পাকিস্তানে শিশু ধর্ষণ ও হত্যায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড
পাকিস্তানের চাঞ্চল্যকর জয়নব আনসারি হত্যা মামলায় ধর্ষক ও হত্যাকারী ইমরান আলীকে (২৪) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে একটি নয়, চারটি অপরাধে তাঁকে পৃথক ফাঁসির রায় দেন তাঁরা।
গুম,ধর্ষণ,হত্যা ও সন্ত্রাসের অভিযোগে এই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো। আজ শনিবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত এ রায় দেন।
তবে মেয়ের হত্যাকারীর মৃত্যু জনসম্মুখেই দেখতে চাইছেন জয়নবের মা নুসরাত বিবি। তিনি বলেন, ‘জয়নবকে সে যেখানে মেরেছে, আমি সেখানেই জনসম্মুখে তাঁর মৃত্যু দেখতে চাই।’
শিশু জয়নবের হত্যাকারীর গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে আন্দোলনকারীরা। ছবি : সংগৃহীত
রায়ের সময় জয়নবের বাবা আদালতেই উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই রায় দেন আদালত। এছাড়া ডিএনএ ও পলিগ্রাফ রিপোর্টও আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
ইমরান আলীর বিরুদ্ধে ওই এলাকায় আটটি শিশুর ওপর যৌন হয়রানি অভিযোগ তুলেছে পুলিশ ও পাঞ্জাব প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী। সেই আট শিশুর মধ্যে পাঁচজনই মারা গেছে বলে জানা যায়।
রায় চলাকালীন ইমরান আলী ওই আট শিশুসহ জয়নবের কথা স্বীকার করে নিলে তাঁর আইনজীবী মামলা থেকে সরে যান।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন নিউজ জানায়, এই রায়ের বিরুদ্ধে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন ইমরান আলী।
গত মাসে ছয় বছর বয়সী শিশু জয়নবকে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে হত্যা করা হয়। গত ৯ জানুয়ারি দক্ষিণ লাহোরের কাসুর শরের একটি আবর্জনার স্তূপ থেকে জয়নবের লাশ উদ্ধার করা হয়।
জয়নবের পরিবারের সদস্যের সংগৃহীত ফুটেজ। এখানেই জয়নবকে শেষবারের মতো দেখা যায়। ছবি : সংগৃহীত
হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করতে লাহোর পুলিশের ওপর প্রচণ্ড চাপ ফেলেছিল আন্দোলনকারীরা। তাঁর গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ করেছিল ক্ষুব্ধ জনগণ। বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের গুলিতে দুই আন্দোলনকারীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
এ ঘটনায় একটি পাকিস্তান টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদ উপস্থাপিকা কিরান নাজ তাঁর শিশু মেয়েকে নিয়ে টিভি পর্দায় এসেছিলেন। কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘লাশ যত ছোট হয়, ততই ভারি হয়।’
এ ছাড়া রায়ের পেছনে জয়নবের পরিবারও অনেক বড় ভূমিকা রাখে। পরিবারের এক সদস্য একটি সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজে বের করেন। ফুটেজটিতে মৃত্যুর আগে একেবারে শেষবারের মতো জয়নবকে ধরে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধারণ করা ছিল।