ইরাক-ইরানে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪০০
ইরাক ও ইরানের সীমান্তবর্তী এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০০ জনে। এ ছাড়া অন্তত ছয় হাজার ৬৬০ জন আহত হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়েছে, ৭ দশমিক ৩ মাত্রার এই ভূমিকম্প দেশের উত্তরাঞ্চলের কারমানশাহ প্রদেশের ইরাকের সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় সময় রোববার রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আঘাত হানে। ইরাকের রাজধানী বাগদাদ, প্রতিবেশী কুয়েত ও ইসরায়েলেও তা অনুভূত হয়েছে।
ইরানের কারমানশাহ প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর মুজতবা নিক্কারদার বিবিসিকে বলেন, ‘এখনো অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
সীমান্তের ১৫ কিলোমিটার দূরে শারপুল-ই-জাহাব শহরে অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন বলেও জানান ডেপুটি গভর্নর। তিনি আরো জানান, এই এলাকাটিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পে ইরাকে সাতজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ইরানের রাষ্টীয় টেলিভশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরের প্রধান হাসপাতালটি গুরুত্বপূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁরা শত শত আহতদের চিকিৎসা দিতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাতের বেলা এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ায় দুর্গত এলাকায় হেলিকপ্টার উড়ে যেতে পারেনি। অনেক স্থানে সড়কপথ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সও যেতে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষত, যেসব গ্রাম কিছুটা প্রত্যন্ত অঞ্চলে, সেখানে দুর্গত লোকজনকে উদ্ধার ও সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলেও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদল রেজা রাহমানি ফজলি।
ভূমিকম্পের পর পরই লোকজন আতঙ্কে বাড়িঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। ইরানের কমপক্ষে আটটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ভূমিকম্পের পর ভূমিধসের কারণে উদ্ধারকাজও ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে, ইরানের একটি সহায়তাকারী সংস্থা জানায়, ভূমিকম্পে বাস্তুহারা হয়েছে কমপক্ষে সাত হাজার মানুষ। তাদের জরুরি ভিত্তিতে পুনর্বাসন প্রয়োজন।
বাগদাদের বাসিন্দা মাজিদা আমির রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি আমার সন্তানদের নিয়ে রাতের খাবার খাচ্ছিলাম। হঠাৎ বাড়িটি কেঁপে ওঠে। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম এটা কোনো বোমা হামলা। কিন্তু আমার চারপাশের মানুষ ভূমিকম্প ভূমিকম্প বলে চিৎকার করলে বুঝতে পারি ভূমিকম্প হয়েছে।’