অভিনন্দন
শেখ হাসিনা বিশ্ব শান্তির দিশারি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সততা, নিষ্ঠা, রাজনৈতিক দৃঢ়তা, গণতন্ত্র, শান্তি, সম্প্রীতি ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের অনন্য রূপকার আর মানব কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ। এই দরদী নেতা দুঃখী মানুষের আপনজন; নির্যাতিত জনগণের সহমর্মী তথা ঘরের লোক। তিনি বলেছেন, ‘বাবার মতো আমাকে যদি জীবন উৎসর্গ করতে হয়, আমি তা করতে প্রস্তুত।’ শান্তির অগ্রদূত শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য নিজের প্রাণকে তুচ্ছ করতে পারেন নির্দ্বিধায়। সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভরসার কেন্দ্রবিন্দু তিনি। এজন্য তাঁর অনুপস্থিতি কারো কাম্য হতে পারে না। ধৈর্য ও সাহসের প্রতিমূর্তি শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের মানসকন্যা, দেশরত্ন, কৃষকরত্ন, জননেত্রী- বহুমাত্রিক জ্যোতিষ্ক। তাঁকে কেন্দ্র করে, তাঁর নেতৃত্বে আবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশের সবকিছু। তিনি বিশ্ব সেরা নেতাদের সামনে শান্তির মঙ্গল বারতা প্রকাশ করেন অসঙ্কোচে। তিনি ১২ সেপ্টেম্বর(২০১৭) ছুটে গেছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখার জন্য, আর সে কথা বিশ্ব মিডিয়াতে বলেছেন। ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় ভারাক্রান্ত মনে প্রকাশ করেছেন অসহায় মানুষের জন্য দরদ। তিনি ওই ভাষণে মিয়ানমার সমস্যা সমাধানে পাঁচ দফা সুপারিশও পেশ করেন। তাঁর ভাষায়-
‘রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাচ্ছি। এ প্রসঙ্গে আমি কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করছি : প্রথমত, অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা; দ্বিতীয়ত, অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করা; তৃতীয়ত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা; চতুর্থত, রাখাইন রাজ্য হতে জোরপূর্বক বিতাড়িত সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা; পঞ্চমত, কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।’
আসলে শেখ হাসিনার মনজুড়ে আছে দুখী মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মী হৃদয়ের আবেদন। তিনি দেশেরর পরিপ্রেক্ষিত ছেড়ে অগ্রসর হয়েছেন বিশ্ব শান্তির আঙিনায়। তাঁর সরকারের সাফল্যও বিস্তর। কারণ সরকারের সাফল্য নির্ভর করে শক্তিশালী নেতৃত্বের ওপর। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর সংজ্ঞার্থ অনুসারে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সংঘাতপূর্ণ প্রেক্ষাপটে নেতা ও অনুসারীগণ কর্তৃক স্বাধীনভাবে অথবা সমঝোতাপূর্ণভাবে স্থিরকৃত কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও মূল্যবোধ, বিভিন্ন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং অন্যান্য সম্পদরাজি ব্যক্তির দ্বারা সহজলভ্য করার পরস্পর বিনিময়কৃত প্রক্রিয়াই হলো নেতৃত্ব। এই সংজ্ঞায় রাজনীতি ও উন্নয়নের ধারণা বিজড়িত। জনগণের মৌলিক চাহিদা ও প্রয়োজনগুলো একটি ভিশনের মাধ্যমে উচ্চতর চাহিদা ও প্রয়োজনে রূপান্তরিত করা নেতৃত্বের মৌল লক্ষণ। জনগণের কাছে নেতৃত্বের একটি ভিন্নতর আবেদন থাকে যা কোনো ব্যক্তির গুণাবলির প্রতি জনগণের মধ্যে আকর্ষণ ও সক্রিয়তা সৃষ্টি করে। তিনি নির্দিষ্ট গুণাবলির দ্বারা সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা। তাঁর রয়েছে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যতিক্রমী ক্ষমতা যা সাধারণ ব্যক্তির মধ্যে অনুপস্থিত। এজন্য তিনি নেতা হিসেবে গণ্য হয়ে থাকেন। শেখ হাসিনা প্রকৃতপক্ষে আলাদা, ভিন্ন, স্বতন্ত্র ও নেতৃত্বের গৌরবজনক আসনে সমাসীন। তিনি জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করেছেন; সংকট উত্তরণে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তিনি জনতার আকাঙ্ক্ষা এবং টিকে থাকার বাস্তবতার মধ্যে সেতু বন্ধনের সাহায্যে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে এনেছেন। তাঁর নেতৃত্বের সাফল্যে বাংলাদেশ আজ গৌরবজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
১৯৭৪ সালে মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাস্তবতায় ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে আমেরিকার তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এ ধরনের মন্তব্য করেই ক্ষান্ত হননি তিনি বিভিন্ন দেশে ও সংস্থাকে পরামর্শ দেন বাংলাদেশকে কোনো প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা না করার। তাদের বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্রের পরও বাংলাদেশ আজ বিশেষ অবস্থানে পৌঁছেছে। এ কারণে শেখ হাসিনার শাসনামলেই কিসিঞ্জারের পরবর্তী নেতৃবর্গ ভিন্ন সুরে কথা বলছেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশকে ‘নাম্বার ওয়ান উন্নয়নমুখী দেশ’ বলেছেন। সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালের মতে, এমডিজির লক্ষগুলো অর্জনে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনেক এগিয়ে গেছে। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্যে ঘাটতি দেশ থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে পরিচিতি লাভ করেছে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর সন্ত্রাস-মৌলবাদ দমনে শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন ১০ ব্রিটিশ এমপি। এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে জনগণের প্রতি শেখ হাসিনার অঙ্গীকারদীপ্ত নেতৃত্বের জন্য।
