পশ্চিমবঙ্গে প্রথম বৈধ ট্রান্সজেন্ডার বিয়ে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈধ ট্রান্সজেন্ডার বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের কেষ্টপুর বাগুইআটির একটি হোটেলে ধুমধাম করে শ্রী ঘটক ও সঞ্জয় মুহুরির মধ্যে এ বিয়ে হয়।
এনজিও, থিয়েটার ও নাট্যকর্মী শ্রী ঘটক হিজড়া ছিলেন। আর বেসরকারি সংস্থায় সেলস বিভাগে কর্মরত সঞ্জয় পুরুষ।
বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তাঁরা। অস্ত্রোপচার করে নারীতে রুপান্তরিত হন শ্রী ঘটক। এরপর গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি সামাজিকভাবে বিয়ে করেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের ওই বিয়ের আইনি অনুমোদন ছিল না দেশটিতে। সম্প্রতি আদালত ট্রান্সজেন্ডার বিয়ের অনুমতি দেন। এর পরই তাঁরা নতুন করে আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন।
ওই দম্পতি জানান, শ্রী ঘটকের সঙ্গে সঞ্জয়ের প্রেম হয় ২০০০ সালে। ওই সময় তাঁদের প্রেম কেউ মেনে নিচ্ছিল না। কিন্তু বন্ধুত্বের বন্ধন স্থায়ী রাখতে শ্রীকে ছেড়ে যেতে চাননি সঞ্জয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন তাঁরা। চিকিৎসক শ্রী ঘটকের শরীরে অস্ত্রোপচার করেন। পরে হরমোন থেরাপির মাধ্যমে নারীতে পরিণত হন শ্রী ঘটক। এরপর বিয়ে করেন তাঁরা। শ্রী ও সঞ্জয়ের এই ভালোবাসার লড়াইয়ের মধ্যেই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামীদের মধ্যে বিয়ের বৈধতা দেন। এর ভিত্তিতে আদালতের কাছে নিজেদের বিয়ের বৈধতা দাবি করেন শ্রী ও সঞ্জয়। আদালত থেকে স্বীকৃতি পাওয়ার পর শনিবার অনুষ্ঠান করে বিয়ে করেন তাঁরা।
সঞ্জয় মুহুরি বলেন, ‘শ্রী ঘটকের শরীরের স্ত্রী লিঙ্গ প্রতিস্থাপিত হলেও জরায়ুসহ বেশ কিছু সমস্যা সাময়িকভাবে রয়ে গেছে। যাতে ভবিষ্যতে মা হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা নিয়ে আমি কোনো চিন্তা করি না।’ ভালোবাসার মানুষটির শরীরে আর কোনো কাটাছেড়া করতে রাজি নন সঞ্জয়। প্রয়োজনে আগামী দিনে সন্তান দত্তক নেবেন তিনি।
বিয়ের আসরে শ্রী ঘটক সাংবাদিকদের জানান, তাঁদের ভালোবাসায় পরিবারের যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে। স্বামী হিসেবে সঞ্জয় যথেষ্ঠ দায়িত্ববান এবং তাঁর প্রতি যত্নবান। শ্বশুরবাড়ির সবাই তাঁকে খুব ভালোবাসে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁরা হানিমুনে গোয়ায় ঘুরতে যাবেন।
সঞ্জয় মুহুরি জানান, শ্রী যথেষ্ট সুন্দরী। তার মধ্যে সবই আছে যা পুরুষরা চান। তাকে পেয়ে খুব খুশি তিনি। দুজনে হাতে হাত রেখে এভাবে সারাটি জীবন পার করতে চান তাঁরা।