মশার কামড়ে আর ম্যালেরিয়া হবে না
ম্যালেরিয়ার জীবাণু যে মশার মাধ্যমে ছড়ায়, তা প্রায় সবাই জানে। এইডস বা ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগ থাকার পরেও বিশ্বে এখনো সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। তবে এর প্রতিকার বুঝি এবার পাওয়া গেল।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন যে তারা কৃত্রিম উপায়ে মশার দেহে এমন পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন, যার ফলে তারা আর ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করতে পারবে না। এ খবর জানিয়েছে এনবিসি নিউজ।
এনবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সিআরআইএসপিআর’ নামক এক নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে মশাদের জিনে যে ডিএনএ আছে তাতে বিশেষ পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। এতে ওই মশা আর ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করতে পারবে না।
শুধু তাই নয়, এই জিনগত পরিবর্তন খুব দ্রুত ছড়িয়ে যাবে মশাদের পরবর্তী বংশধরদের মধ্যেও। আর যেহেতু মশাদের আয়ুষ্কাল মাত্র ১০ দিন, আশা করা হচ্ছে খুব দ্রুতই ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনে অক্ষম মশার সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রায় সব মশাকেই মানুষের জন্য ‘নিরাপদ’ করে তোলা সম্ভব হবে।
এই গবেষণার গবেষকদের অন্যতম অ্যান্থনি জেমস বলেন, ‘আমরা এখন জানি কীভাবে এই জিনগত পরিবর্তন ঘটাতে হয়। অদূর ভবিষ্যতে আমরা সব মশাকেই ম্যালেরিয়ার জীবাণুমুক্ত করে তুলতে পারব বলে আশা রাখি।’
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স’-এ জমা দেওয়া এই গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘জার্মলাইন এডিটিং’ নামক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সৃষ্টি করা এসব মশা অন্তত ৯৯.৫ শতাংশ ক্ষেত্রে তাদের বংশধরদের মধ্যে এই গুণ সরবরাহ করবে।
ফলে দ্রুতই ম্যালেরিয়া বহনে অক্ষম মশাদের সংখ্যা বিস্তার পাবে। ডেঙ্গুজাতীয় রোগের জন্যও একই প্রতিরোধক ব্যবহারের চিন্তা শুরু করেছেন গবেষকরা।
পুরো বিশ্বজুড়েই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে মশারি বা নেট ব্যবহার এবং ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে মশার আবাসস্থল ধ্বংস করার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের চেষ্টা করা হয়। তারপরও শুধু ২০১৩ সালে পৃথিবীজুড়ে অন্তত ২০ কোটি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে মারা গিয়েছেন ছয় লাখেরও বেশি মানুষ।