বছরে কিডনি বিকল হচ্ছে অজস্র মানুষের
বর্তমানে প্রায় দুই কোটি মানুষ বিভিন্ন ধরনের কিডনি রোগে আক্রান্ত। যাদের মধ্যে প্রতি বছর ৩৫-৪০ হাজার রোগীর কিডনি বিকল হয়ে যাচ্ছে। আজ ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দিবস’ উপলক্ষে ‘সবার জন্য সুস্থ কিডনি’-থিম ধারণ করে মিরপুরস্থ কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অডিটরিয়ামে কিডনি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সড়কে র্যালি শেষে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ তথ্য জানান।
কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক শাহলা খাতুন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আসাদুল ইসলাম। বক্তব্য দেন কিডনি ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক মুহিবুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনী ফেরদৌস রশিদ প্রমুখ।
জাতীয় অধ্যাপক শাহলা খাতুন বলেন, দেশে কিডনি রোগ চিকিৎসায় ইতিমধ্যে অভুতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। কিডনি সংযোজনের পর একজন রোগী শুধু সুস্থ হয়েই উঠেন না, বরং তিনি পারিবারিক স্বাভাবিক জীবনযাপনের পাশাপাশি সন্তান ধারণেরও ক্ষমতা রাখেন।
অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।।
অধ্যাপক হারুন আর রশিদ জানান, কিডনি রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করলে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। এ জন্য কিডনি রোগ হওয়ার আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই রোগ প্রতিরোধে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা, অতিরিক্ত লবণ পরিত্যাগ, ফাস্টফুড, চর্বিজাতীয় ও ভেজাল খাবারসহ ধূমপান বর্জন করার পরামর্শ দেন তিনি।
বক্তারা আরো বলেন, দেশে প্রতি বছর হঠাৎ কিডনি আক্রান্ত হয়ে ১০-১৫ ভাগ রোগী এবং সমপরিমাণ রোগী ধীরগতি কিডনি বিকল হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। বেশির ভাগ হঠাৎ কিডনি বিকল হয় পানিবাহিত ডায়রিয়া, ডেঙ্গুসহ বিশেষ ধরনের ম্যালেরিয়া রোগে। এ ছাড়া প্রসবকালীন জটিলতা, ওষুধের ব্যবহার বিশেষভাবে দায়ী। তবে কিডনি অকেজো হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ও নেফ্রাইটিস।
কিডনি অকেজো রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল যা ৯০ ভাগ মানুষের সাধ্যের বাইরে। তাই কিডনি রোগ হওয়ার আগে কিডনি সুস্থ রাখতে সবার সচেতনতা জরুরি। তবে কারো কিডনি রোগ হয়েছে কি না, তা জানতে বছরে অন্তত একবার হলেও রক্তের ক্রিয়েটিনিন ও প্রস্রাব পরীক্ষা করা উচিত।