বর্তমান প্রজন্মের কাছে শেখ হাসিনা এক আশ্চর্য সাহসী রাজনীতিকের নাম; যাঁর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলেছে। তা ছাড়া শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধের বিচার শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। তিনি মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে সব বিরূপ পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে নিয়ে এসেছেন। তাঁর মন্ত্রিসভায় যুক্ত হয়েছেন অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান রাজনীতিকরা। কিছু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও উন্নয়ন সহযোগী ও অংশীদার বানিয়ে ফেলেছেন রাশিয়া ও জাপানকে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুত্বের বন্ধন আরো সুদৃঢ় হয়েছে। পূর্বমুখী কূটনীতির অংশ হিসেবে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। নিজের সরকারের উন্নয়নের মডেল অন্যান্য দেশের কাছে উপস্থাপন করে প্রশংসিত হয়েছেন।
শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২৭টি পুরস্কার ও পদক অর্জন করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন ও তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য জাতিসংঘ ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ লাভ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের ৭০তম অধিবেশনে তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে জাতিসংঘের সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ওই বছর ২১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো’ (জিএসএসডি এক্সপো)-এর সমাপনী উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এ অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেছেন তাঁর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
ডিজিটাল ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নেওয়া এবং শিক্ষার প্রসারে বৈপ্লবিক ধ্যান-ধারণার সমন্বয়ের জন্য শেখ হাসিনাকে এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো তার ঘোষণায় বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশে তৃণমূলে তথ্যপ্রযুক্তি প্রসার, সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন, সর্বসাধারণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর মাধ্যমে সমাজে অবহেলিত মানুষের জীবনধারার মানোন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে অগ্রগতি এবং সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপনের জন্য এ ‘ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড’ পাবার যোগ্যতা অর্জন করেন তিনি।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশ এবং প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষিণের দেশগুলোর সামগ্রিক উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার দিগন্ত বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ২০০৮ সালে জাতিসংঘে ‘সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন’ গঠিত হয়। তখন থেকে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটির বার্ষিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১৪ সালের আয়োজনটি ছিল সপ্তম এক্সপো। প্রতিবছরের সমাবেশে উন্নত বিশ্বের উন্নয়ন পরিক্রমার অভিজ্ঞতা অবহিত হয়ে উন্নয়নশীল বিশ্বে সেই ধারা প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে এই সম্মেলনের গুরুত্ব অপরিসীম। ‘সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন’-এর গঠন ও উদ্দেশ্য বিবেচনায় আনলে শেখ হাসিনার এই পুরস্কার প্রাপ্তি আমাদের দেশের জন্য অবশ্যই গৌরবের এবং ক্রম-অগ্রসরমান উন্নয়নের স্বীকৃতি।
