স্তন ক্যানসার যাদের বেশি হয়
স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি। তাই জানা প্রয়োজন, কারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন এবং কী কী বিষয় পালন করলে স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায়।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৭৩তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন। বর্তমানে তিনি জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটে ক্যানসার ইপিডেমিওলজি বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সচেতনতার জন্য আসলে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখা উচিত?
উত্তর : অনেকে খুব ছোট করে বিষয়টি দেখেন। এই খাবেন, এই খাবেন না। এই করবেন, এই করবেন না। বিষিয়টি সেটি নয়। স্তন ক্যানসারের যে ঝুঁকির কারণ রয়েছে, সেগুলো প্রতিরোধে জীবন যাপন পদ্ধতির কিছু বিষয় যদি আমরা ঠিকঠাক করি, তাহলে কিছুটা হলেও আমরা এটি থেকে দূরে থাকতে পারব। তাহলে আমাদের বলতে হবে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো বর্জন করতে হবে এবং কিছু ভালো অভ্যাস গ্রহণ করতে হবে।
প্রশ্ন : কী কী অভ্যাস থাকে এর মধ্যে?
উত্তর : কিছু অপরিবর্তনযোগ্য বিষয় রয়েছে যেগুলোর ক্ষেত্রে আমরা কিছু করতে পারব না। যেমন, নারী হয়ে জন্ম নেওয়া। অনেক ভালো প্রাপ্তি রয়েছে। আবার কিছু কষ্ট রয়েছে। স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি নারীদের বেশি। পুরুষদেরও স্তন ক্যানসার হয়, তবে নারীর মধ্যে এটি হওয়ার আশঙ্কা ১০০ গুণ বেশি। বয়স যত বাড়বে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়বে। আমাদের দেশে চল্লিশের পরে হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আরেকটি হলো খুব অল্প বয়সে যাদের ঋতুস্রাব হয়ে যায় তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হতে পারে। আবার যাদের একটু দেরিতে ঋতুস্রাব বন্ধ হয় বা মেনোপজ হয় তাদের মধ্যেও এই সমস্যা হতে পারে। এই বিষয়ে আমরা হয়তো কিছু করতে পারছি না।
আরেকটি জিনিস রয়েছে। কিছু পারিবারিক ইতিহাস থাকে, এর জন্য হতে পারে। যেমন মা, খালা, বড় বোন, নানী, নিজের মায়ের দিককার নিকটাত্মীয় তাদের যদি এ রকম পারিবারিক ইতিহাস থাকে তারা ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো যদি কারো মধ্যে জানা থাকে, কারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তাহলে আগে থেকে সচেতন হতে পারবে।
তবে কিছু করারও রয়েছে। কিছু ঝুঁকির বিষয় আমরা ইচ্ছে করলেই পরিবর্তন করতে পারি। যেমন আমরা খাওয়া দাওয়ার অভ্যাসটা পরিবর্তন করতে পারি। যারা অতিরিক্ত লাল মাংস ও চর্বিযুক্ত খাবার খান, তাদের মধ্যে একটু মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। একজন নারী যত স্থূল হবেন তার শরীরে এসট্রোজেন রিসেপটরের পরিমাণ বাড়বে। স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়বে।
আবার যারা কায়িক পরিশ্রম করেননা, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। তাদের জন্য একটু হালকা ব্যায়াম করার অভ্যাস করা, হাঁটাচলা করার অভ্যাস করা দরকার। এগুলো তো আমরা পারি।
আরেকটি হলো বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর অভ্যাস। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অন্যরা বলবে সেটি নয়। সেটি চিকিৎসকদেরই আগে বলতে হবে। এটি বাচ্চার জন্য এবং মায়ের জন্য জরুরি। যিনি বুকের দুধ পান করান না, তার মধ্যে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। যাদের বিয়ে হয়নি বা বাচ্চা হয়নি তাদের মধ্যেও ঝুঁকি বাড়ে।