৩ পাকিস্তানির ৯৬ সন্তান!
শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্য, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুন অঞ্চলের বান্নু শহরে তিন ব্যক্তি ৯৬ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন!
এই তিনজনের একজন গুলজার খান, তিনি ৩৬ সন্তানের জনক। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ মানুষসহ গোটা বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন। তাহলে কেন আমি শিশু জন্মের এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া থামিয়ে রাখব?’ তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, ইসলাম পরিবার পরিকল্পনাকে সমর্থন করে না।
গুলজারের ১৫ ভাইবোনের একজন মাস্তান খান ওয়াজির। তিনি তাঁর ভাইয়ের চেয়ে মোটেও পিছিয়ে নেই। তিন স্ত্রীর গর্ভে তাঁর ২২ সন্তান। মাস্তান গর্ব করে বলেন, তাঁর নাতি-নাতনির সংখ্যা গুনে শেষ করা যাবে না।
পাকিস্তানের জনসংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে এ রকম পরিবারগুলো দায়ী বলে মনে করেন অনেকে। বিশেষজ্ঞরা এই জনসংখ্যার ঊর্ধ্বগতিকে অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও সামাজিক সেবাগুলো সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু এই ব্যক্তিরা এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অসচেতন। তাঁরা বলেন, এটা আল্লার দান।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের জন্মহার সবচেয়ে বেশি। বিশ্বব্যাংক ও পাকিস্তান সরকারের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের প্রত্যেক নারীর গড়ে তিনটি সন্তান রয়েছে, যা জন্মহারের উচ্চমাত্রার নির্দেশক।
উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের জাতিগত শত্রুতা এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুন অঞ্চলের বান্নু শহরে ৫৭ বছর বয়সী এক আদিবাসী তিন স্ত্রীর সঙ্গে বাস করেন। তাঁর এক স্ত্রী এখন গর্ভবতী। তিনি সংবাদমাধ্যম এএফপিকে বলেন, ‘আমরা আরো বেশি শক্তিশালী হতে চাই।’
এএফপি রসিকতা করেই বলেছে, কথা বলার সময় ২৩ সন্তান তাঁকে ঘিরে ছিল। তিনি বসে বসে তাদের পর্যবেক্ষণ করছিলেন। একটা পূর্ণ ক্রিকেট ম্যাচ খেলার জন্যও তাদের বাইরের কোনো বন্ধুর প্রয়োজন নেই।
১৯৯৮ সালের সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী, পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ৪০ লাখ। এ বছরের শুরুতে করা আদমশুমারি যার ফল জুলাই মাসে প্রকাশ করা হবে। এই জনসংখ্যা ২০ কোটির কাছাকাছি চলে যেতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
যে দেশে এখনো ৬০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জনসংখ্যার আধিক্য সে দেশের সব ধরনের অগ্রগতির অন্তরায়। এ সম্পর্কে জাতিসংঘের জনসংখ্যা কাউন্সিলে কান্ট্রি ডিরেক্টর জেবা এ সাথার বলেন, ‘এটা স্পষ্টভাবে স্বাস্থ্য খাতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়।’