ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা ক্রিকেটারের আসরে মিরাজ-মাশরাফিরা
২০১৫ সালে ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় তুলে অভিষেক হয়েছিল মুস্তাফিজুর রহমানের। অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে ২০১৬ সালের আইসিসি বর্ষসেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন ফিজ। ২০১৫ সালে ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা উদীয়মান খেলোয়াড় হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন বাঁহাতি এই পেসার। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ক্রিকইনফোর কোনো পুরস্কার জিতেছিলেন মুস্তাফিজ। এ বছর মুস্তাফিজ ছাড়াও আরো পাঁচজন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের নাম এসেছে বর্ষসেরার এই পুরস্কারের জন্য।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা পারফরম্যান্সের হিসাবে ২০১৬ সালের বর্ষসেরা নির্বাচন করেছে আইসিসি। গত বছরের ডিসেম্বরেই বর্ষসেরা ক্রিকেটারদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা। আর ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো এই বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার ঘোষণা করবে পুরো ২০১৬ সালের পারফরম্যান্স বিচার করে। এবার যেখানে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে নাম আছে বাংলাদেশের মোট ছয়জন ক্রিকেটারের। মুস্তাফিজ ছাড়াও আছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। আজ শুক্রবার রাতে জানা যাবে ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা ক্রিকেটারদের নাম।
২০১৫ সালে মুস্তাফিজ ক্রিকইনফোর যে পুরস্কারটি জিতেছিলেন, এবার সেটি হাতে নেওয়ার সুযোগ আছে মিরাজের সামনে। ২০১৬ সালের বর্ষসেরা অভিষিক্ত ক্রিকেটারের পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন তরুণ এই ডানহাতি অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়েছেন মিরাজ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে পেয়েছেন ১৯ উইকেট। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের পেছনেও বড় ভূমিকা ছিল মিরাজের। এই ক্যাটাগরিতে অবশ্য মিরাজের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন ভারতের জাসপ্রিত বুমরা, জয়ন্ত যাদব, করুন নায়ার, দক্ষিণ আফ্রিকার স্টিফেন কুক, ওয়েস্ট ইন্ডিজের এভিন লুইস, ইংল্যান্ডের হাসিব হামিদ, কিটন জেনিংস, অস্ট্রেলিয়ার পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও নিউজিল্যান্ডের জিত রাভাল।
শুধু বর্ষসেরা অভিষিক্ত ক্যাটাগরিতেই না, মিরাজের নাম আছে বর্ষসেরা টেস্ট বোলিং পারফরম্যান্সের তালিকাতেও। মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৭ রানে ছয় উইকেট নিয়েছিলেন ডানহাতি এই অফস্পিনার। মিরাজের এই পারফরম্যান্সটাকেই বর্ষসেরার তালিকায় রেখেছে ক্রিকইনফো। সেই টেস্টের প্রথম ইনিংসেও মিরাজ নিয়েছিলেন ছয় উইকেট।
টেস্টে শুধু বোলিং না, বর্ষসেরা ব্যাটিং পারফরম্যান্সের তালিকাতেও আছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারের নাম। তামিম ইকবাল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টজয়ের সেই ইতিহাসগড়া ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তামিম খেলেছিলেন ১০৪ রানের লড়াকু ইনিংস। সেটাকেই বর্ষসেরা ব্যাটিং পারফরম্যান্সের জন্য মনোনীত করেছে ক্রিকইনফো।
ওয়ানডে ক্রিকেটের বর্ষসেরা বোলিং পারফরম্যান্সের জন্য বিবেচিত হয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করে চার উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি। শুধু বল না, সেই ম্যাচে ব্যাট হাতেও মাশরাফি ছিলেন অসাধারণ। নয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে খেলেছিলেন ২৯ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস। সব মিলিয়ে ম্যাচের পুরোটাই ছিল মাশরাফিময়। ইংল্যান্ডকে সেই ম্যাচে প্রায় একাই হারিয়ে দিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক।
২০১৬ সালের বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সের তালিকায় আছে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের নাম। ব্যাটিংয়ে সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ ও বোলিংয়ে মুস্তাফিজ। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫৪ বলে ৮০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বর্ষসেরার মনোনয়ন পেয়েছেন সাব্বির। মাহমুদউল্লাহ এই তালিকায় ঢুকেছেন মাত্র ২২ রানের এক ইনিংসের জন্য।
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ খেলেছিলেন ২২ রানের ছোট্ট সেই ইনিংস। মনে হতেই পারে যে, মাত্র এই কয়টি রানের জন্য বর্ষসেরা পারফরম্যান্সের জন্য মনোনয়ন? কিন্তু চাপের মুখে যেভাবে ব্যাটিং করে মাহমুদউল্লাহ দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেটাই নজর কেড়েছে ক্রিকইনফোর।
২০১৬ সালের বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি বোলিং পারফরম্যান্সের তালিকায় আছে মুস্তাফিজের নাম। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চার ওভার বল করে মাত্র ২২ রানের বিনিময়ে ফিজ নিয়েছিলেন পাঁচটি উইকেট।