ভারতে চিকিৎসার জন্য ‘লাইনে দাঁড়িয়ে’ মেয়েশিশুর মৃত্যু
ভারতের বিহার রাজ্যের পাটনায় সরকারি হাসপাতাল অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট মেডিকেল সায়েন্সেসে (এআইআইএমএস) বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ৯ বছর বয়সী এক মেয়েশিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রৌশন কুমারী নামের ওই শিশুটির মৃত্যু হয়।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ছয়দিন ধরে প্রচণ্ড জ্বরে ভুগতে থাকা মেয়ে রৌশনকে নিয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়েছিলেন বিহারের লখিসরাই জেলার কাজরা গ্রামের রামবালক। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রীও। সেখানে হাসপাতালকর্মীরা তাঁকে পরচা (রেজিস্ট্রেশন কার্ড) করতে বলেন। এর পর রামবালক একটি কাউন্টারে যান পরচা করতে। কিন্তু এর মধ্যেই তাঁর স্ত্রী সঙ্গে লাইনে থাকা মেয়েটির অবস্থা গুরুতর হতে থাকে।
মেয়ের অবস্থা দিনমজুর রামবালককে জানান তাঁর স্ত্রী। সে সময় ওই ব্যক্তি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যদের একটু বিবেচনার জন্য বলেন। কিন্তু কেউ তাঁর কথায় কর্ণপাত করেনি। পরে কাউন্টারে থাকা কর্মীদেরও তিনি অনুরোধ করেন। কিন্তু কেউ কথা না শুনে তাঁকে সিরিয়ালে আসতে বলেন।
ওই হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর কাউন্টার ছেড়ে আসার পর রামবালক দেখেন, তাঁর মেয়ে মারা গেছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রামবালকের মেয়ে মরার শোকের আগুনে ঘি ঢেলেছে এআইআইএমএসের কর্মকর্তারা। তারা লাশ গ্রামে পৌঁছে দিতে কোনো অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত দেয়নি। এর পর কাঁধে করে চার কিলোমিটার মেয়ের লাশ বহন করে অটোরিকশা স্ট্যান্ডে যান রামবালক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এআইআইএমএসের পরিচালক ডা. প্রভাত কুমার সিং বলেন, চিকিৎসার অভাবে সংকটাপন্ন একজন রোগী মারা যাওয়ার কোনো খবর তিনি পাননি।
হাসপাতালে মেয়েশিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। দলটি এ ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করেছে।