হজ-উমরা
আরাফাতের বাকি কাজগুলো কীভাবে করবেন?
সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ পালন অবশ্যকর্তব্য। আমরা সব সময় চর্চা করি না বলে হজ পালন সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা থাকে না। হজের শুদ্ধ পদ্ধতি, হজের প্রস্তুতি এসব বিষয়ে জানা আমাদের কর্তব্য। এ লক্ষ্যেই এনটিভির বিশেষ অনুষ্ঠান ‘হজ ও উমরা’। এ অনুষ্ঠানে হজ ও উমরার প্রস্তুতি নিয়ে তথ্যচিত্রে আলোচনা করেছেন কুরআন শিক্ষা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের হজ প্রশিক্ষক মুহাম্মদ তানভীর হোসেন
‘হজ ও উমরা’র প্রস্তুতি প্রশিক্ষণের চতুর্থ পর্বের অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
গত পর্বে একজন হাজি আরাফাতে আসার পর আরাফাতের সব কাজকর্মগুলো কীভাবে পালন করবেন, সেটা আমরা দেখিয়েছিলাম। আরাফাতে কখন সূর্যাস্ত হবে তাও আপনাদের আমরা বলেছিলাম।
আজ আরাফাতের বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করে কীভাবে আপনারা আরাফা ত্যাগ করে মুজদালিফায় যাবেন এবং বাকি কর্মকাণ্ডগুলো শেষ করবেন সেটা আমরা আলোচনা করব।
আপনি তিনভাবে যেতে পারবেন, হেঁটে, বাসে এবং ট্রেনে করে। আপনি যদি হেঁটে আরাফা ত্যাগ করতে চান, তাহলে আপনার রাস্তা হবে নিচের চিত্রের মতো
আর আপনি যদি বাসে যেতে চান তাহলে আপনার যাওয়ার রাস্তা হবে নিচের চিত্রের মতো-
ট্রেনে যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার যে গাইড থাকবেন বা হজ এজেন্সি থাকবে, তাঁদের সঙ্গে আগেই পরামর্শ করে নিতে হবে, ট্রেনের টিকেট আপনি পাবেন কি না এবং ট্রেনের স্টেশন আপনার তাঁবু থেকে কত দূরে। যদি ট্রেনের স্টেশন তাঁবু থেকে দুই, তিন কিলোমিটার দূরে হয় এবং ট্রেন স্টেশনে যদি গিয়ে দেখেন যে ৫০০ হাজারের মতো হাজি দাঁড়িয়ে আছেন, তাহলে এই ট্রেনযাত্রা আপনার জন্য অনুপযোগী হবে।
আপনারা যারা শক্তি, সামর্থ্য রাখেন, তাঁরা হেঁটে চলে আসবেন, এটাই আপনাদের জন্য সহজ হবে। এভাবে আপনারা আরাফা ছেড়ে চলে আসবেন মুজদালিফায়।
মুজদালিফা থেকে হজের ওয়াজিব গুলো শুরু হবে। মুজদালিফায় আসার পরে প্রথম কাজ হবে অজু করা, অজু করে মাগরিবের নামাজ আদায় করবেন, এশার নামাজ কসর করে আদায় করবেন এবং বিতরের নামাজ পড়বেন। হালকা কিছু খাওয়া-দাওয়া করবেন। এখান থেকে আপনি ৭০টি পাথর কুড়িয়ে নেবেন। পাথরের আকার খেজুরের দানার মতো হবে। খাওয়া-দাওয়া করে এখানে আপনি বিশ্রাম করবেন, ঘুমাবেন।
