যেখানে লর্ডসের চেয়ে এগিয়ে মিরপুর
লর্ডসকে বলা হয় ‘ক্রিকেটের মক্কা’। ক্রিকেটের তীর্থস্থান লর্ডসে কোনো কীর্তি গড়া মানেই ক্রিকেট-দুনিয়ার নজর কেড়ে নেওয়া। গত বছর ঐতিহ্যবাহী মাঠটির দ্বিশতবার্ষিকী পালিত হয়েছে। তবে ঐতিহ্যে-সম্মানে অনেক অনেক এগিয়ে থাকা লর্ডসকে একটি লড়াইয়ে পেছনে ফেলে দিয়েছে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। লর্ডসের চেয়ে বেশি ওয়ানডের আয়োজক বাংলাদেশের ‘হোম অব ক্রিকেট’। এমনকি ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যাওয়া বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামেও এ পর্যন্ত লর্ডসের চেয়ে বেশি ওয়ানডে হয়েছে।
১৯৭২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত লর্ডসে হয়েছে ৫৬টি একদিনের ম্যাচ। আর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ১৯৮৮ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আয়োজন করেছে ৫৮টি ওয়ানডে। এ লড়াইয়ে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম অবশ্য অনেক এগিয়ে। ২০০৬ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের সাক্ষী মিরপুর ৯০টি ওয়ানডে আয়োজন করেছে। সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে আয়োজনের তালিকায় শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের অবস্থান ষষ্ঠ। সামনে আছে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম (১১৮), হারারে স্পোর্টস ক্লাব (১২০), মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (১৪৪), সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড (১৫১) ও শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়াম (২১৮)।
১৯৮৮ সালে এশিয়া কাপ দিয়ে বাংলাদেশে শুরু হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যাত্রা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ এখানে খেলেছে সবচেয়ে বেশি ৩২টি ম্যাচ, যার মধ্যে জিতেছে মাত্র তিনটিতে। তবে ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয় এসেছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই। ফুটবল বরাদ্দ পাওয়ায় ২০০৫ সালের পর এই মাঠে আর কোনো ক্রিকেট ম্যাচ হয়নি।
তখন থেকেই ক্রিকেটের ঠিকানা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। ২০০৬ সালে মিরপুরে শুরু হয় বাংলাদেশের ক্রিকেট-যাত্রা। মাত্র নয় বছরেই শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ওয়ানডের রীতিমতো বন্যা! আর মাত্র ১০টি ওয়ানডে আয়োজন করলেই অন্য ধরনের শতকের গৌরব অর্জন করবে মাঠটি। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক সাফল্যগাথাও রচিত। এ বছর ভারত-পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাশরাফির দল সিরিজ জিতেছে (যার মধ্যে পাকিস্তান হোয়াইটওয়াশ) এ মাঠেই। নিউজিল্যান্ডকে দুবার হোয়াইটওয়াশ করার সুখস্মৃতির সঙ্গেও জড়িয়ে আছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম।
এই মাঠে বাংলাদেশের সাফল্যের হারও ভালো। ৭৫টি ওয়ানডে খেলে ৩৩টি ম্যাচে জয় পেয়েছে স্বাগতিক দল, হেরেছে ৪১টি; বাকি ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছে বৃষ্টিতে।