বিবাহবার্ষিকীর দিনে হামলায় গেল প্রাণ
জন্মসূত্রে যুক্তরাজ্যের নাগরিক মেলিসা। স্বামী কার্টকে নিয়ে তিনি থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যে। সম্প্রতি বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করতে স্বামীকে নিয়ে নিজ দেশে গিয়েছিলেন মেলিসা। আর সেটিই হলো তাঁর কাল।
গত বুধবার দুপুরে ওই দম্পতি হেঁটে যাচ্ছিলেন যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার সেতুর ওপর দিয়ে। ঠিক সে সময়েই শুরু হয় সেদিনের সন্ত্রাসী হামলা। সেতুর ওপর থাকা পথচারীদের গাড়ি চাপা দেয় খালিদ মাসুদ নামের এক সন্ত্রাসী। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান কার্ট। আহত হন মেলিসা।
মেলিসার বোন সারা পেইন বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে হামলায় পাওয়া আঘাতের ফলে কার্টের মৃত্যু হয়েছে। মেলিসার একটি পা ও পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে। এ ছাড়া মাথায় কেটে গেছে তাঁর।’
সারা আরো বলেন, ‘কার্ট তুমি একজন বীর। আমরা তোমাকে ভুলব না।’
এদিকে মেলিসার চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে তহবিল সংগ্রহকারী ওয়েবসাইট গো ফান্ড মি। এরই মধ্যে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে ওয়েবসাইটটি। সেখানে দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, কার্ট ও মেলিসা যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ প্রদেশে বসবাস করতেন। সেখানে তাঁদের একটি গানের স্টুডিও রয়েছে। ১০ বছর ধরে এই ব্যবসা করছেন তাঁরা।
বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবনের কাছে সন্ত্রাসী হামলায় পাঁচজন নিহত হন। এতে আহত হন কমপক্ষে ৪০ জন। নিহতদের মধ্যে পিসি কিথ পালমার (৪৮) নামের এক পুলিশ কর্মকর্তাও ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বুধবার দুপুরে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার সেতু দিয়ে একটি গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করে হামলাকারী। এর পর ওয়েস্টমিনস্টার এলাকায় অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনের দিকে এগিয়ে যায়। পথে সেতুর ওপর থাকা লোকজনকে চাপা দেয় হামলাকারী। এতে নিহত হন দুজন। তাঁদের মধ্যে এক নারী রয়েছেন। এ ছাড়া তিন পুলিশ সদস্যসহ আহত হন অনেকেই।
সেতু পার হয়ে হামলাকারী গাড়ি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবনের বিগ বেন ঘড়িসংলগ্ন দেয়ালে ধাক্কা দেয়। এর পর গাড়ি থেকে নেমে পার্লামেন্ট ভবন প্রাঙ্গণে অনুপ্রবেশ করে হামলাকারী। এ সময় তার কাছে একটি ছুরি ছিল।
পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে অনুপ্রবেশের পর কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা পিসি পালমার হামলাকারীকে বাধা দেন। কিন্তু পালমারের কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। হামলাকারী ছুরি দিয়ে তাঁকে বেশ কয়েকবার আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। পরে সেখানে থাকা অন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের গুলিতে নিহত হয় হামলাকারী।