ইহরামে একটা বাধ্যবাধকতা ছিল যে, মুখমণ্ডল ঢাকা যাবে না। তাই দয়া করে আপনারা এই সময় মাস্ক ব্যবহার করবেন না। আপনারা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবেন, দয়া করে মুখমণ্ডল ঢাকবেন না। আরাফাতে, মুজদালিফাতে কোনো জায়গাতেই মশা, মাছি আক্রমণ করুক বা যাই-ই আক্রমণ করুক আপনি এই সময় ইহরামের মধ্যে থাকবেন, ইহরামের ওপরের অংশটুকু দিয়ে কোনোভাবেই আপনার মাথাটাও ঢাকবেন না, সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।
মুজদালিফার মাঠে নিচের ছবিটির মতো খোলা আকাশের নিচে পুরুষ, নারী সবাই অবস্থান করবেন।
যদি আপনারা মসজিদুল হারামের আশপাশে থাকতে পারেন, তাহলে সকালবেলা ফজরের আজান শুনতে পারবেন। যদি আশপাশে থাকতে না পারেন, আপনারা সময়টুকু জেনে রাখেন, মুজদালিফায় ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ শুরু হবে ৪টা ৫০ মিনিটে এবং সূর্যোদয় হবে ৬টা ১০ মিনিটে। আজানের পর ফজরের নামাজ পড়বেন এবং সঙ্গে অবশ্যই সুন্নাত নামাজটুকু পড়বেন, কারণ রাসুল (সা.) কখনই সফরে সুন্নত নামাজ ছেড়ে দেননি। একেবারে কাবামুখী হয়ে দুই হাত তুলে আল্লাহ সুবানাহু তায়ালার কাছে দোয়া করবেন। এটা দোয়া কবুলের একটা অন্যতম জায়গা এবং অন্যতম সময়, যেই সময়টা রাসুল (সা.) দেখিয়ে দিয়েছেন। ফজরের নামাজ শেষ হলে দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। এরপর সূর্য ওঠার আগেই মুজদালিফা ছেড়ে যাবেন, অর্থাৎ আপনাকে মনে রাখতে হবে ৬টা ১০ মিনিটের আগে মুজদালিফা ত্যাগ করতে হবে। ১০ জিলহজ বাকি যে কাজগুলো আছে, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে সম্পন্ন করবেন। যদি আপনি ধৈর্যশীল হন, এগুলো ধারাবাহিকভাবে সম্পন্ন করতে কোনোই অসুবিধা হবে না। এই কাজগুলো হচ্ছে—রমি, হাদি, হলক, তাওয়াফ ও সাঈ। এগুলো ধারাবাহিকভাবে শেষ করবেন।
সূর্যোদয়ের পূর্বে হাজি সাহেবরা নামাজ পড়ে, দোয়া করে জামারায় আকাবার উদ্দেশে রওনা হবেন। যখন আপনারা রওনা হবেন, সেখানে সবুজ সিগনাল বাতি দেখতে পারবেন। এই সবুজ সিগনাল মানে আপনারা জামারার উদ্দেশে যেতে পারবেন। কিন্তু যদি লাল সিগনাল দেখেন তাহলে আপনি যেতে পারবেন না। সারা জীবন আপনি-আমি সিগনাল দেখেছি গাড়ি থামাবার জন্য, আর সেখানে সিগনাল ব্যবহার করা হবে মানুষ থামানোর জন্য। লাল সিগনাল দেখলে আপনি নিজেও থামবেন, অন্য হাজিকেও থামানোর বন্দোবস্ত করবেন। তারপর আপনি জামারার উদ্দেশে চলে যাবেন।
মুজদালিফা থেকে যখন আসবেন, প্রথম আপনারা যে জামারাটা পাবেন, জামারায় সাগিরা (ছোট জামারা), এরপর জামারায় উসতা (মধ্যম জামারা) এবং জামারায় আকাবা (বড় জামারা)।
আপনাদের সেদিনের (১০ জিলহজ) কাজ হবে শুধু জামারায় আকাবাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করা। এই জামারাটা প্রায় ৪০ ফুট, তাই প্রথম থেকেই আপনারা পাথর নিক্ষেপ শুরু করবেন না। জামারার মাঝামাঝি বা মাঝামাঝির পরে যখন চলে আসবেন, তখন দেখবেন সবাই সেখানে মাত্র সাতটি পাথর নিক্ষেপ করে চলে যাচ্ছে। আপনি সোজাভাবে ঢুকে যাবেন, জামারার পাশে আপনি একটা বাউন্ডারি দেয়াল পাবেন, সেই দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে খুব সহজভাবেই পাথরগুলো নিক্ষেপ করতে পারবেন।