কয়েক বছর আগে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ দাবি করেছে, ‘বাংলাদেশের সব ক্ষমতা এখন শেখ হাসিনার হাতে। বিরোধী দল রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছে। সবই এখন সরকারের হাতের মুঠোয়। অন্তহীন লড়াইয়ে জিতে চলেছেন এক নারী।’ অথচ এই ম্যাগাজিনটিই কয়েক বছর আগে একাধিক সংখ্যায় শেখ হাসিনা সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিবেদন ছাপিয়েছিল। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীর বিচার ইস্যুতে কিংবা র্যাবের প্রসঙ্গে তাদের ভূমিকা ছিল ন্যক্কারজনক; কিংবা পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের টালবাহানার সময় মহাজোট সরকারকে নির্মমভাবে আক্রমণ করেছিল। সেই সাময়িকী আজ শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ- এর চেয়ে সুখবর আর কী আছে আমাদের কাছে। নিশ্চয় তাঁর সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড পাওয়া উপলক্ষে সেই শুভ বারতা উচ্চারিত হয়েছে সারা বিশ্ববাসীর কাছে। ‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এ প্রকাশিত ‘পলিটিক্স ইন বাংলাদেশ : ওয়ান অ্যান্ড অনলি ওয়ান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনার শাসন ন্যায়সঙ্গত। সেটার কারণ দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের সফলতা। ২০০৯ সালে তিনি ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে দারিদ্র্যের হার দ্রুত কমে এসেছে। সাম্প্রতিক একটি জনমত জরিপ অনুসারে নির্বাচনের আগের তুলনায় সরকার এখন আরো বেশি জনপ্রিয়। বিদেশি সরকারগুলো এখন শেখ হাসিনার সঙ্গেই ব্যবসা করতে ইচ্ছুক। ভারত, চীন, জাপান, রাশিয়া তার প্রধান উদাহরণ। এ দেশবাসী জানে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। সামাজিক সুরক্ষামূলক কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ও দুঃস্থ ভাতা, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী ও অসহায়দের জন্য ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, ভর্তুকি মূল্যে খোলা বাজারে খাদ্যপণ্য বিক্রি, ভিজিডি, ভিজিএফ, টেস্ট রিলিফ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় খাদ্য সহায়তা, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে চমৎকার সাফল্য দেখিয়েছে। এ ছাড়া আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি প্রতিষ্ঠায় এদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এজন্যই চীন-জাপান-ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানসহ বিশ্বের সব নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন নিঃশঙ্কচিত্তে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ৭ সেপ্টেম্বর(২০১৪) ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। বিশ্ব পর্যায়েও প্রধানমন্ত্রীর নারী ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়নে রয়েছে জোরালো কণ্ঠ। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০১৫-পরবর্তী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে আমরা আমাদের রূপকল্প-২০৪১-এর ভিত্তিতে একটি উন্নত, সুশিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গঠনের সোপান রচনায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই কর্মযজ্ঞে নারী ও মেয়ে শিশুরা সব সময়ই আমাদের বিবেচনার অগ্রভাগে থাকবে।’
সম্প্রতি প্রায়ই অভিযোগ তুলে বলা হয়ে থাকে আওয়ামী লীগ সরকার মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করেছে- বাকশাল কায়েম করছে ইত্যাদি। এ কথা যে সর্বৈব মিথ্যা তা শেখ হাসিনা সরকারের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ মেলে। এ সরকারের আমলেই ৮ম সংবাদপত্র ওয়েজবোর্ড গঠন ও ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে অনুদান প্রদান করা হয়। বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে সম্প্রচারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো ১৪টি কমিউনিটি রেডিওর লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন গঠন এবং সংশ্লিষ্ট বিধি ও প্রবিধিমালা প্রণয়ন সম্পন্ন- মিডিয়া অঙ্গনের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। দেশের দুটি ধারার রাজনৈতিক বলয়ের একটির লক্ষ্য, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশকে উন্নত মানের রাষ্ট্রে পরিণত করা। অন্যদিকে আরেকটি শক্তির অভিলাষ, যেকোনো মূল্যে ১৫ কিংবা ২১ আগস্টের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়া। কারণ, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের মান বেড়েছে, বেড়েছে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতা আকড়ে থাকার অভিনবত্ব। শেখ হাসিনা সরকারের সময় সারা দেশে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
মূলত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে- এটা নিশ্চিত। তাই আওয়ামী পরিবারের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সব অশুভ শক্তির মোকাবিলা করতে হবে। সামনে বাধা এলে তা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলায় সচেষ্ট থাকতে হবে। ৭১-এর পরাজিত শক্তিরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে দেশের স্বাধীনতা ও স্বপ্নকে হত্যা করতে চেয়েছিল। শেখ হাসিনা জীবিত রয়েছেন। তিনিই তাঁর পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্ব বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। কেবল এ দেশ নয় বিশ্ব শান্তির দিশারিও শেখ হাসিনা।
লেখক : অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ এবং পরিচালক, জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।