ম্যানচেস্টারে হামলার পর মুসলিম ট্যাক্সিচালকের মহানুভবতা
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে লাইভ কনসার্টে সন্ত্রাসী হামলার পর এক ট্যাক্সিচালক মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি তাঁর ট্যাক্সিতে করে হামলায় বেঁচে যাওয়া লোকজনকে নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছেন। এ নিয়ে ব্রিটিশ মিডিয়ায় তাঁর প্রশংসা করা হয়েছে।
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ওই ট্যাক্সিচালকের নাম সাফ ইসমাইল। ব্রিটেনের গণমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ১৫ বছর বয়সী মেয়েরও সংগীতশিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডের কনসার্টে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সে কনসার্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে।
হামলার দিন রাতে সাফ ইসমাইল দেখতে পান যে, কনসার্ট এলাকা থেকে ভয়ার্ত লোকজন বেরিয়ে আসছেন। তাঁদের দেখে ইসমাইলের বারবার নিজের মেয়ের কথা মনে পড়ে যায়। তখন তিনি যতজনকে সম্ভব নিজের ট্যাক্সিতে তুলে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেন। তিনি বলেন, ‘তাঁরা আহত ছিলেন না। কিন্তু সবাই কাঁদছিলেন, ভয়ার্ত ছিলেন এবং চিৎকার করছিলেন।’
সে সময় তিন দফায় অন্তত ২৪ জন মানুষকে বাড়ি পৌঁছে দেন ইসমাইল।
ম্যানচেস্টার শহরে ‘নো গো জোন’ (চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা) ঘোষণা করা ঠিক হবে না বলে মনে করেন ইসমাইল। তিনি বলেন, ‘এখানকার মানুষ অত্যন্ত দৃঢ়। আমাদের পার্থক্য থাকলেও একসঙ্গে থাকি।’
কনসার্টে হামলার ঘটনার পর আশপাশের বহু লোক সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। শুধু ইসমাইলই নন আরো অনেক চালক মিটার বন্ধ করে সবাইকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। স্থানীয়রা কনসার্টে আসা ব্যক্তিদের নিজেদের বাড়িতে নিরাপদে রাত কাটানোর সুযোগ করে দিয়েছেন। এমনকি ভবঘুরে লোকেরাও ঘটনাস্থলে ঢুকে আহতদের সেবা করতে এগিয়ে যান।
গত সোমবার ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় মার্কিন সংঘীতশিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডের কনসার্ট শেষে ভক্তরা যখন হল ছেড়ে বাইরে বের হচ্ছিলেন, তখন সেখানে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হন ২২ জন। আহন হন কমপক্ষে ৫৯ জন। তবে হামলায় কোনো ক্ষতি হয়নি শিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডের।
যুক্তরাজ্যে ২০০৫ সালে ৭ জুলাই চালানো সন্ত্রাসী হামলার পর এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের আত্মঘাতী হামলা। ২০০৫ সালের হামলায় মারা গিয়েছিল ৫২ জন।