বিশ্ব আরথ্রাইটিস দিবস
আরথ্রাইটিস কী?
আজ বিশ্ব আরথ্রাইটিস দিবস। আরথ্রাইটিসের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৭৪তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. এ কে এম মতিউর রহমান। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : আরথ্রাইটিস বলতে আসলে কী বোঝায়?
উত্তর : আরথ্রাইটিস বলতে আমরা সাধারণত বুঝি জয়েন্টের (গাঁটে) প্রদাহ। জয়েন্টটা ফুলে যাবে এবং জয়েন্টে ব্যথা হবে। বয়স ভেদে এক এক ধরনের আরথ্রাইটিস হয়। বাচ্চাদের এক ধরনের, মধ্য বয়সীদের এক ধরনের, প্রবীণ বয়সীদের এক ধরনের।
অনেকেই মনে করেন বাচ্চাদের শুধু রিউমেটিক ফিবার হয়। তবে সেটি কিন্তু নয়। বরং জুবিনাইল ইডিওপ্যাথিক আরথ্রাইটিস বা বাচ্চাদের একটি বাত রোগ হয়। এতে হাড়, জয়েন্ট বেঁকে যেতে পারে। এটি দীর্ঘস্থায়ী এবং এর চিকিৎসা খুবই জরুরি। সাধারণভাবে রিউমেটিক ফিবারের চিকিৎসা আমরা করি। পেনিসিলিন ইনজেকশন বা ট্যাবলেট দেওয়া লাগে। তবে অন্যান্য আরথ্রাইটিস বাচ্চাদের রয়েছে কি না, সেটিও নির্ণয় করতে হবে।
আমরা এখন বড়দের আরথ্রাইটিসে আসি। দুটো হাড় যেখানে মিলিত হয়, একে জয়েন্ট বা গাঁট বলা হয়। জয়েন্টে ব্যথা ও ফুলে যাওয়ার সমস্যাকে আমরা আরথ্রাইটিস বলি। এটি জয়েন্টের প্রদাহ। ব্যথা ও ফুলে যাওয়া দুটোই থাকবে। এর অনেক ধরনের টাইপ হতে পারে। একটি হতে পারে যে একটি জয়েন্টে কেবল হলো অথবা দুই বা চারটি জয়েন্টে হলো অথবা অনেক জয়েন্টে হলো। মনো আরথ্রাইটিস, ওলিগো আরথ্রাইটিস বা পলি আরথ্রাইটিস। আরেকটি হতে পারে যে অল্প দিন স্থায়ী আরথ্রাইটিস। একে আমরা একিউট আরথ্রাইটিস বলি। আর দীর্ঘদীন স্থায়ী থাকলে, শেষ পর্যন্ত ডিফরমেটি ( বিকলাঙ্গতা) হয়ে যায়। তাকে আমরা ক্রনিক পলি আরথ্রাইটিস বলি।
প্রশ্ন : বয়স ভেদে কি এর কোনো তারতম্য রয়েছে?
উত্তর : প্রবীণদের সাধারণত যেটি হয় একে আমরা অস্টিওআরথ্রাইটিস বলি। আর এটিতে অতো বেশি ডিফরমেটি হয় না। কিন্তু যে রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিস, এনকারেজিং স্পনডিলাইটিস-এগুলোতে সাধারণত ডিফরমেটি হয়ে যায়। মানুষের কর্মক্ষমতা অনেক কমে যায়। আমরা যদি একিউট আরথ্রাইটিস বলি, হঠাৎ করে যেই আরথ্রাইটিস হয়, যেমন চিকুনগুনিয়া হয়েছে কিছুদিন, আরো কিছু ভাইরাল রয়েছে। এগুলো থেকে আরথ্রাইটিস হয়।
তবে ধরনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রথমে প্রচুর শরীর ব্যথা হবে, লাল লাল র্যাশ আসতে পারে। ভাইরাল আরথ্রাইটিস সাধারণত তাড়াতাড়ি চলে যায়। অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যায়। সাধারণত আমাদের দেশে দেখা যাচ্ছে চিকুনগুনিয়ার আরথ্রাইটিস দুই সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত থাকে।
চিকুনগুনিয়াতে যদি ১০ দিন মোটামুটি পার হয়ে যায় তখন আরথ্রাইটিসের চিকিৎসা নিতে হবে। ফিজিওথেরাপি, ব্যথার ওষুধ এবং ব্যায়াম দিতে হবে। আবার চিকুনগুনিয়া সংক্রমণের পরে দেখা যাচ্ছে, ক্রনিক অন্যান্য আরথ্রাইটিস হবে। যদি তিন মাসের বেশি হয়ে থাকে, তখন নির্দিষ্ট চিকিৎসা দীর্ঘস্থায়ীভাবে দিতে হয়।