বৃদ্ধাঙ্গুলি এবং শাহাদাত অঙ্গুলি দিয়ে ধরে আপনি ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ শুরু করবেন। কঙ্কর নিক্ষেপের আগে একটা কাজ আছে। আপনি যখন ইহরামে ঢুকেছেন, নিয়ত করেছেন, তখন থেকে তালবিয়া বলতে শুরু করেছেন। কঙ্কর নিক্ষেপের আগে আপনার তালবিয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর আর আপনি তালবিয়া পড়বেন না। এরপরের যে পাথরগুলো, শুধু আল্লাহু আকবার বলে সেই সাতটি পাথর নিক্ষেপ শেষ করবেন। সাতটি পাথর আপনি একসঙ্গে মারতে পারবেন না। একটি একটি করেই সাতটি পাথর নিক্ষেপ করতে হবে। কঙ্কর নিক্ষেপ করাটা ওয়াজিব, তাই যদি না করেন তাহলে আপনাকে জরিমানা দিতে হবে। একটি পশু কোরবানি করতে হবে, যাকে হজের ভাষায় দম দেওয়া বলা হয়।
পাথর নিক্ষেপের সময় খুব বেশি উত্তেজিত হবেন না। আপনাকে আমাকে কারো মাথায় পাথর নিক্ষেপ করতে বলা হয়নি, বলা হয়েছে জামারাতে পাথর নিক্ষেপ করতে। দয়া করে খুব শান্তভাবে, জামারাতেই যেন পাথর নিক্ষেপ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। পাথর নিক্ষেপ শেষ হলে তাকবির শুরু হবে, তাকবির-ই তাশরিক। আমরা সবাই এটা পড়ে থাকি সব সময়। ‘আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ’। ১৩ জিলহজ আসরের নামাজ পর্যন্ত এই তাকবির-ই-তাশরিকটা পাঠ করবেন।
তামাত্তু হজকারী এবং কিরান হজকারীদের জন্য ওই দিন (১০ জিলহজ) পশু কোরবানি করা বা হাদি করা ওয়াজিব। এটা আপনারা শেষ করবেন। যদি ১০ জিলহজের মধ্যে শেষ করতে না পারেন তাহলে এটা শেষ করতে হবে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগেই। আপনি একটু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করবেন, আপনার হজ এজেন্সির সঙ্গে কথা বলেন কিংবা গাইডের সঙ্গে কথা বলেন, উনি যখন বলবেন আপনার কোরবানিটা সম্পন্ন হয়ে গেছে, তারপর আপনি হলক বা মাথা মুণ্ডন করবেন। যিনি হলক করবেন, রাসুল (সা.) তাঁর জন্য তিনবার দোয়া করেছেন। হলক করার সময় অবশ্যই আপনার নাপিতকে বলবেন, ডানদিক থেকে কাটার জন্য, ডানদিক থেকে কাটাটাও একটা সুন্নাহ। সেখান থেকে আপনি হোটেলে এসে আপনার মা অথবা স্ত্রী অথবা বোন অথবা মেয়ের চুল অর্ধ আঙ্গুলি পর্যন্ত কেটে দেবেন। যখন আপনার চুল কাটা সম্পন্ন হয়ে যাবে, তখন আপনি তাহাল্লুল আল আসগর (প্রথম পর্যায়ের হালাল) লাভ করবেন। এরপর আপনি গোসল করবেন এবং এহরামের কাপড় খুলে ফেলতে পারবেন। পায়জামা, পাঞ্জাবি অথবা আপনার স্বাভাবিক যে পোশাক আছে সেটা পরিধান করে আপনি কাবা তাওয়াফ করে ফেলবেন। যদি ওই দিন (১০ জিলহজ) তাওয়াফে ইফাদা (কাবা তাওয়াফ) করতে না পারেন, তাহলে ১২ জিলহজ সূর্য অস্ত যাওয়ার আগপর্যন্ত আপনি তাওয়াফে ইফাদা করার জন্য সময় পাবেন।
