শেষ দিনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩৭৫ রান
ব্যাটিং ব্যর্থতায় পচেফস্ট্রুম টেস্টে হারের মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। শেষ দিনে জয়ের জন্য টাইগারদের প্রয়োজন ৩৭৫ রান। হাতে রয়েছে মাত্র সাতটি উইকেট। বৃষ্টির কারণে শেষ দিন পর্যন্ত গড়িয়েছে ম্যাচ। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে উইকেট বিলিয়ে আসছিলেন তাতে করে ম্যাচটি চতুর্থ দিনেই শেষ হতে পারত। তবে বৃষ্টি বাধা দেওয়ায় চতুর্থ দিনে প্রায় আড়াই ঘণ্টার মতো খেলা হয়নি।
এর আগে সিরিজের প্রথম টেস্টে জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে পাহাড়সম রানের লক্ষ্য দাঁড় করিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়াদের লিডটা ৪২৩ রানের। জয়ের জন্য বাংলাদেশকে করতে হবে ৪২৪ রান। তৃতীয় দিনের দুই উইকেটে ৫৪ রান নিয়ে আজ শুরু করে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ২৪৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস।
বিশাল রানের পেছনে তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে তামিম ইকবালের স্টাম্প উপড়ে দেন মরনে মরকেল। দুই বলের ব্যবধানে মুমিনুলকেও ফিরিয়ে দেন এই পেসার। মুমিনুলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তিনি। তবে রিপ্লেতে দেখা যায় আউট ছিলেন না এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। বলটা স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে বের হয়ে যেত। রিভিউ নিলে নিশ্চিতভাবে বেঁচে যেতেন তিনি। রিভিউ নিয়ে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে পরামর্শ করেন মুমিনুল। তবে ইমরুল কায়েস তাঁকে রিভিউ নিতে নিষেধ করেন।
এরপর ৪৯ রানে জুটি বাঁধেন ইমরুল কায়েম ও অধিনায়ক মুশফিক। তবে চা-বিরতির ঠিক আগে কেশব মহারাজের বল ইমরুলের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে জমা হয়। ৩২ রান করেন ইমরুল। এরপরই চা বিরতিতে যায় দুই দল। পচেফস্ট্রুমের আকাশ কালো করে তখনই শুরু হয় বৃষ্টি। এরপর শেষ সেশনের খেলা আর মাঠে গড়ায়নি।
আজ সকালে প্রোটিয়াদের আজ কম রানের মধ্যে আটকানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন টাইগার বোলাররা। সেই লক্ষ্যেই চতুর্থ দিনটা শুরু করে মুশফিক বাহিনী। দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় হতে দিতে চাননি মুস্তাফিজ-মিরাজরা। দিনের শুরুটা ভালোই করেন মুস্তাফিজুর রহমান। চতুর্থ দিনের শুরুতেই প্রোটিয়া ব্যাটিং-স্তম্ভ হাশিম আমলাকে ফিরিয়েছেন কাটার মাস্টার। এরপর টিম্বা বিভুমাকেও ফেরাতে পারতেন শফিউল। তবে ব্যাওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ ছেড়েছেন ইমরুল কায়েস। আঙুলে ব্যথা পেয়ে মাঠও ছেড়েছেন বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।
এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৪২ রান যোগ করে বাংলাদেশকে খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছেন ফাফ ডু প্লেসিস ও টিম্বা বাভুমা। তবে ডু প্লেসিসকে সেঞ্চুরি পেতে দেননি মুমিনুল হক। ব্যক্তিগত ৮১ রানে প্রোটিয়া অধিনায়ককে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তিনি।
মধ্যাহ্নভোজের কিছু পর পচেফস্ট্রুমের আকাশ কালো করে নামে বৃষ্টি। জোর বৃষ্টির কারণে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবার খেলা শুরু হয়। বৃষ্টির পর টপাটপ দুটি উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের বোলাররা। টিম্বা বাভুমা ও কুন্টন ডি কককে ফেরান এই ম্যাচে বোলার হয়ে ওঠা মুমিনুল হক।
শেষ পর্যন্ত ২৪৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪২৪ রানের। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মুমিনুল তিনটি ও মুস্তাফিজ নেন দুটি উইকেট।
এর আগে ১৭৬ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা বেশ ভালো করে বাংলাদেশ। শুরুতেই প্রথম ইনিংসে ১৯৯ রান করা ডিন এলগারকে ফিরিয়ে দেন শফিউল ইসলাম। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান এলগারকে। রিভিউ নিলেও বাঁচতে পারেননি প্রোটিয়া ওপেনার। দক্ষিণ আফ্রিকার রান তখন ৩০। এরপর দলীয় ৩৮ রানে মার্করামকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজ। দিনের বাকি সময়টুকু নির্বিঘ্নেই পার করেন আমলা ও বিভুমা।
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ৪৯৬ রানের জবাবে ৩২০ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।