কেদারনাথ মন্দিরে ভূতের উৎপাত!
২০১৩ সালে ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় বন্যায়। ভয়াবহ ওই বন্যায় প্রদেশে হিন্দুদের পূণ্যভূমি কেদারনাথ মন্দির তছনছ হয়ে যায়। মারা যায় সেখানে অবস্থান করা বহু পুণ্যার্থী।
বন্যাটা ছিল আকস্মিক আর তাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মন্দির সংলগ্ন এলাকা। মন্দির পুনর্গঠনের জন্য প্রায় এক হাজার শ্রমিক দিনরাত কাজ করছেন। এদের বেশির ভাগ এসেছেন নেপাল থেকে। কিন্তু এখন আর শ্রমিকদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রাণ যাওয়ার ভয়ে বাড়ি ফিরতে উতলা হয়ে উঠেছেন সবাই।
শ্রমিকদের দাবি, কীসের কাজ? ভূতের অত্যাচারে থাকাই যাচ্ছে না এখানে। অশরীরী আত্মার হাতে চড়-থাপড়ও খাচ্ছেন শ্রমিকরা। এমনকি রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে শ্রমিকদের।
কেদারনাথ মন্দিরের পুনর্গঠনের কাজে শুরুতে কোনো সমস্যা না হলেও কিছুদিন পর থেকেই শুরু হয়ে যায় সমস্যা। শ্রমিকদের অভিযোগ, সূর্য অস্ত যাওয়ার পরই গোটা মন্দির চত্বর চলে যায় প্রেতাত্মাদের দখলে। রাত যত গভীর হতে থাকে ততই নাকি অশরীরা তাণ্ডবলীলা চালাতে শুরু করে। তাণ্ডব চলে মন্দিরসহ গোটা চত্বরজুড়ে। শ্রমিকরা নাকি কান্নার শব্দও শুনছেন। সে শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হন শ্রমিকরা। বেরিয়ে দেখেন, না কিছুই নেই।
শ্রমিকরা জানিয়েছেন, এখানে আর রাতের বেলা থাকা যাচ্ছে না। সন্ধ্যার পর প্রকৃতির ডাকে বাইরে বের হতেও ভয় পাচ্ছেন। সবসময় অশরীরী আত্মারা তাঁদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তাঁরা জানান, প্রেতাত্মারা কখনো শ্রমিকদের ধাওয়া দিচ্ছে, কখনো ফিসফাস আওয়াজ করছে, এমনকি কখনো ঘাড় ধরে ধাক্কা মারছে।
কেদারনাথ মন্দির পুনর্গঠনের কাজে নিযুক্ত পর্যবেক্ষক অজয় কোঠিয়াল বলেন, ‘এই মুহূর্তে শ্রমিকদের কাছে ‘না দেখা’ মানুষই সব থেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে অবশ্য নির্মাণকর্মীদের ভয় কাটাতে ‘হোম-যজ্ঞ’, ‘শিব-তাণ্ডব’ সবই করা হয়েছে। কিন্ত তাতেও শান্ত করা যাচ্ছে না প্রেতাত্মাদের। এমনকি রাতে শ্রমিকদের নিয়ে ‘পার্টি’ করেও ভয় দূর করার চেষ্টা করেছে কর্তৃপক্ষ। তাতেও সাহস ফিরছে না শ্রমিকদের। ভূতের ভয়ে কাজ-কর্ম শিকেয় তুলে শ্রমিকরা এখন পৈতৃক প্রাণ নিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।’