‘উনদাল’! নাম শুনেই খানিকটা খটকা লাগছে তাই তো। এ আবার কেমন নাম নিশ্চয়ই বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী খাবার পাওয়া যায় ‘উনদালে’।সিলেটে ঘুরতে এসে পূর্ব জিন্দাবাজারে উনদালে খাওয়া হবে না তা কি করে হয়। ভেতরে প্রবেশেই একজন হাসি মুখে স্বাগত জানাবে  এবং অসাধারণ পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে কানে বাজতে থাকবে পন্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া বাঁশির সুর।দোতলা এ রেস্তোরাঁর সবখানে রয়েছে  সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বাঁশ-বেত আর কাঠের নির্মাণশৈলীর কারুকার্য। টেবিল-চেয়ারেও রয়েছে তারই ছাপ। দেয়ালজুড়ে সিলেটের ঐতিহ্যের নানা আলোকচিত্র। রেস্তোরাঁর ভিতরের পরিবেশ বেশ ছিমছাম, শান্ত যা মনকে শীতল অনুভব করে দিবে। ভেতরের পুরো কক্ষটির অর্ধেক দোতলা এমন অসাধারণ নির্মাণশৈলীর জন্য স্থপতি রাজন দাস ২০০৯ সালে জাতীয় পর্যায়ে ‘আইসটুডে-একোয়া পেইন্টস বেস্ট ইন্টেরিয়র ডিজাইন’ পুরস্কার লাভ করেন। 
শুরুটা যেভাবে হলো
উনদালের পথচলা শুরু হয় ছয়জন উদ্যোক্তা নিয়ে। একটি সুন্দর ও ভিন্ন নামকরণে রেস্তোরাঁ করার চেষ্টা তাঁরা বছর কয়েক ধরে করছিলেন। নাম নির্ধারণ হওয়ায় শুরু হয় নামের সঙ্গে সংগতি রেখে খাবার-দাবার আয়োজন এবং রেস্তোরাঁর অবকাঠামো তৈরি। সবমিলিয়ে ২০০৮ সালের পুরো জানুয়ারি ধরে চলে প্রস্তুতি। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ যাত্রা শুরু করে উনদাল রেস্তোরাঁ।

নামের পিছনের কারণ 
উনদাল’ আঞ্চলিক শব্দ। সিলেট অঞ্চলে গ্রাম এলাকায় রান্নাঘরকে ‘উনদাল’ বলে ডাকা হয়। উনদাল মানে চুলা। সম্ভবত উনুন থেকে উনদাল। রেস্তোরাঁটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাউদ্দিন বাবলু বললেন , উনদাল নামেই রয়েছে নাড়ির টান। চুলা থেকে খাবার সরাসরি পাতে দিয়ে ভোজনবিলাসীদের তুষ্ট করাই আমাদের লক্ষ্য।’
উনদালের বিশেষ খাবার 
বেশ ঘরোয়া পরিবেশে বসার পর পরই অর্ডার দেওয়ার আগেই দিবে পাঁপড় ভাজা। তা খেতে খেতে ভাবতে থাকবেন কী অর্ডার দেওয়া যায়।  ১৩০টা আইটেমের মধ্যে সিলেটের আইটেম হিসেবে স্পেশাল সাতকরা  আইটেম। সাতকরার সাত রকমের আইটেম রয়েছে। এ ছাড়া কাবাবের মধ্যে তন্দুরি চিকেন, চিকেন টিক্কা, রেশমি, হারিয়ালি কাবাব, উনদাল স্পেশাল বিরিয়ানি, নয়রতন কোরমা, ডাল মাখানি, ইয়েলো ডাল, পালক পনির সিজনাল ইত্তাদি।বিভিন্ন স্বাদের এই খাবারের দাম তুলনামূলক সাশ্রয়ী।
খাবারের দাম 
জনপ্রতি সর্বোচ্চ ৬৫০ থেকে সর্বনিম্ন ৪০ টাকায়ও খাবার পাওয়া যাবে উনদালে। উনদালের পুরোটাই থাকে রেস্তোরাঁকর্মীদের নজরদারির মধ্যে। দিন ও রাতে পালা করে ২৪ জন রেস্তোরাঁকর্মী থাকেন পরিবেশনার কাজে।