‘অস্ত্রের মুখে’ ভারতীয় তরুণীকে পাকিস্তানির বিয়ে
পাকিস্তানে বেড়াতে গিয়েছিলেন ভারতীয় তরুণী উজমা (২০)। উজমার পাকিস্তানি বন্ধু তাহির আলী কথা দিয়েছিলেন নিজের দেশ ঘুরিয়ে দেখাবেন। অথচ পাকিস্তানে যাওয়ার পরই উজমাকে অস্ত্রের মুখে বিয়ে করেন তাহির আলী! উজমা ধর্ষণের শিকারও হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের আশ্রয় নিয়েছেন উজমা। পাকিস্তানি নাগরিক তাহির আলীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন উজমা। ইসলামাবাদের একটি আদালতে তাহিরের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন তিনি। আর মামলা করেই আশ্রয় নিয়েছেন ভারতীয় হাইকমিশনে। নিজ দেশে না ফেরা পর্যন্ত সেখান থেকে নড়বেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়া টুডে এ খবর দিয়েছে।
উজমা একজন চিকিৎসক। দুই বছর আগে তাহির আলীর সঙ্গে তাঁর মালয়েশিয়ায় দেখা হয়। ওই সূত্র ধরেই পাকিস্তান ভ্রমণের আগ্রহের কথা জানান উজমা। চলতি মাসের শুরুতে পাকিস্তানে আসেন তিনি।
ইসলামাবাদে এক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উজমা অভিযোগ করেন, তাহির আলী অস্ত্র দেখিয়ে জোর করে তাঁকে বিয়ে করেন। এর আগে তিনি ধর্ষণের শিকার হন বলেও জানান।
উজমা জানান, গত ১ মে পাকিস্তানে আসার পর ৩ মে তাহির এসব কর্মকাণ্ড ঘটান। বিষয়টি উজমা দিল্লিতে তাঁর ভাইকে জানান। তাঁর ভাই পরামর্শ দেন ভারতীয় হাইকমিশনে চলে আসার জন্য।
তাহিরের হাত থেকে বাঁচার জন্য উজমা তাহিরকে ভারতীয় হাইকমিশনে গিয়ে ভারতীয় ভিসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। উজমা জানান, দুজনই দিল্লি যাবেন এ শর্তে তাহির রাজি হন। গত ৫ মে ভারতীয় হাইকমিশনে যান উভয়ে। হাইকমিশনে প্রবেশের পরেই উধাও হয়ে যান উজমা। পরে তাহির বিষয়টি পুলিশকে জানান এবং উজমা নিখোঁজ হয়েছেন বলে দাবি করেন। পুলিশ ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করলে হাইকমিশনের কর্মকর্তারা জানান, উজমা তাঁদের কাছেই আছেন, ভালোই আছেন।
আজ সোমবার ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়ে দিয়েছে, তাহির উজমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আর উজমাকে ভারতে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও নিয়েছে কমিশন। উজমা দাবি করেছেন, তাঁর কাগজপত্র সবই নষ্ট করে ফেলেছেন তাহির।
ভারতীয় হাইকমিশন উজমার দায়িত্ব নিয়েছে বিষয়টি জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া। তিনি জানান, তাহির আগেও বিয়ে করেছেন এবং তাঁর চারটি সন্তানও আছে।
ভারতীয় হাইকমিশন সূত্রে জানা যায়, তাহির প্রতারণা করেছেন উজমার সঙ্গে। উজমা জানতেন না তাহির স্কুলের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। মালয়েশিয়ায় একজন শ্রমিক হিসেবেই কাজ করতেন তিনি।
উজমা বলেন, ‘তাহির আমার বন্ধু ছিল। আমি পাকিস্তানের ভিসার জন্য আবেদন করেছিলাম দেশটি ভ্রমণ করার জন্য, ওখানে গিয়ে বিয়ে করার জন্য নয়।’ তিনি আরো জানান, তাহিরের পরিবারের লোকজনের ভাষাও তিনি বুঝতে পারেন না। তাহির খাইবার পাখতুনের বাসিন্দা। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওই এলাকার মানুষ উর্দু ভাষা বোঝে। কিন্তু ওই ভাষায় খুব কমই কথা বলে।