গত বছরের নভেম্বরে ওই বিমান হামলার সঙ্গে জড়িত সেনা কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আর আজ শুক্রবার ষোলোজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো। এদের মধ্যে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন, বাকিরা বিশেষ অপারেশন বাহিনীর সদস্য বলে জানা যাচ্ছে।
বিবিসি জানায়, গত বছরের ৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক মেডিকেল দাতব্য সংস্থা মেদসঁ সঁ ফ্রতিয়ে বা এমএসএফ পরিচালিত ওই হাসপাতালে বিমান হামলায় ৪২ জন মানুষ মারা গিয়েছিল।
আক্রমণের পরপরই জানানো হয়েছিল, হাসপাতালটির আড়াল থেকে জঙ্গিরা আক্রমণ চালাচ্ছে। তাদের খতম করতেই বিমান হামলা করা হয়েছিল। পরে সেই দাবি খারিজ হয়ে যায়। ঘটনার জেরে বিশ্বজুড়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল আফগানিস্তানে থাকা মার্কিন বাহিনী।
বিমান হামলার পর সেটিকে একটি ‘মানবিক ভুল’ বলে দাবি করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত কর্মকর্তারা। পরে এক বিবৃতিতে ওই ঘটনাটিকে ‘ভুল’ বলে স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
হামলার পর হাসপাতালটির ভেতরকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত এক ভিডিও সম্প্রতি বিবিসির সংবাদদাতারা সংগ্রহ করেছেন।
ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পুরো হাসপাতালটি কীভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ দেয়াল ধসে গেছে, হাসপাতালের প্রতিটি কক্ষ, এয়ারকন্ডিশনার, অপারেশন থিয়েটার সব পুড়ে কয়লার মতো হয়ে গেছে।
ছাই হয়ে গেছে রোগীদের বিছানাগুলো। ভবনটির ছাদ উড়ে গেছে। অপারেশন থিয়েটারে সার্জারি চলছিল এমন এক রোগীর প্রত্যঙ্গ উড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে সেখানেই। সেখানকার ভাঙা দেয়ালটির বহু জায়গায় এখনো রক্তের ছাপ।
হামলার পর ঘটনাটির তদন্তে এক তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল মার্কিন প্রশাসন। সেনাবাহিনীর গঠিত ওই তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, মার্কিন বাহিনী জানত না যে তারা এমএসএফের সেন্টারে হামলা চালাচ্ছে। যে বিল্ডিংয়ে তালেবান জঙ্গি আছে বলে তথ্য ছিল, সেই জায়গা ছিল কয়েকশ মিটার দূরে।