আপনি দেখবেন সেদিন তাওয়াফ করার জন্য আপনার আর গাইডের অনুসরণ করতে হবে না, কারো সাহায্যও নিতে হবে না। আপনি প্রথম দিন তাওয়াফ করার পর থেকে প্রতিদিন এত নফল তাওয়াফ করবেন যে তাওয়াফে আপনি পারদর্শী হয়ে যাবেন। তাওয়াফের সময় তাওয়াফের সমস্ত শর্তগুলো মেনে চলতে হবে। কারণ ওই তাওয়াফটা আপনার জন্য ফরজ তাওয়াফ। তাওয়াফ শেষ করে আপনি দুই রাকাত সালাতুত তাওয়াফ নামাজ আদায় করবেন।
হজের এই তাওয়াফের ভেতরে ইজতিবা নেই এবং রমল নেই, এটা একটু মনে রাখবেন। যখন সালাতুল তাওয়াফ শেষ করবেন মাকামে ইব্রাহিমের পেছনে, যদি মাকামে ইব্রাহিমের পেছনে জায়গা না পান তাহলে মাতাফের যে কোনো জায়গায় সালাত আদায় করবেন। যদি সেখানেও জায়গা না পান, তাহলে মসজিদুল হারামের যেকোনো জায়গায় দুই রাকাত সালাত আদায় করবেন।
তারপর জমজমের পানি পান করবেন, এটা সুন্নাহ এবং পানি পান করার সময় অবশ্যই প্রত্যেকটা সুন্নাহ পালন করবেন এবং রাসুল (সা.) আর একটা কাজ করেছিলেন, কিছু পানি হাতে নিয়ে তিনি মাথায়ও দিয়েছেন। সুতরাং কিছু পানি মাথায়ও ছিটাবেন, এটাও একটা সুন্নাহ। এরপর আপনারা সাফা মারওয়া সাঈ করবেন। আমরা গত পর্বে দেখিয়েছি কীভাবে আপনারা সাফা মারওয়া সাঈ করবেন। যথানিয়মে সাঈ সম্পন্ন করে আপনি হোটেলে ফিরে আসবেন। আপনার আমিরের বা গাইডের আদেশের অপেক্ষায় থাকবেন, উনি বাস ঠিক করে বলবেন, তারপর রাত ১২টা বা ১টা বা ২টায় মিনার তাঁবুর উদ্দেশে রওনা হবেন। আপনি অবশ্যই ওই বাসের প্রথম যাত্রী হবেন। যদি ৪০ সিটের বাস হয়, তাহলে ৩৯তম বা ৪০তম যাত্রী আপনি না হওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ ৩৯ জন আল্লাহর মেহমানকে আপনি কষ্ট দেবেন না। আপনি প্রথমেই এসে বসবেন যেন কোনো হাজির কষ্ট না হয়। এভাবে আপনি মিনাতে চলে আসবেন।
১১, ১২ অথবা ১১, ১২, ১৩ এই দিনগুলোকে বলা হয় আয়ামে তাশরিকের দিন। রাসুল (সা.) বলেন, তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে পানাহার ও আল্লাহর জিকিরের দিন। এই দিনগুলোতে আপনাদের কাজ হবে খাওয়াদাওয়া করা, জিকির করা এবং তিনটি জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা। মনে রাখবেন ১০ তারিখে সূর্য উদয়ের পর থেকে সূর্য হেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। আর ১১, ১২ অথবা ১১, ১২, ১৩ এই তিনদিন সূর্য হেলে যাওয়ার পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্যে