মানসিক স্বাস্থ্যের প্রাথমিক চিকিৎসা কী?
১০ অক্টোবর ছিল বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল মানসিক স্বাস্থ্যে মর্যাদাবোধ : সবার জন্য প্রাথমিক মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা (সাইকোলজিক্যাল ফাস্ট এইড)। মানসিক স্বাস্থ্যের প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়টি কী? কীভাবে এতে কাজ করা হয়? বিষয়গুলো নিয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৫৬৪তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. তানিয়া রহমান। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সোস্যাল ওয়ার্ক প্রোগ্রামের পরিচালক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : এবারের মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে সাইকোলজিক্যাল ফাস্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা বলতে আসলে কী বোঝানো হচ্ছে?
উত্তর : ফার্স্ট এইড বলতে আমরা বুঝি একটি ফার্স্ট এইড বক্স। যেখানে থাকবে ব্যান্ডেজ, কটন, যেখানে থাকবে স্যাভলন, ডেটল—প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য যা যা দরকার। এগুলো হচ্ছে শারীরিক প্রাথমিক চিকিৎসার ফার্স্ট এইড। আর মানসিক চিকিৎসার ফার্স্ট এইডটা কী? এটি সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড। ওখানে কোনো ওষুধ বক্সের ভেতর ভরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। এই ফার্স্ট এইডের জন্য আমার সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমার তখন দেখতে হবে যখন একটি ধ্বংসাত্মক বিষয় হলো, কোনো একটি জায়গায়, ধরেন রানা প্লাজা। ওই জায়গাটাতে কী দরকার? ওখানে তখন তার নিরাপত্তা দরকার, যে আমি বেঁচে আছি, বেঁচে থাকব। ওখানে কিন্তু অনেক লোক সাহায্য করেছে। তবে পেশাগত সোস্যাল ওয়ার্কার, সাইকোলজিস্ট, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, ক্লিনিক্যাল সোস্যাল ওয়ার্কার সবারই দরকার। ভুক্তভোগী ব্যক্তি তখন নিরাপত্তাহীন মনে করে নিজেকে, তাই ওই নিরাপত্তাটা তাকে ফিরিয়ে দেওয়া যে আমরা আছি তোমার সাথে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ওই মুহূর্তে তারা খুব অসহায় হয়ে যায়। এই প্রাথমিক চিকিৎসাগুলোই দরকার।
তখন সময়মতো তাদের পাশে দাঁড়ানো, সমস্যার সময়গুলোতে পাশে দাঁড়ানো, পাশে দাঁড়িয়ে পেশাগতভাবে একে ব্যবস্থাপনা করা, এগুলো করে থাকে। কারণ হয় কি অনেক সময় যদি আমরা আহা, উহু করে বলি তোমার পা নাই কী হবে, খুব সমবেদনা জানালাম। ওই মুহূর্তে সেটা করার কথা নয়। এখানে তাকে শক্ত করা দরকার। তাই যদি পেশাগতভাবে না যায়, তাহলে কিন্তু একটু সমস্যা হয়ে যায়। আমরা বলি সবাইকে এখানে সাহায্য করতে। আসলে সবার সাহায্য তখন কাজে লাগবে না।
আমাদের যখন কোনো কিছু পুড়ে যায়, এখানে বার্নাল না দিয়ে অনেকে এটা সেটা দিতে বলে। তাহলে কী হবে? অনেকে অনেক রকম টোটকা কাজ করার চেষ্টা করে, দেখা যায় সেখান থেকে আরো উল্টা ঘটনা ঘটে। অনেকে বলে, একটু লবণ লাগাও, পেস্ট লাগাও। কোনটা যে ঠিক? একেকজন একেক কথা বলে। তেমনি এখানেও বিষয়টি সেরকম। যদি পেশাগতরা যেহেতু বিষয়টি জানে তার কথাটাই এখানে কাজে দেয়।