বন্ধ্যত্বের জন্য কি শুধু নারীই দায়ী?
সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে লিনা ইয়াদভ পরিচালিত ও অজয় দেবগন প্রযোজিত চলচ্চিত্র ‘পারছেদ’। চলচ্চিত্রে লাজ্জো চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাধিকা আপ্তে। সেখানে দেখানো হয়, লাজ্জোর সন্তান হয় না। এ জন্য তাকে বাঁনঝা বা বন্ধ্যা বলে তার স্বামী সারাক্ষণ গালমন্দ করতে থাকে। সমাজও তাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে। এ জন্য অনেক অপমানিত, অপদস্থ হতে হয় লাজ্জোকে। তবে শেষে দেখা যায়, সন্তান না হওয়ার সমস্যাটি লাজ্জোর নয়, তার স্বামীর।
আমাদের সমাজে লাজ্জোর মতো ঘটনা অনেক রয়েছে, যেখানে বন্ধ্যত্বের জন্য কেবল নারীকে দায়ী করা হয়। তবে আসলেই কি নারী একাই বিষয়টির জন্য দায়ী?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘বন্ধ্যত্বের জন্য কেবল নারী দায়ী নয়। পুরুষও দায়ী হতে পারে। পুরুষের যদি শুক্রাণু উৎপাদনে ত্রুটি থাকে, শুক্রাণু নষ্ট থাকে বা অ্যাকটিভ (কর্মক্ষম) না থাকে, তাহলে বন্ধ্যত্ব হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন রোগ, যেমন—হরমোনের রোগ, টেসটিস সমস্যা, যৌনরোগ ইত্যাদি কারণে পুরষের বন্ধ্যত্ব হতে পারে। আবার শরীরের কিছু ব্যাধির কারণেও বন্ধ্যত্বের সমস্যা হয়।
আর নারীর ক্ষেত্রে জরায়ু, ডিম্বাশয়ের বিভিন্ন সমস্যার কারণে এই সমস্যা হতে পারে। আবার নারী-পুরুষের কিছু সম্মিলিত ত্রুটির কারণে এ সমস্যা হতে পারে।
তাই বন্ধ্যত্ব হলে কেবল নারীকেই মোটেই দায়ী করা যাবে না উল্লেখ করে অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ—কার মধ্যে ত্রুটি হচ্ছে, সেটি আগে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। একাধারে কেবল নারীকে দোষারোপ করা যাবে না।’
হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সজল আশফাক তাঁর স্বাস্থ্যবিষয়ক বই ‘ভুল সবই ভুলে’ বলেন, ‘সন্তান হওয়া না হওয়ার জন্য স্বামী-স্ত্রী, ক্ষেত্রবিশেষে উভয়ই সমান দায়ী। কারণ, উভয়ের মধ্যেই এমন কিছু ত্রুটি থাকতে পারে, যে জন্য সন্তান হচ্ছে না। সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা যেমন পুরুষের আছে, তেমনি এ বিষয়ে অক্ষমতাও তার থাকতে পারে। একই কথা নারীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। পুরুষ বা নারী—এ দুইয়ের মধ্যে কেউ বন্ধ্যা হতে পারে।’