অ্যানাল ফিসার কী?
অ্যানাল ফিসার বা মলদ্বার চিরে যাওয়া বিব্রতকর একটি রোগ। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে রোগ জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫২৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. আহম্মেদ-উজ-জামান। বর্তমানে তিনি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : অ্যানাল ফিসার বিষয়টি আসলে কী?
উত্তর : অ্যানাল ফিসার অর্থ মলদ্বার চিরে যাওয়া। মলদ্বারের মুখে যে পর্দাটা থাকে, সেটি খুব নরম থাকার জন্য সহজেই এই মলদ্বারটা চিরে যেতে পারে। বিশেষ করে যখন মানুষের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় বা মলত্যাগ করতে, মলদ্বারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। এই চাপ প্রয়োগ করলে মলদ্বারটা চিরে যায়। সাধারণত মলদ্বারের সামনে ও পেছনে অ্যানাল ফিসার তৈরি হয়। তবে এর বাইরেও যে বিভিন্ন স্থানে হবে না, যেহেতু এটি একটি গোলাকার অংশ, যেকোনো স্থানেই এই অ্যানাল ফিসার হতে পারে।
প্রশ্ন : সাধারণত কী কারণে মলদ্বার চিরে যায় বা অ্যানাল ফিসার তৈরি হয়?
উত্তর : মলদ্বারে চাপ দেওয়ার অভ্যাস থাকলে, মল যদি স্বাভাবিকভাবে না আসে, বিশেষ করে যখন কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, তখন মলদ্বার চিরে যাওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
প্রশ্ন : কারা সাধারণত এই ঝুঁকির মধ্যে থাকেন?
উত্তর : শিশু ও অন্য সব বয়সের মানুষের এটা হতে পারে। আজকাল আমরা শিশুদের বা কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েদের ভেতরে এগুলো বেশি পাই। এর কারণ হচ্ছে তাদের খাদ্যাভ্যাস। বেশিরভাগ ছেলেমেয়েই এখন জাঙ্কফুড পছন্দ করে। যেসব খাবার খেলে এমনতেই মল খুব শক্ত হয়। এর জন্য এদের মধ্যে এই ধরনের প্রবণতা ইদানীং বেশি দেখা যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য হয় এমন ধরনের খাবার বেশি খাওয়ার কারণেই এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়।
প্রশ্ন : কোন লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে একজন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন?
উত্তর : যখন প্রথমেই এই রোগ দেখা যায়, তখনই একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ হচ্ছে যে এই মলদ্বার বা অন্ত্রের বিষয়গুলো সার্জারির ভেতরে হলেও ভিন্নধর্মী। সেই হিসেবে আমি মনে করি, একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ শুরুতে নিলে এর চিকিৎসাটা সহজ হবে। কারণ, এ ক্ষেত্রে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, রোগের শুরুতে যদি কিছু খাদ্যাভ্যাস পরির্বতন করা যায় বা কিছু জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা যায়, সে ক্ষেত্রে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়।