অস্টিওপোরোসিস কেন হয়?
অস্টিওপরোসিস এক ধরনের নীরব ঘাতক। বিভিন্ন কারণে অস্টিওপরোসিসের সমস্যা হয়। তবে নারীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা একটু বেশি হয়।
অস্টিওপরোসিস কেন হয়, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৮২তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক জোনাইদ শফিক। বর্তমানে তিনি জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে পেইন মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : অস্টিওপোরোসিস হয় কেন? এবং নারীদের বেশি হয় কেন?
উত্তর : নারীদের যখন ঋতু বন্ধ হয়ে যায় তখন ইস্ট্রোজেন হরমোনটা কমে যায়। আমরা সাধারণভাবে বলি হরমোনের কারণে হয়। ছেলেদেরও তাই হয়। তবে ছেলেদের হরমোনটা কমে একটু বেশি বয়সে। পঞ্চাশের বেশি হতে থাকলে তাদের হরমোনটা কমতে থাকে। মেয়েদের কিন্তু তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। চল্লিশ/ পঁয়তাল্লিশে হয়ে যায়। মেনোপজের কারণে হয়।
মূলত, প্রথম কারণ হলো, হরমোন কমে যাওয়া। দুই নম্বর কারণ হলো, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন গ্রহণের পরিমাণ কম হওয়া। তিন নম্বর হলো, ভিটামিন ‘ডি’-এর পরিমাণ কমে যাওয়া। চার নম্বর হলো,অনেক সময় বাত হলে বাতের চিকিৎসার জন্য আমরা স্টেরয়েড দেই। বাতকে একটু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। অনেকের দীর্ঘমেয়াদে খেতে হয়। এগুলো হাড়কে পাতলা করে ফেলে। এ থেকে হতে পারে। পাশাপাশি যদি কিডনির রোগ থাকে, ক্যালসিয়াম শোষণ হবে না। থাইরয়েডের রোগ থাকলেও একই সমস্যা হবে। এগুলো হলো অন্যতম কারণ।
আর জীবন যাপন আরেকটি বড় বিষয়। যারা ধূমপান করে, যারা মদ্যপান করে, এদের খুব বেশি হয়। পশ্চিমা দেশে খুব বেশি হয়। সাদাদের বেশি হয়, আর এশিয়ানদের বেশি হয়। কালোদের কিন্তু কম হয়। সুতরাং এসব বিষয় থেকে সাবধান থাকতে হবে।
আপনি খেয়াল করে দেখবেন, আমাদের দেশে আমরা যেহেতু শাড়ি পরি, সালোয়ার কামিজ পরি, আমাদের কিন্তু সব কিছু ঢাকা থাকে। তাই আমরা কিন্তু ভিটামিন ডি কম পাচ্ছি। বলা হয়, ভিটামিন ‘ডি’-এর মূল উৎস হলো সূর্যের আলো। ১১টা থেকে ১২টার সূর্য। এই সূর্যের আলো যদি আপনি নেন, তাহলে আপনাকে আর কৃত্রিম ভিটামিন নিতে হবে না। না হলে কৃত্রিম ভিটামিন খেতে হবে।
অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করা যায়। অস্টিওপরোসিসে আপনি যখন একবার ফ্র্যাকচার হয়ে বিছানায় পড়ে যাবেন, তখন কিন্তু অন্য রোগগুলো ধরে বসবে। বেড সোর হবে, উচ্চ রক্তচাপ হবে। হাঁটতে পারবেন না। ডায়াবেটিস হয়ে যাবে, এক বছরের মধ্যে কিন্তু আপনি এগুলোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়ে মারা যাবেন। তবে যেকোনো রোগী যদি পঞ্চাশের ওপর আসে, তাদের আমি ভিটামিন ‘ডি’ টা দেই। ত্রিশের নিচে থাকলে আমরা কিন্তু ভিটামিন ডি দেওয়া শুরু করি।