স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের কারণে সন্তানের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এ  বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৯৯৫তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. সাইফুন নাহার। তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাইকিয়াট্রি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : আপনাদের কাছে যখন এ ধরনের শিশুদের নিয়ে আসা হয় তার সমস্যার কারণ যে মা-বাবার দাম্পত্য সংঘাত সেটি আপনারা কীভাবে বুঝতে পারেন? কীভাবে ব্যবস্থাপনা করেন?

উত্তর : যারা বেশি সচেতন তারা হয়তো বুঝতে পারে, এর একটি প্রভাব তার সন্তানের মধ্যে থেকে যাচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যেটি হয়, তারা কিন্তু বুঝতে পারে না, তার সন্তানের মধ্যে কিছু আচরণগত পরিবর্তন হচ্ছে, কিছু আবেগীয় সমস্যা হচ্ছে। এর মূল কারণ কী? আমরা যেটি করি, আমরা একটি ইতিহাস নেই, শিশুর কাছ থেকে এবং মা-বাবার কাছ থেকেও ইতিহাস নিতে হয়। মা-বাবাকে আলাদা করে নেওয়া হয় এবং শিশুর আলাদা করে ইতিহাস নেওয়া হয়। তখন ইতিহাস নেওয়ার পর দেখা যায় তাদের পরিবারের যে দ্বন্দ্বগুলো রয়েছে, এর কারণে শিশুর বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে।

প্রশ্ন : পরামর্শ আসলে কী থাকে এবং কীভাবে আপনারা এই শিশুটিকে ব্যবস্থাপনা করেন?

উত্তর : কী ধরনের ব্যবস্থাপনা দেব, সেটি নির্ভর করে সে কী ধরনের সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে এসেছে, তার ওপর। এই ধরনের বাচ্চাগুলোর যা হয়, তাদের চিন্তা চেতনার বিকাশ, বুদ্ধির বিকাশ, তাদের আবেগীয় জগতের বিকাশ, সামাজিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাদের পড়শোনা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাদের ঘুমের অসুবিধা হতে পারে, মনোযোগের সমস্যা হতে পারে। তারা এই ধরনের সমস্যাগুলোকে সঠিকভাবে কীভাবে সমাধান করবে সেটি কিন্তু শিখছে না। তাদের যোগাযোগের ক্ষমতার মধ্যে একটি ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে। তার মা-বাবা সেভাবেই দেখছে। তাদের মা-বাবা তাদের জন্য রোল মডেল হিসেবে কাজ করছে। মা-বাবাকে যেভাবে সমস্যার সমাধান করতে দেখছে, সেভাবেই শিখছে। মা-বাবা রেগে গেলে যেভাবে রাগ প্রকাশ করছেন সেভাবেই তারা শিখছে। তারা শিখছে, রেগে গেলে ঝগড়া করতে হয়, গায়ে আঘাত করতে হয়, একে অন্যকে দোষারোপ করতে হয়, এই বিষয়গুলো তারা শিখছে। এতে কিন্তু তারা তাদের বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে এই আচরণ করছে। সবার আগে তারা কিন্তু এই আচরণ করছে তাদের মা-বাবার সঙ্গে। তাদের ভাইবোনের সঙ্গেও একই আচরণ করছে। এটি সবচেয়ে বেশি প্রভাব রাখে তাদের ব্যক্তিগত জীবনে। তারা যখন বিবাহিত জীবনে যাবে তারা তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে একই ব্যবহার করবে।