রোজ লক্ষ রাখুন প্রস্রাবের রঙের দিকে
কেউ যদি আপনাকে বলে যে রোজ নিজের প্রসাবের রং খেয়াল করবেন, তাহলে সেটা হয়তো শুনতে খুব হাস্যকর শোনাবে। কিন্তু নিজের শরীরের সুস্থতা পরীক্ষা করতে এই অভ্যাসের আসলে কোনো বিকল্প নেই।
জীবনধারা বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আপনার প্রস্রাবের রং দেখে স্বাস্থ্যের বর্তমান পরিস্থিতি অনুমান করা যায়। আপনি কোনো ভয়াবহ রোগে ভুগছেন কি না সেটিও বোঝা যায়।
অনেক সময় দেখা যায় প্রস্রাব দিয়ে কম-বেশি রক্ত যাচ্ছে। বেশিরভাগ সময়ই আমরা এটিকে এড়িয়ে যাই। কিন্তু এই এড়িয়ে যাওয়া বিষয়টিই আপনার জীবনের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। কারণ প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া মূত্রথলির ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ। তাই, সময় থাকতেই এ ব্যাপারে সতর্ক হোন।
প্রস্রাবের সাথে রক্ত দেখলেই যে আপনি ক্যানসারে আক্রান্ত বিষয়টা তা নয়। তবে, ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরি। এ ছাড়া মূত্রথলির ক্যানসারের আরো কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেমন : ধীরে ধীরে প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাব করা শেষেও, শেষ হয়নি এমনটা মনে হওয়া, কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব না হওয়া। এসব লক্ষণ বুঝতে পারলেও অতিসত্ত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মূত্রথলির ক্যানসার কেন হয় তা সুনির্দিষ্ট নয়। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগটি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেহেতু মূত্রথলির ক্যানসার খুব ধীরে ধীরে ছড়ায় তাই বিভিন্ন সার্জারি ও থেরাপির মাধ্যমে এর নিরাময় সম্ভব।
তবে প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ ভালো। তাই মূত্রথলির ক্যানসার থেকে দূরে থাকতে গড়ে তুলুন কিছু খাদ্যাভ্যাস। যেসব খাবার খেলে মূত্রথলির ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়, খাবারের তালিকায় রাখুন সেসব খাবার।
ব্রোকোলি : জনপ্রিয় এই সবজিতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুবই কম। আর মূত্রথলির ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে কার্বোহাইড্রেটের। ব্রোকোলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যালস। যা মানবদেহের কোষের পরিবর্তন রোধ করে। তাই ক্যানসারের সম্ভাবনাও কমে যায়।
বেদানার রস : বেদানার রসেও থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যানসার প্রতিরোধক। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহে বিদ্যমান ক্যানসার কোষগুলোর প্রবাহ রোধ করে। রোজ বেদানার রস পান করলে তা মূত্রথলির ক্যানসারকে হাড়ে স্থানান্তর থেকে রক্ষা করে।
সয়া : বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, সয়াতে থাকে আইসোফ্লেভন্স, যা দেহে ক্যানসারের প্রদাহ, ক্যানসার হওয়াসহ এর বিস্তার প্রতিরোধে কাজ করে। তাই যাঁরা নিয়মিত ডায়েট করেন তাঁদের জন্য সয়া খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ।
গাজর : গাজরে প্রচুর পরিমাণে বেটা-ক্যারোটিন থাকে যা পরে ভিটামিন ‘এ’ তে রূপান্তরিত হয়। বেটা ক্যারোটিন মূত্রথলির সুস্থতায় সরাসরি কাজ করে। এতে খুব ভালো পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও থাকে। তাই নিয়মিত গাজর খেলে মূত্রথলির ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আখরোট : আখরোট আমাদের অতি পরিচিত একটি বাদাম। এটিও মূত্রথলির ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। আখরোটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ কম থাকলেও থাকে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। আখরোট মূত্রথললির ক্যানসারের সঙ্গে জড়িত আইজিএফ নামের একটি হরমোনকে দূর করে এবং ক্যানসারের হুমকি কমিয়ে দেয়।