আপনার কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। প্রথমে জামারায় সুগরা (ছোট জামারা), দ্বিতীয়তে জারায় উসতা (মধ্যম জামারা) এবং শেষে জামারায় আকাবা (বড় জামারা)। তিনটি জামারায় সাতটি করে মোট ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হবে। আপনি যদি তিনদিন অবস্থান করেন তাহলে ৬৩টি পাথর নিক্ষেপ করতে হবে আর এর আগে ১০ তারিখে করবেন সাতটি, তাহলে মোট ৭০টি। এই ৭০টি পাথর আপনাকে নিতে হবে। আর যারা শুধু ১১ এবং ১২ তারিখ থাকবেন তাঁদের ৪৯টি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হবে। এখানে একটা সুন্নাহর জায়গা আছে। দয়া করে এই সুন্নাহর জায়গাটা আপনারা ভুলে যাবেন না। এটা হলো, জামারায় সুগরা এবং জামারায় উসতা এই দুটিতে যখন আপনি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন, প্রতিটাতেই নিক্ষেপের পরে আপনি দেখবেন সেখানে কিবলার চিহ্ন আছে, সেই কিবলামুখি হয়ে রাসুল (সা.)-এর অনুসরণ করে আপনি দোয়া করবেন। কিন্তু বড় জামারাতে, জামারায় আকাবাতে কঙ্কর নিক্ষেপের পর আপনি দোয়া করবেন না, আপনি মিনায় তাঁবুতে ফিরে যাবেন। এভাবে আপনারা এই তিনদিন পার করবেন। তারপর মক্কায় চলে আসবেন। মক্কায় শেষ কাজ হবে তাওয়াফে বিদা অর্থাৎ বিদায়ী তাওয়াফ করা। এই তাওয়াফ যেদিন আপনি করবেন, ওই দিন তাওয়াফে ইসতিবা নেই, রমল নেই এবং তাওয়াফের পর আপনাকে সাঈ করতে হবে না। এটাই হবে মক্কার শেষ কাজ। এই তাওয়াফ শেষ করে আপনাকে সালাতুত তাওয়াফ পড়তে হবে। মনে রাখবেন যতদিনই আপনি নফল তাওয়াফ করবেন এরপরেও আপনাকে সালাতুত তাওয়াফ নামাজ পড়তে হবে। যদি সম্ভব হয় মুলতাজিমকে আঁকড়ে ধরে আপনি দোয়া করবেন। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন, পিতা-মাতার জন্য দোয়া করবেন, ভাই, বোন, সন্তানদের জন্য, স্বামী স্ত্রীর জন্য, স্ত্রী স্বামীর জন্য দোয়া করবেন। আপনার প্রতিবেশীর জন্য দোয়া করবেন। সমস্ত মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করবেন। এই দোয়ায় আমাদেরকেও শামিল করবেন যাতে আল্লাহ আপনাকে সহজ করে দেন।
এই পর্যন্ত হজের আনুষ্ঠানিকতা, এই পর্যন্ত হজের যেই সেশনগুলো আপনাদেরকে দেখিয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ চেষ্টা করবেন হজের প্রত্যেকটি নিয়ম যেভাবে রাসুল (সা.) দেখিয়ে দিয়েছেন, সেভাবে পালন করতে। একটি নিয়মও যেন অন্য কোনোভাবে হয়ে না যায়, এই ব্যাপারে আল্লাহর কাছেও সাহায্য চাইবেন। আল্লাহ আপনাদের একটা হজ-এ মাবরুর দান করুন, আপনার সমস্ত প্রচেষ্টাকে কবুল করুন এবং আপনার গুনাহগুলো মাফ করে দিন। আমিন।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।