জেদ্দায় আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশ
সৌদি আরবের বাণিজ্যিক নগরী জেদ্দায় তৃতীয় আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ছয়টি সরকারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে এই বইমেলা শুরু হয়। ১০ দিনব্যাপী এই মেলা শেষ হবে ২৪ ডিসেম্বর।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, নজরুল ইনস্টিটিউট, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর মেলায় অংশ নিয়েছে।
মক্কার আমির প্রিন্স খালেদ আল ফয়সাল মেলাটির উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি সদ্য প্রয়াত সৌদি আরবের বিশিষ্ট কবি খালাফের স্মরণে সম্মাননা প্রদান করেন। ৪২টি দেশের পাঁচ শতাধিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক এই বইমেলায় অংশ নিয়েছে।
মেলায় বাংলাদেশের স্টলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ করা গেছে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন ভ্রমণকাহিনী, শিশু-কিশোরদের পত্রিকা, বাংলাদেশের প্রকৃতি ও পরিচিতিমূলক বই খুঁজতে দেখা গেছে।
প্রবাসী সাংবাদিক মো. ফিরোজ জানান, মেলায় এসে একুশে বইমেলার আমেজ খুঁজে পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে মেলায় আরো বড় আকারে সরকারি-বেসরকারি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘সৌদি আরবে বিশাল বাংলাদেশি কমিউনিটির পাশাপাশি বিদেশিদের কাছে মেলার মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছি। প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে এই মেলা ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া মেলার মাধ্যমে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সংস্কৃতির মেলবন্ধন গড়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, ‘বইমেলার মাধ্যমে সৌদি আরবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি বিদেশিদের কাছে দেশের সংস্কৃতির পরিচয় ঘটাতে সক্ষম হবে।’
রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, মেলায় আগত নতুন প্রজন্ম আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পারবে। ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে এই মেলায় অংশগ্রহণের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গোলাম মসীহ আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বইমেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ও জেদ্দার কনস্যুলেট জেনারেলের সার্বিক সহযোগিতায় বইমেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
মেলায় চীন, জাপান, তুর্কমেনিস্তান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের দল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। মেলায় নিয়মিত চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।