পোড়া ক্ষতে কাঁচা ডিম, ময়দা, চুন ইত্যাদি লাগানো কি ঠিক?
পুড়ে গেলে আমরা এমন অনেক কিছুই করি, যা মোটেও উচিত নয়। শরীরের কোনো স্থান আগুন বা গরম পানিতে পুড়ে গেলে অনেকেই সেখানে কাঁচা ডিম ভেঙে মাখিয়ে দেন। সত্যি সত্যি দাঁত মাজার পেস্টও লাগিয়ে দেন কেউ কেউ। পোড়া স্থানে তেল কিংবা যেকোনো ক্রিমও লাগান অনেকে। কিন্তু এসবের কোনোটিই ঠিক নয়। সাধারণ লোকজন পোড়া স্থানে এসব উপকরণ লাগান, কারণ হচ্ছে, পোড়ার যন্ত্রণা লাঘব করা। বস্তুত এসব ব্যবহারে যন্ত্রণা লাঘব তো হয়ই না, উল্টো ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ে।
আসল কথা হচ্ছে, পোড়া স্থানে এসব জিনিস লাগালে কোনো উপকার হয় না, বরং ক্ষতি হয়। আর এই ক্ষতি অনেক সময় মারাত্মক হয়ে থাকে। পুড়ে যাওয়ার পর পোড়া স্থান ঠান্ডা করার জন্য ক্ষতস্থানে সরাসরি বরফ বা বরফপানি লাগালে উপকার হবে। বরফ পাওয়া না গেলে টিউবওয়েল বা ট্যাপের পানি একটানা কিছুক্ষণ ঢেলে দিতে হবে। এভাবে ১৫/২০ মিনিট পোড়া স্থানে পানির প্রবাহ রাখলে জ্বালা-যন্ত্রণা কম হয় এবং অনেক সময় ফোসকা পড়ে না।
এই ফোসকা নিয়েও কথা আছে। অনেকেই এই ফোসকা ভেঙে ফেলেন। এটিও ঠিক নয়। ফোসকা ভেঙে ফেললে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। আরেকটি কথা, পোড়া রোগীকে হাসপাতালে নিতে দ্বিধা করলে চরম ভুল করবেন। পোড়া রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে শিরাপথে স্যালাইন, অ্যান্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ওষুধ দেওয়া খুবই জরুরি। অন্যথায় রোগীর প্রাণনাশের আশঙ্কাই বেশি। তবে সামান্য পোড়ায় সে রকম ঝুঁকি কম। কিন্তু কোনটি সামান্য পোড়া আর কোনটি বেশি পোড়া, সেটি চিকিৎসককেই নির্ধারণ করতে দিন। পোড়ার ক্ষতস্থানে মলম যদি লাগাতে চান, তবে বার্নল বা ডারমজিন জাতীয় মলম লাগান।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।